“আমার চার জন স্ত্রী ও আমি” সেটাও আবার নীতিবাক্য

এক লোকের চারজন স্ত্রী ছিল। লোকটা তার ৪র্থ স্ত্রীকেই বেশী ভালোবাসতো এবং যত্ন করতো।
সে তার ৩য় স্ত্রীকেও অনেক ভালোবাসতো এবং বন্ধু বান্ধবদের সামনে স্ত্রীর প্রশংসা করতো। তার ভয় ছিলো যে এই স্ত্রী হয়তো কোনদিন অন্য কারো সাথে পালিয়ে যেতে পারে!
সে তার ২য় স্ত্রীকেও ভালোবাসতো। লোকটা যখনি কোন বিপদে পড়তো, তখনি সে তার এই স্ত্রীর কাছে সমাধান চাইতো এবং তার স্ত্রী তাকে সমাধান দিয়ে সাহায্য করতো।
কিন্তু, লোকটা তার ১ম স্ত্রীকে একদম ভালোবাসতো না এবং যত্নও করতোনা। এই স্ত্রী লোকটাকে অত্যন্ত ভালোবাসতো, তার অনুগত থাকতো এবং তার যত্ন নিতে চাইতো। লোকটা তা পছন্দ করতোনা।
একদিন লোকটা অসুস্থ হয়ে পড়লো এবং জানতে পারলো যে সে আর বেশী দিন বাঁচবেনা। লোকটা ইচ্ছা করলো যে সে যখন মারা যাবে, তার কোন একটা স্ত্রীকেও নিয়ে যাবে তার সাথে করে, যাতে করে সে পেতে পারে এই ভেবে যে মৃত্যুর পর সে একা নয়, তার একজন সঙ্গীও সাথে আছে।
লোকটা তিনজন স্ত্রীকে ডেকে এনে তার সাথে মৃত্যুবরণ করার ইচ্ছাটা বললো এবং কে যেতে চায় তা জিজ্ঞেস করলো। “এটা হতেই পারেনা”, বলেই তার ৪র্থ স্ত্রী সাথে সাথে ঐ জায়গা থেকে চলে গেলো লোকটার ইচ্ছাকে প্রত্যাখ্যান করে।
৩য় স্ত্রী বললো, “জীবন এখানে খুবই সুন্দর। তোমার মৃত্যুর পর আমি অন্য কাউকে বিয়ে করে নেবো!” বলে সেও চলে গেল।
২য় স্ত্রী বললো, “তুমি আমার কাছে সমাধান চাইতে। কিন্তু এই ব্যাপারে আমার কোন সমাধান নেই। দুঃখিত তোমাকে সাহায্য করতে না পেরে। তবে তোমার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আমি তোমার পাশে সর্বদা আছি! স্ত্রদের কথা শুনে লোকটা অত্যন্ত কষ্ট পেলো এবং বিমর্ষ হয়ে পড়লো:
“আমি তোমার সাথে যাব, তুমি যেখানেই যাওনা কেন, আমি তোমাকে অনুসরণ করবো!” হঠাৎ একটা কন্ঠ বলে উঠলো! লোকটা তাকিয়ে দেখলো যে কন্ঠটা তার ১ম স্ত্রীর।
ভালোবাসা এবং যত্নের অভাবে তার এই স্ত্রীর চেহারা মলিন, দেহ কঙ্কালসার, অপুষ্টির চিহ্ন সারা শরীরে। লোকটা অশ্রুসিক্ত নয়নে বললো, “হায় কি আফসোস! তোমাকে কখনো ভালোবাসিনি, যত্ন করিনি। আজ তুমি আমার সাথে যেতে চাইছে। এতদিন কি ভুলটাই না করেছি তোমার কথা না ভেবে! আজ শেষ সময়ে ভুলটা বুঝতে পারলাম!”
আসলে, আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এই চারজন স্ত্রীর মত ব্যাপারটি আছে।
১) ৪র্থ স্ত্রী হচ্ছে আমাদের শরীর। জীবনের বেশীর ভাগ সময় এবং অর্থ আমরা এটির পিছনে ব্যয় করি। কিন্তু মৃত্যু এলেই এটি আমাদেরকে ফেলে চলে যায়।
২) ৩য় স্ত্রী হচ্ছে আমাদের ধন সম্পত্তি। টাকা পয়সা, সুনাম এবং মালিকানা, যা আমরা অন্যদের দেখিয়ে বেড়াই। মৃত্যুর পর এগুলো অন্যদের কাছে চলে যায়।
৩) ২য় স্ত্রী হচ্ছে আমাদের পরিবার এবং বন্ধুবান্ধব। এরা আমাদেরকে নানা বিপদে আপদে সাহায্য করে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের পাশে থাকে।
৪) আর ১ম স্ত্রী হচ্ছে আমাদের আত্না। পার্থিব সুখ শান্তি আনন্দ এবং সম্পদের পিছে ছুটতে ছুটতে আমরা আত্নার কথা ভুলে যাই। আত্নার খোরাক মেটাতে পারিনা। যত্ন নিতে পারিনা, ভালোবাসিনা। কিন্তু এটিই একমাত্র জিনিস যা আমাদের প্রত্যেকটা কাজে আমাদের অনুসরণ করে। যেখানেই যাই আমাদের পাশে থাকে এবং মৃত্যুর পরেও পারলৌকিক জীবনে আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখে!
নিজেকে ভালোবাসুন,নিজের আত্নার কথা শুনুন,তার ইচ্ছামত কাজ করুন।
মোঃ সৌভিকুর রহমান
শিক্ষক (কম্পিউটার বিভাগ)
যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
আমার কাজ- লোগো ডিজাইন,ব্যানার ডিজাইন,বিজনেস কার্ড ডিজাইন,ফেসবুক পেজ ডেকোরেশন,ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন,পেজ প্রমোট ও বুষ্টিং,কন্টেন্ট রাইটিং,ভিডিও এডিটিং ও সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট নিয়ে।
আমার পেজ- ICT CARE

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *