সারা দিনে আধিরার সাথে আর বসার সুযোগ হলো না ডালিয়ার, কারন আধিরা ব্যাস্ত ঘোরা নিয়ে আর এদিকে ডালিয়া ব্যাস্ত বাড়ির কাজ নিয়ে।
কাজ করছে ঠিক ই কিন্তু ডালিরার মন রয়েছে আধিরা যা বোঝালো তার উপরে।
কেননা ছোট থেকেই খুব বেশি করে নিজের একটা কিছু করার প্রয়াস রয়েছে ডালিয়ার।
কিন্তু ঐ যে কপালে না থাকলে যা হয় আর কি?
এই কপাল নিয়ে জানাতে গেলে সময় পার হয়ে যাবে তাই আপাতত কপাল বাদ দিয়ে ডালিয়া মনযোগী হয়ে উঠেছে কাজ গুছিয়ে আধিরার কাছে বসবে বলে।
দরজায় একটু ঠকঠক করে গলা ঝেড়ে ডালিয়া ডাকলো-
ও সুন্দরী ননদিনী আমি কি তোমার এই ভার্চুয়াল না কি যেন অনলাইন জগতে একটু আসতে পারি?
আধিরা- আরে ভাবী, সারা দিনে তোমার তো পাত্তায় পাওয়া যায় না তোমার আমার আর কি দোষ?
ভাবী- শোনো ভাই বিয়ের পরে মেয়েদের এই হাল হয়, অবশ্য আমার মত মেয়েদের হয়, তোমাদের আবার না ও হতে পারে।
যায় হোক আমায় একটু শিখিয়ে দাও ভাই ঐ কিভাবে আমি যে বিজনেস করবো তাই।
আধিরা- শোনো ভাবি এটা করতে গেলে আগে তোমাকে জানতে হবে অনলাইনে ব্যাবসা কি জিনিস।
ভাবী- আচ্ছা তাহলে আমি কাগজ কলম নিয়ে আসি, আমি সব শুরু থেকেই জানতে চাই।
আধিরা- আচ্ছা, আর আমি তোমাকে কিছু গ্রুপ ও সৌভিক ভাইয়ার ফেসবুক আইডির লিংক ও ওনার ইউটিউব চ্যানেলের লিগক টা দিয়ে দিব আস্তে আস্তে শিখে যাবে ঐখান থেকেও।
কাগজ ও কলম নিয়ে আবার আধিরার কাছে চলে এলো ডালিয়া, একেবারে বাধ্য ছাত্রীর মত বসে পড়লো।
আধিরা শুরু করলো-
বর্তমানে মানুষের চিন্তা ভাবনার সাথে সবকিছু পরিবর্তিত হয়ে গেছে।পন্য বা সেবা কেনা বেচার এমন এক বাণিজ্য ব্যবস্থা চালু হয়েছে যেখানে কয়েন বা কাগজের টাকা দিয়ে কিছু কিনতে হয় না। শুধু আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল নিয়ে বসুন, স্ক্রীনে জিনিষ পছন্দ করুন , কিছু ক্লিক করুন, ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড নাম্বার প্রবেশ করান আর আপনার দরজার সামনে পণ্য আসার অপেক্ষা করুন।
ডালিয়া-কি বলো আধিরা? আমি এমন কিছু বিজ্ঞাপন আমাদের টিভিতে দেখেছি ইন্ডিয়ার, আবার বাংলাদেশে ও এত কিছু হয়ে গেছে?
আধিরা- তাহলে ভাবী আমি তোমায় এখন জানাচ্ছি ই-কমার্স কি?
ইলেক্ট্রনিক নেটওয়ার্ক, বিশেষ করে,ইন্টারেনট ব্যবহার করে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়,অর্থ লেনদেন ও ডাটা আদান-প্রদানই হচ্ছে ই-কমার্স বা ই-বাণিজ্য। ই-মেইল, ফ্যাক্স, অনলাইন ক্যাটালগ, ইলেক্ট্রনিক ডাটা ইন্টারচেঞ্জ,ওয়েব বা অনলাইন সার্ভিসেস ইত্যাদির মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
ভাবী- ছোট করে যদি বলি তাহলে সৌভিক ভাই কি বলেছেন?
আধিরা- এক কথায় প্রায় স্বয়ংক্রিয় আদান-প্রদানের এই বিপণন প্রক্রিয়ার নাম হচ্ছে ই-কমার্স।
ভাবী- ও বাবা আমাদের এই গ্রামে থেকে আমি যদি এখন ই এটা করতে চাই সম্ভব কি সেটা?
আধিরা- হ্যাঁ সম্ভব কিন্তু তুমি শুরুতে আগে একটু এফ-কমার্স সম্পর্কে ও ধারনা নাও তারপরে আরো জেনে জেনে ই-কমার্সে ঢুকবে।
ভাবী- এই এফ-কমার্স টা আবার কি গো?
আধিরা- এফ-কমার্স ও ই-কমার্সের একটি অংশ, মুলত ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যাবসা করা কে এফ-কমার্স বিজনেস বলে।
ভাবী- আরে তুমি আমায় এটা শিখিয়ে দাও ননদিনী।
আধিরা- ভাবী এত কি সহজ নাকি?
ভাবী- আরে আমি আমার রান্না ছবি তুলে দিয়ে দিব ফেসবুকে আর সবাই দেখবে ও কিনে নিতে চাইবে এমন ই না?
আধিরা- কে বলেছে তোমাকে?
ভাবী- আরে তোমার ভাই কে বলেছিলাম, সে আমায় বললো এসবের কোন দরকার নেই।
সবাই নাকি এসবে বিশ্বাস করলেই ঠকে।
আধিরা- আরে ভাবী দুনিয়া কত এগিয়েছে সেই খোজ রাখো?
বর্তমানে পৃথিবীর শীর্ষ ধনী ব্যাক্তি ও এই ই-কমার্স বিজনেস দিয়েই এই জায়গায় এসেছেন তাহলে আমাদের জ্ঞান কম বলেই আমরা এটাকে এমন ভাবছি।
ভাবী- বলো কি? হায় রব্বা বলেই মুখ হা করে তাকিয়ে রইলো।
আধিরা- ভাবী তোমায় আগে আরো জানতে হবে তুমি উদ্যোক্তা হবে নাকি ব্যাবসা করবে?
ভাবী- আরে এটার আবার কি পার্থক্য আছে গো?
আধিরা-
উদ্যোক্তা শব্দটা যদিও আমাদের সবার পরিচিত কিন্তু আমরা অনেকেই এই শব্দের অর্থ ও গুরুত্ব বুঝি না।
অনেকেই মনে করেন ব্যবসায়ী বলতেই উদ্যোক্তা, এটা সম্পুর্ণ ভুল ধারণা।মনে রাখবেন “সকল উদ্যোক্তাই ব্যবসায়ী কিন্তু সকল ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা নয়।”
চলবে …..