আপনার ব্যাবসায়ীক ব্যার্থতা কাটিয়ে উঠতে যে কাজগুলি সাহায্য করবে 

উদ্যোক্তা হয়েছেন, কিন্তু ব্যর্থতার স্বাদ পাননি – এমন মানুষ মনেহয় একজনও খুঁজে পাওয়া যাবে না। সফল উদ্যোক্তা হওয়ার একটি প্রধান শর্তই হল, আপনাকে বেশ কয়েকবার ব্যর্থ হয়ে আবার উঠে দাঁড়াতে হবে। হয়তো সব হারিয়ে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। ব্যর্থ হওয়ার পরও যারা হাল না ছেড়ে কাজ করতে থাকেন, এবং দ্রুত ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন – তাঁরাই আসলে শেষ পর্যন্ত সফল উদ্যোক্তা হতে পারেন।
আজ আমরা এমন কিছু কথা আলোচনা করবো যা মুলত এই ঘুরে দাঁড়াতে চাওয়া মানুষ গুলির জন্য খুব কাজের হবে। এগুলি মুলত আলোচিত বিজনেস বুক “ফুয়েলড্ বাই ফেইলর” (Fueled by Failure) থেকে নেয়া।
✔️ বিজনেস মেডিটেশন
“মনকে নদীর মত করার অভ্যাস তৈরি করতে হবে।আমরা অনেকেই নিজের ব্যাপারে নিচু ধারণাগুলো কোনওভাবেই দূর করতে পারি না, এবং সে কারণে আমরা বার বার ব্যর্থ হই।
আমরা সর্বদা প্রতিযোগীদের সাথে আমাদের তুলনা নিয়ে ব্যাস্ত। আমরা নিজে জেতার চেয়ে বেশি প্রতিযোগিকে হারাতে চাই। অন্য কোনও দিকে মনোযোগ না দিয়ে শুধু তাদের দিকে মনোযোগ দিয়েই আগাতে থাকি,এবং সেই কারণে আমরা প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে পড়ি। এক সময় আমাদের অবস্থা এমন হয়, যে কোনও কিছুতেই আমাদের শুধু মনে হয়, ’আমি পারবো না’, ‘আমি প্রস্তুত না’, ‘আমার বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে’, ‘আমি অনেক বেশি পিছিয়ে পড়েছি – এখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব না’ – ইত্যাদি নেতিবাচক চিন্তা।”
এগুলো আসলে আত্মঘাতী বা “Self-Defeating thoughts” – এই ধরনের চিন্তা মানুষকে তার নিজের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহার করতে দেয় না। কারণ, এইসব চিন্তার কারণে আমরা হারার আগেই হেরে বসে থাকি।
এই ধরনের চিন্তা আসাটা আসলে স্বাভাবিক। আমাদের শুধু এগুলোর সাথে লড়াই করার প্রস্তুতি থাকতে হবে।
’মনকে নদীর মত’ করে ফেলাটা আসলে সেই লড়াই করার প্রস্তুতি
❌ অতীত ব্যার্থতা
এইসব চিন্তা মাথায় আসার অন্যতম একটি কারণ – বিজনেস প্রেজেন্টেশন, ইন্টারভিউ – বা এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমাদের পিছিয়ে পড়া আর এই চিন্তাগুলো বেশি মাথায় আসে আমাদের।
এই ধরনের চিন্তা আসাটা আসলে স্বাভাবিক। আমাদের শুধু এগুলোর সাথে লড়াই করার প্রস্তুতি থাকতে হবে।
’অতীত ব্যার্থতা’ নামক ব্যাপারটা আমাদের মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলাটা আসলে সেই লড়াই করার প্রস্তুতি।
🤔 কিভাবে অর্জিত হবে এই প্রস্তুতি❓
“এটি খুব সাধারণ,কিন্তু খুবই শক্তিশালী একটি কৌশল”।
এটি আসলে একটি মেডিটেশন। মস্তিষ্ককে শান্ত করার জন্য, এবং কোনওকিছু বিশ্বাস করানোর জন্য মেডিটেশন একটি দারুন পদ্ধতি।
এই পদ্ধতিতে মেডিটেশন করার জন্য আপনাকে নিরিবিলি নির্জন কোনও জায়গায় চোখ বন্ধ করে বসতে হবে। তারপর কল্পনা করতে হবে একটি স্রোতবহুল নদী, আর নদীর মাঝে একটি পাথর যেটা আসলে আপনার মন। নদীর স্রোত এমন যে, সেই পাথরের ওপর কোনও আবর্জনা থাকতে পারে না।
আপনার আত্মঘাতী চিন্তাগুলোকে পাথরের ওপর জমে থাকা শ্যাওলা বা আবর্জনা হিসেবে চিন্তা করুন। এক একটি চিন্তাকে এক একটি রঙ অথবা আকার দিতে পারেন। তারপর চিন্তা করুন নদীর দ্রুত বহমান স্রোত সশব্দে এই আবর্জনা/শ্যাওলারূপী চিন্তাগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
মাথায় রাখুন- প্রথমে এটি কোনও ফল নাও দিতে পারে। কিন্তু প্রাকটিস বন্ধ করা যাবে না। এভাবে মেডিটেশন করার পাশাপাশি, নিজেকে নিয়ে কোনও ধরনের আত্মবিশ্বাস নষ্টকারী চিন্তা মাথায় আসলেই নদীর দৃশ্য ও শব্দ কল্পনা করতে হবে। এটা টানা কিছুদিন করতে পারলে, মস্তিষ্ক বিশ্বাস করতে শুরু করবে যে, নদীর স্রোত আসলেই নেতিবাচক চিন্তাগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ভাবছেন সৌভিক ভাই কি পাগল হয়েগেলো❓
আসলে তা নয়, মস্তিষ্কের একটি মজার দিক হল, সে কল্পনা ও বাস্তবে একই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায়। কোনও সুন্দর দৃশ্য চোখের সামনে দেখলে সে যেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে, কল্পনা করলেও আপনার প্রায় একই ধরনের অনুভূতি হবে। মন থেকে নেগেটিভ অনুভূতি দূর করে সেখানে ইতিবাচক অনুভূতি বসাতে পারলে আপনি আবার নিজের কাজ শুরু করতে পারবেন। অতীত ব্যর্থতা আপনাকে আর পেছনে টেনে রাখতে পারবে না।
এই পর্বে এইটুকুই,আগামী পর্বে আবার লিখবো আরো একটি পদ্ধতি নিয়ে,কমেন্টে জানাবেন কেমন লাগছে লেখা।

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *