আপনাকে ডিপ্রেশন থেকে দূরে রাখবে যে কাজ গুলি-শেষ পর্ব

সবসময় হাসিখুশি ও উৎফুল্ল থাকার চেস্টা করুনঃ
অল্প কিছুতেই কারো প্রতি মন খারাপ করে থাকা বর্তমানে আমাদের একটি ফ্যাশনে পরিনত হয়ে গেছে।
মূলত ‘ইগোর’ কারণেই এমনটা হয়ে থাকে।
এছাড়াও হতাশা, ব্যর্থতা ও মনোমালিন্য অথবা অন্য কোনো কারণেও অনেকেই নিজেকে গুটিয়ে রাখে।
হাসতে ভুলে যায়, মনের উৎফুল্লতা হারিয়ে যায় অজানায়।
এভাবে ধীরে ধীরে একজন ব্যক্তি বিষণ্ণতায় নিমজ্জিত হতে থাকে। মন হচ্ছে মানুষের প্রধান চালিকা শক্তি।
তাই মনকে সবসময় উৎফুল্লা রাখবেন।
কেননা মনের উৎফুল্লতা আপনাকে সবসময় চাঙ্গা রাখবে। হাসি-খুশি ও উৎফুল্লতা ধীরে ধীরে আপনার জীবন
হতে হতাশা ও একঘেয়ামী হতে মুক্ত দিবে।
আর হ্যাঁ, শুধুই মুচকি হাসি নয়! অনুকূল অথবা প্রতিকূল, প্রতিনিয়ত প্রাণ ভরে হাসার চেষ্টা করবেন যদিও তা
সব মানুষের পক্ষে সম্ভব হয় না। তারপরও বিষণ্নতাকে দূরে সরাতে প্রাণ ভরে হাসবেন, যা আপনার স্ট্রেস
হরমোনের রিলিজ কমে গিয়ে এন্ড্রোফিন রিলিজ বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
 ব্যর্থতা ও সফলতা সমূহ নোট করতে শিখুন:
জীবন যুদ্ধের পথচলায় ‘ব্যর্থতা-সফলতা’ একটি চক্রাকার বৃত্ত যা বারবার প্রতিটি মানুষের কাছে ফিরে আসে।
তাই কোনো কাজে ব্যর্থ হলে হতাশ হওয়া যাবে না। ব্যর্থতার পর সফলতা আসবেই।
ব্যর্থতাগুলো সমাধান না করে সেগুলো নিয়ে যতো ভাববেন আপনি সফলতা হতে ততই পিছিয়ে পরবেন।
একটা সময় পিঠ দেওয়ালে গিয়ে ঠেকবে। আর তখনই বিষণ্ণতা ঘিরে ধরবে চারপাশ হতে।
ব্যর্থতা অথবা সফলতা, মনের কথাগুলো প্রতিদিন লেখার অভ্যাস করুন। প্রতিদিনের ব্যর্থতাসমূহের লিস্ট করুন,
ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠা বা কীভাবে মোকাবেলা করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে সেটাও লিখে রাখুন। এতে করে তাৎক্ষনিক
সমাধান পেয়ে যাবেন এবং পরবর্তীতে একই সমস্যার সম্মুখীন হলে সেই সমস্যার সমাধানও করতে পারবেন খুব সহজে।
এবং প্রতিদিনের সফলতাগুলোও আপনার মনে প্রশান্তি
জোগাবে আর আত্মবিশ্বাস বাড়বে। ব্যর্থতাসমূহের দ্রুত ও সঠিক সমাধান এবং সফলতার অনন্য
মিশেলে বিষণ্ণতা রইবে ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে।
 সব সময় ডাক্তারের পরামর্শ নিন:
আমরা সাধারণত আমাদের অঙ্গীয় সমস্যাবলী সম্পর্কে যতটা সচেতন ঠিক ততটাই অসচেতন
আমাদের মানসিক সমস্যাসমূহের প্রতি।
মানসিক সমস্যা সমাধানে আমরা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার নূন্যতম গুরুত্বটুকুও দেই না।
এমনকি আমরা আমাদের মানসিক সমস্যাসমূহ কারোও কাছে প্রকাশ করার ইচ্ছা পোষণ করি না।
কারণ আমাদের সমাজে মানসিক রোগী বলতে আমরা শুধু ‘পাগল’ই বুঝে থাকি।
অথচ
বর্তমান সময়ে আত্মহননের প্রধান কারণই এই ‘মানসিক ব্যাধি’, বিশেষত ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা।
‘ডিপ্রেশন’ বা ‘বিষণ্নতা’ মানসিক ব্যাধিসমূহের মধ্যে অন্যতম একটি। জীবনে চলার পথে বিভিন্ন
সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আমরা বিষণ্ণতায় ভুগে থাকি। সমস্যার সমাধানের চেষ্টা না করে আরো হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি।
ধীরে ধীরে ‘বিষণ্ণতা’ আমাদের ভেতর মারাত্মক ব্যাধী হিসেবে ধারণ করে যা ব্যক্তিকে একটা
সময় আত্মহনের দিকে ধাবিত করে। সম্প্রতি ‘বিষণ্ণতা’ ব্যাধিটি এদেশের তরুন-তরুনীদের
মাঝে অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, বাড়ছে আত্মহননের সংখ্যাও। তাই বিষণ্নতায় ভুগলে এটাকে
অবহেলা না করে একজন সাইক্রাটিস্টের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত।
একজন সাইক্রাটিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করলে সহজেই এই মারাত্মক ব্যাধী
হতে রক্ষা পাওয়া যায়। এবং নিজেদের মাঝেও সচেতনতা বাড়াতে হবে।
 প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন:
বর্তমানে সময়ের এই যান্ত্রিক জীবন পরিচালানায় আমরা নিজেরাও যেন একটি যন্ত্রে পরিণত হতে চলছি।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় হাতের কাছেই পেয়ে যাচ্ছি সব, অলসতা আকঁড়ে ধরে বসেছে আমাদের।
শুধু তাই নয়, অলসভাবে কাটানো সময়টুকুও যেন আমরা বিভিন্ন অহেতুক কাজে নিজেদের ব্যস্ত রাখছি।
যা আমাদের সামান্য ব্যর্থতাতেই প্রচন্ডরকমভাবে বিষণ্ণতায় ভুগিয়ে থাকে। তখন জীবনটা আমাদের কাছে
য়ে পড়ে দুর্বিষহ সাথে একঘেয়ামিতা আকঁড়ে ধরে ভীষণভাবে।
ব্যস্ততম শহরের জীবনযাত্রায় হতাশা, অলসতা ও ব্যর্থতার আদলে আকঁড়ে ধরা বিষণ্ণতা হতে দূরে থাকতে
কিছু সময়ের জন্য ইট-পাথরের এই যান্ত্রিক শহর হতে কিছুটা দূরে কোথাও প্রাকৃতির সান্নিধ্যে চলে যান।
প্রকৃতিকে ভালোবাসুন, প্রকৃতিও আপনাকে ভালোবেসে তার অপরূপ মহিমায় সাজিয়ে তুলবে আপনাকে।
 নিয়মিত প্রার্থনা করুন:
‘ধর্ম’ আমাদের জীবনে সর্বোৎকৃষ্ট একটি জিনিস। প্রায় প্রত্যেকটি মানুষই তার নিজ নিজ ধর্মীয় মূল্যবোধের
সহিত জীবন পরিচালনা করার চেষ্টা করে থাকে। প্রত্যেকটি মানুষই তার ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দৃঢ় বিশ্বাস
করে থাকে যে, সকল বিপদ-আপদ হতে রক্ষা করার মালিক একমাত্র আমাদের সৃষ্টিকর্তা এবং এই বিশ্বাসটুকু
প্রতিটি মানুষের মাঝে থাকা উচিত, যা হতাশাগ্রস্ত একজন মানুষকে হতাশামুক্ত হতে সাহায্য করে।
যেহেতু আমরা এটাও বিশ্বাস করে থাকি যে, ‘সৃষ্টি যা করেন তা আমাদের ভালোর জন্যই করেন’।
মূলত প্রার্থনা হলো সৃষ্টিকর্তার সাথে যোগাযোগ করার অন্যতম মাধ্যম। শত প্রতিকূল পরিবেশেও
সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করলে হতাশা হতে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
University of Mannmeim এর জার্মান মনোবিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বের করেছেন যে, ‘প্রার্থনা মানুষকে
আত্মনিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে’।
এমনি প্রার্থনা আপনার মনের স্থিরতা, মানব মনের সতেজতা ও শক্তি বহাল রাখে। তাই, আপনি যে
ধর্মালম্বীর অনুসারীই হোন না কেন; নিয়মিত প্রার্থনা আপনাকে বিষণ্ণতা হতে দূরে রাখবে।
মোটকথা, বিষণ্নতাকে দূরে সরিয়ে জীবনকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে হলে আপনাকে
প্রতিনিয়ত নিজের কাজগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। তবেই আপনি
সব বাঁধা-বিপত্তিসমূহকে দূরে সরিয়ে একজন সুখী মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে পারবেন জীবনাবসান অবধি।
আর্টিকেল টি লিখতে পড়তে ও জানতে হয়েছে অনেক তাই ওই লেখা আপনাদের সামান্যতম উপকারে এলেই আমার চেষ্টার স্বার্থকতা।

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *