আমার কথাতে আপনাদের দ্বিমত থাকতে পারে কিন্তু আমি আমার জীবন দিয়েই এটাকে বুঝেছি। আমি যখন ICT CARE শুরু করেছিলাম, তখন সকলেই (বন্ধু-বান্ধব, পরিবার, আত্নীয়-স্বজন) আমার এই সিধান্তের বিরোধিতা করেছিলো।
আমিও বুঝেছিলাম এইটা করার যথেষ্ঠ কারন আছে, কারন যার একটা সুন্দর চাকুরী আছে এবং এই চাকুরীতে সবচেয়ে সহজ যে ব্যাপারটা আছে সেটা হলো “টিউশন” করানো।
যখন আমি টিউশন ছেড়ে দিলাম তখন যশোর শহরে আমি সপ্তাহে তিনদিন পড়াতাম মাসে ৫০০০/- নিতাম, কিন্তু আমার কোন স্লট ফাকা ছিলোনা।
আমি একা যত ছাত্র-ছাত্রী পেয়েছি, আমার সারা কলেজ মিলেও এত ছাত্র-ছাত্রী পেতোনা কোন ব্যাচে। শহরের ১২ টা কলেজের ছাত্র-ছাত্রীর কাছে এই নামটা ছিলো খুব পরিচিত। এমন অবস্থাতেই তাসরীফ হলো, ওকে একটা সময় আমাকে খুব দরকার হবে ভেবে টিউশন ছাড়তে চাওয়া, আসলে আমি স্বাধীনতা চেয়েছি শুরু থেকেই।
যাহোক, অফিস নিয়ে ফাইনালি শুরু করেছি ২০১৫ সালে এই এপ্রিল মাসেই (যদিও কাগজ কলমে সেটা ১ লা মে, ২০১৫ দুই সন্তানের জন্ম একইসাথে)।
প্রথম ৪মাসের পরের যাত্রাটা মোটেও সুখের ছিলোনা। বারবার বিশ্বাস ঘাতকতার স্বীকার হয়েছি। পড়েছি সকলের রোষানলে। তখন যশোর শহরে আইটির প্রতিষ্ঠান হাতে গোনা ২/৩ টি কিন্তু কারো তেমন নামডাক নেই।
আমার প্ল্যান, আমার বানানো সিলেবাস চারিদিকে নিজেদের নামে চালানো শুরু হলো।আবার আমার এমপ্লয়িদেরকে বেশি টাকা অফার করে তথ্য পাচার থেকে শুরু করে সবকিছুই হতে থাকলো, বুঝতেই আমার দুইটা বছর চলে গেলো।
একটা সময়ে নিজের বেতনের আর জমানো টাকা থেকেও বেতন দিয়ে অফিস চালাতে হয়েছে,এই কথা কাউকে বলতেও পারিনি কারন কেউ সাপোর্ট করেনা। ফ্রিল্যান্সিং এর প্রায় ১২ লাখ টাকা একসাথে মার খেয়েছি (এর অনেক বড় হিষ্ট্রি)।
যখন আমি প্রায় গুছিয়ে উঠেছি ঠিক সেই সময়েই, ২০১৭ এর মে মাসের ২৬ তারিখে অফিসে একটা বড় এক্সিডেন্ট ঘটে যায়, একটা ছেলে মারা যায় ইলেকট্রিক শকে, পুলিশ থেকে শুরু করে মিডিয়া সবখানের তদন্ত আর অফিস এক প্রকার তদন্ত চলাকালিন বন্ধ হয়ে গেলো।
এবারের লড়াইটা একান্তই একা একা চালাতে শুরু করলাম, আলহামদুলিলাহ ২০১৮ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছি। অফিস নিয়ে আমার এই অভিজ্ঞতা আমাকে সত্যিই অনেক সাহস আর শক্তি দিয়েছে।আমাকে অনেক মানূষ চিনতে শিখিয়েছে, আবেগের প্রশ্রয় দেয়া বন্ধ করতে শিখিয়েছে।
জীবনটা মাত্রই ৩০ বছরের (অনেকের চেয়েই আমি ছোট এইজন্য বলা) কিন্তু অভিজ্ঞতা আমার বেশ হয়েছে, আমি শিখেছি এবং হাল না ছেড়ে পথ চলতে শিখেছি। আবার বাজি ধরেছি “অর্জন কুরিয়ার সার্ভিস” নিয়ে।এই লড়াইটার শুরুতেই খেয়েছি ধাক্কা। কিন্তু আল্লাহ পাকের রহমতে ঘুরে দাড়িয়েছি, আলহামদুলিলাহ।
এইজন্য ২০১২ থেকে ২০২২ এই সময়েই যাত্রায় ভালো-মন্দ মিলিয়ে যারা ছিলেন আমার সাথে, সকলের নিকটেই আমি কৃতজ্ঞ।
এই গল্পটার খানিক আপনাদের সাথে শেয়ার করার একতাই কারন- আপনারা যেন অনুপ্রেরণা পান।