আমরা আমাদের দিনের বেশিরভাগ সময় ফেসবুকে কাটায়

আমরা আমাদের দিনের বেশিরভাগ সময় ফেসবুকে কাটায়।কেউ ফেসবুক স্ক্রল করে, কেউ স্টাডি করে, আবার কেউ ফেসবুকের মাধ্যমে বিজনেসও করে থাকে। ফেসবুক আমাদের মূল সিম্পল অথচ আমরা অনেকেই জানি না কিভাবে শক্তিশালী ও নিরাপদ করতে হয়। আসুন আজ আমরা এই সম্পর্কে একটু জেনে নেই।
‼️ফেসবুক আইডির নাম- আপনার ফেসবুক আইডির নিরাপত্তা দেবার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম ধাপ হল আইডির নাম। ফেসবুক আইডিতে ব্যবহার করা নাম যদি আপনার পাসপোর্ট / জাতীয় পরিচয়পত্র / ড্রাইভিং লাইসেন্সে ব্যবহার করা নামের সাথে মিল না থাকে তাহলে আইডিটি নিরাপদ নয়। (এটা আমি ২০২০ থেকেই বলে আসছি)
কখনোই “এঞ্জেল ফারজানা”, ” আমি শুধুই তোমার”, “রাতের চাঁদ”, “Rock star Limon” এ ধরনের নাম ব্যবহার করবেন না।
নামে স্পেশাল ফন্ট বা স্পেশাল ক্যারেক্টার ব্যারহার করা থেকে বিরত থাকুন।চেষ্টা করুন ন্যাশনাল আইডি কার্ডে ব্যবহার করা নামটিই হুবহু ফেসবুক আইডির নাম হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।
‼️ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড- আইডির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কখনোই নিজের নাম, জন্মতারিখ, ফোন নম্বর হুবহু পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করবেন না।
এইসকল পাসওয়ার্ড মুলত সবচেয়ে উইক পাসওয়ার্ড।এগুলি আরেকজন খুব সহজেই অনুমান করে বের করতে পারে।
ক্যাপিটাল লেটার, স্মল লেটার, নাম্বার এবং সিম্বল বা চিহ্ন সবগুলোর সংমিশ্রণের মাধ্যমে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করুন। যেমনঃ $@kM87%# (এটি একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড।
‼️ফেসবুক আইডিতে দেয়া মোবাইল নম্বর- অন্যের ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট দ্বারা রেজিস্ট্রেশন করা সিম এর নম্বার ফেসবুকে ব্যবহার করবেন না। কেবলমাত্র আপনার নিজের বা খুবই নিকটাত্মীয়ের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিমের নম্বর ফেসবুকে ব্যবহার করুন। পাশাপাশি অহেতুক ঝামেলা এড়াতে ফোন নম্বরের প্রাইভেসি “অনলি মি” করে রাখুন।
আমার সাজেশন হল- এই কাজের জন্য পাবলিক নাম্বার ব্যবহার না করাটাই ভালো, এবং নিজের নামে কেনা সিম কার্ড ব্যাবহার করুন।
‼️ফেসবুক আইডিতে দেওয়া ইমেইল- শুধুমাত্র মোবাইল নম্বর দিয়ে ফেসবুক একাউন্ট চালানো গেলেও আইডির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ইমেইল এড্রেস অ্যাড করা অপরিহার্য।
কোনো কারনে আইডি হ্যাকড বা ডিজেবল হলে; ইমেইল অ্যাড্রেস যদি এড করা না থাকে তাহলে পরবর্তীতে আইডি রিকভার করার সম্ভাবনা খুবই কম।
ফেসবুক আইডিতে কখনোই অন্যের ইমেইল অ্যাড করবেন না, কেবলমাত্র আপনার নিজের সচল ইমেইল একাউন্ট অ্যাড করুন।
আমার সাজেশন হলো- ফেসবুক আইডির জন্য একটা হিডেন ইমেল তৈরি করে সেটা এড করা ভালো, এতে কেউ অনুমান ও করতে পারবেনা।
‼️ফেসবুক আইডিতে দেওয়া জন্ম তারিখ- আসল বয়স না বোঝাতে কিংবা বয়স গোপন করাতে আমাদের জুড়ি মেলা ভার। ফেসবুক আইডির সুরক্ষার জন্য জন্ম তারিখ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়।
আইডি সুরক্ষিত রাখতে চাইলে আপনার ন্যাশনাল আইডি বা পাসপোর্টে প্রদত্ত জন্মদিন ও জন্মসাল এবং ফেসবুকে প্রদত্ত জন্মদিন ও জন্মসাল হুবহু একই হতে হবে।
কোনো কারনে আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাকড বা ডিজেবল হলে; রিকভার করার জন্য আইডি কার্ড সাবমিট করতে হয়। তখন আইডি কার্ডে দেওয়া জন্মদিন ও জন্মসাল যদি ফেসবুকে প্রদত্ত জন্মদিন এবং জন্মসাল থেকে ভিন্ন হয়, আপনি কখনোই আইডিটি রিকভার করতে পারবেন না।
‼️জন্ম তারিখ প্রাইভেট রাখুন- যদি সম্ভব হয় ফেসবুকে আপনার জন্ম তারিখ প্রাইভেট বা “অনলি মি” রাখুন। দেশে অনেক পেশাগত হ্যাকার রয়েছে যারা কোন ফেসবুক আইডির নাম এবং জন্মতারিখ ব্যাবহার করে ফটো এডিটিং এর মাধ্যমে ভুয়া আইডি কার্ড বানিয়ে তা ফেসবুকে সাবমিট করে আইডি হ্যাক করার চেষ্টা করে।
আপনার জন্ম তারিখ যদি হাইড করা থাকে তাহলে ওইসব হ্যাকাররা এই পদ্ধতি ব্যবহার করতেই পারবে না, নিরাপদ থাকবে আপনার শখের ফেসবুক আইডিটি। তাই জন্ম তারিখ হাইড রাখুন, যদি জন্মদিন হাইড রাখতে আপত্তি থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই জন্মসাল হাইড রাখুন।অন্তত একটা অংশ হাইড করে রাখুন।
‼️টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন- ফেসবুক একাউন্ট নিরাপদ রাখার একটি অত্যন্ত কার্যকরী পদ্ধতি হল টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সিস্টেম। টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন হল দুই স্তরের নিরাপত্তাব্যাবস্থা যেখানে সঠিক মেইল/মোবাইল নম্বর এবং পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরের ধাপে ব্যাবহারকারীকে পুনরায় ভেরিফাই করা হয়।
ফেসবুকে কয়েক ধরনের টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সিস্টেম রয়েছে। আপনি যদি টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখেন সেক্ষেত্রে আইডিতে লগইন করার সময় ফেসবুক থেকে আপনার মোবাইল নম্বরে একটি কোড পাঠানো হবে।
এই কোড সাবমিট করা ছাড়া আপনি ফেসবুকে লগইন করতে পারবেন না। অর্থাৎ কেউ যদি কোনোভাবে আপনার ফেসবুক একাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনেও যায়, এরপরেও সে লগইন করতে পারবে না আপনার মোবাইল নম্বরে পাঠানো কোডটি সাবমিট করা ছাড়া। ফলে আপনার আইডি নিরাপদ থাকবে।
যেভাবে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করবেন-
Facebook Settings → Security → Security and login → Two-Factor Authentication → Use Two-Factor Authentication → Text Message
নিজে না পারলে চেষ্টা করার দরকার নাই, এক্সপার্টের কাছ থেকে করে নিবেন।
‼️সিলেক্ট করুন ট্রাস্টেড কন্টাক্ট- ফেসবুক একাউন্টের নিরাপত্তার জন্য আপনার বিশ্বস্ত কয়েকটি আইডিকে ট্রাস্টেড কন্টাক্ট হিসেবে অ্যাড করে রাখতে পারেন। আপনার একাউন্ট হ্যাক হলে বা কোনো কারনে লগইন করতে সমস্যায় পড়লে ট্রাস্টেড কন্টাক্ট ব্যবহার করে একাউন্টটি রিকভার করতে পারবেন।
‼️থার্ড পার্টি অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট ব্যাবহারে সতর্কতা- ফেসবুকে অনিরাপদ থার্ড পার্টি অ্যাপ এবং গেম ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকুন। ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে থার্ড পার্টি অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে লগইন করার সময় সতর্ক থাকুন।
যেমন- দেখুন আপনার চেহারা কার মত, আপনি কতটুকু রাগী, কতজন আপনাকে ভালোবাসে, আপনার ভবিষ্যত কেমন হবে এসব খেলা থেকে বিরত থাকুন।

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *