পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত যত সত্যি কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম একটি সত্যি কথা হল “অহঙ্কার পতনের মূল”।
আত্মবিশ্বাসের অভাব যেমন মানুষকে চেষ্টা করা থেকে বিরত রাখে, তেমনি অতি আত্মবিশ্বাস বা অহঙ্কারও মানুষকে চেষ্টা ও শেখা থেকে বিরত রাখে।
হয়তো একজনের অংকে দারুন ভালো মাথা। খুব সহজেই সে অংক বুঝতে পারে। কিন্তু এটা যদি তার মাথায় বসে যায় যে, তার অনুশীলনের দরকার নেই – সে এমনিতেই পারবে। তাহলে ধীরে ধীরে সে এই গুণ হারিয়ে ফেলবে। কারণ, আপনি যতই প্রতিভাবান হোন না কেন – নিয়মিত চর্চা না করলে সেই প্রতিভা মরে যাবে।
এছাড়া, অহঙ্কারী মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। তাদের সাথে কেউ কাজ করতে চায় না, এবং তাদের কেউ সুযোগ দিতে চায় না। এমন অনেক মানুষই আছেন যাঁরা প্রতিভার কারণে প্রাথমিক ভাবে সফল হয়েছেন, কিন্তু অহঙ্কারের কারণে তাঁরা সেই সাফল্য ধরে রাখতে পারেননি।
অহঙ্কার মানুষকে তার নিজের ভুল ত্রুটি দেখতে দেয় না। ইগো তাকে অন্ধ করে দেয়, সে যতটা বড়, নিজেকে তারচেয়েও বেশি বড় করে দেখতে শুরু করে। কারও পরামর্শ এরা নেয় না। মনে করে নিজেই সবচেয়ে ভালো বোঝে। আজ পর্যন্ত যত ক্ষমতাবানের পতন হয়েছে, তারা আসলে ক্ষমতায় থাকতে থাকতে এতটাই অহঙ্কারী হয়ে গিয়েছিল যে, তারা মনে করত তারা কোনও ভুল করতে পারে না। এটাই তাদের পতন ডেকে এনেছে। আবার অনেক সাধাণ মানুষের মাঝেও এই দোষ আছে। যে নিজের ভুল স্বীকার করেনা, নিজের কমতি বোঝে না – তার পক্ষে উন্নতি করা অসম্ভব। এই ধরনের মানুষ দিন শেষে ব্যর্থ হবেই।
অতীতের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা না নেয়াও অহঙ্কারের একটি প্রকাশ। তারা ভাবে, তারা যা করেছে ঠিকই করেছে। অন্য মানুষের ভুলের কারণে তারা ব্যর্থ হয়েছে। এটা ভেবে নিয়ে তারা একই ভুল আবারও করে। প্রতিটি ব্যর্থতা আর ভুলের জন্য বিভিন্ন অজুহাত দাঁড় করায় – কিন্তু নিজের কোনও ভুল স্বীকার করে না। এবং ব্যর্থতার চক্র থেকে কখনওই বের হতে পারে না।