আমি আসলে কী চাই? (বিস্তারিত) পর্ব-০২

১. আপনি আসলে কী চান?

প্রথমেই নিজের লক্ষ্যের পথে একটি স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হবে। কেননা, আপনি আসলে কী চাচ্ছেন, সেই ব্যাপারে যদি আপনি শুরু করে অবগত না হন, তাহলে সেগুলো আপনি পাওয়ার জন্য পরবর্তী কী পন্থা অবলম্বন করবেন তা খুঁজে পাবেন না। আর তাই জানতে হবে আপনার আসলে কী চান বা কী করতে চাচ্ছেন। প্রশ্নটির উত্তর মোটেও সহজ নয়। কেননা আমরা আসলে জীবনে কী করতে চাই, এই উত্তরটি দিতে গেলে আমাদের মাঝে অনেকেই হিমশিম খেয়ে যাবে। আমাদের আসলে চাহিদার কোন শেষ নেই। আরো বেশি ভয়ংকর একটি বিষয় হলো, যখন কাউকে জিজ্ঞেস করা হয় আপনি কী চান, তখন এই প্রশ্নটার উত্তর, হয় সে তার পরিবারের পরিপেক্ষিতে দেয় অথবা তার আশেপাশের প্রিয় মানুষ কী চাচ্ছে পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর দেয়। কিন্তু আসলে লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত, আপনি নিজে কী চাচ্ছেন সেই পরিপ্রেক্ষিতে। আর তাই প্রথমেই লক্ষ্যের ব্যাপারে খুব বেশি যত্নশীল হতে হবে এবং সেই নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে পরবর্তী পন্থা অবলম্বন করতে হবে।
২. আপনি কে?
আপনি জীবনে কী চান এই প্রশ্নের উত্তরের পরবর্তী ধাপে জানতে হবে আপনি আসলে কে? অর্থাৎ নিজের সম্পর্কে নিজের একটি স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হবে। আপনার নিজের যদি নিজের সম্পর্কে সঠিক এবং স্বচ্ছ ধারণা না থাকে, তাহলে আপনি জীবনে কী করতে চাচ্ছেন সেই প্রশ্নটির উত্তর খুঁজে পাওয়াটা অনেক বেশি কঠিন হয়ে যাবে।
আমাদের মাঝে অনেকেরই নানান রকম প্রতিভা রয়েছে। কেউ হয়তো গিটার বাজাতে ভালোবাসে, কেউ গান গাইতে ভালোবাসে, কেউ হয়তো সুন্দর করে কথা বলতে ভালোবাসে। কিন্তু নিজের সম্পর্কে যদি আপনার নিজের স্বচ্ছ ধারণা না থাকে, তাহলে আপনি আপনার প্রতিভা সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন না। আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন, যারা অনেক বেশি প্রতিভার অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও নিজের সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকার অভাবে নিজেদের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেন না। আর তাই তারা জীবনে প্রতিটি পদক্ষেপেই খুব বেশি হতাশায় ভোগে। কেননা তারা বুঝে উঠতে পারে না, তারা আসলে জীবনে কী চাচ্ছেন।
যে কাজগুলো করতে আপনি ভালোবাসছেন না, সেগুলো যদি আপনি প্রতিনিয়ত করেন তাহলে আপনি অবশ্যই আপনার মূল্যবোধের সাথে প্রতারণা করছেন। তাই নিজেকে জানার পাশাপাশি নিজের মূল্যবোধ সম্পর্কে হতে হবে সচেতন।

৩. অনেকগুলো ইচ্ছের মাঝে কোন বিষয়টি আপনার সাথে সবচেয়ে ভাল যায়

নিজের সম্পর্কে অবগত হবার পর পরবর্তী পন্থা হচ্ছে, আপনি যখন নিজের সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে যাবেন, তখন আপনার হাতে অনেকগুলো অপশন থাকবে। এত অপশনের মাঝে নিজের জন্য সর্বোত্তম অপশনটি বেছে নেওয়াই হবে আপনার সঠিক সিদ্ধান্ত। জানতে হবে আপনার এত ইচ্ছের মাঝে কোন ইচ্ছেটি আপনার মাঝে উত্তেজনা তৈরি করছে। অর্থাৎ কোন কোন স্বপ্ন নিয়ে আপনি কাজ করতে পারলে সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন।
নিজের সম্পর্কে অবগত হবার পর নিজের এতগুলো প্রতিভার মাঝে, সবচেয়ে ভালো প্রতিভাকে কেন্দ্র করে যখন আপনি কাজ করা শুরু করবেন, তখন আপনি নিজের মাঝে এক ধরনের উম্মাদনা অনুভব করবেন। কারণ সে কাজটি করতে আপনি ভালোবাসছেন আর তাই নিজের সম্পর্কে জানার পর পরবর্তী পন্থা হবে অনেকগুলো অপশন এর মাঝে সর্বোত্তম অপশনটি বেছে নেওয়া।

৪. নিজের বাধাগুলো সম্পর্কে জানতে

যখন আপনি আপনার অপশনগুলো সম্পর্কে অবগত হয়ে যাবেন, তখন আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে আপনার সর্বোত্তম অপশন এর পেছনের সবচেয়ে বড় বাধা গুলো কী কী। বাধার মানে এই নয় যে আপনি ভুল কিছু বেছে নিয়েছেন, বরং সে বাধাগুলো সম্পর্কে অবগত হয়ে, সেগুলো থেকে কিভাবে পরিত্রাণ পাবার পথ খুঁজে বের করাই হবে আপনার পরবর্তী লক্ষ্য। কারণ, যখন আপনার লক্ষ্য সম্পর্কে অবগত হয়ে গেছেন, এখন আপনাকে জানতে হবে আপনার ওই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যটির পিছনে যে বাধাগুলো রয়েছে, সেগুলোকে কিভাবে অতিক্রম করা যায়।
আর বাধাগুলো সম্পর্কে পূর্বে থেকে ভাল ধারণা রাখার মানে হচ্ছে, আপনি আপনার স্বপ্নটিকে নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। বাধা নানারকম হতে পারে, আপনার আত্মবিশ্বাসের অভাব হতে হতে পারে, আপনি হতাশ হয়ে যেতে পারেন, বাধা যাই হোক, সে বাধাগুলো সম্পর্কে অবগত হয়ে, অতিক্রম করবার পথ খুঁজতে হবে।

৫. সামনে এগোনোর পথ খুঁজে নিন

সব শেষে আপনাকে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে নিতে হবে। এই পন্থাটি বাকি সবগুলোর চেয়ে একটু কঠিন। কিন্তু মনে রাখতে হবে আপনাকে সকল বাধা অতিক্রম করে সামনে এগোতেই হবে। কেননা আপনি যদি আপনার জীবন নিয়ে হতাশাগ্রস্থ থাকেন বা জীবনে কী করছেন সেই প্রশ্নটির সঠিক উত্তর না পেয়ে বসে থাকেন বা হতাশ সময় কাটান, তার চেয়ে বরং কিভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় সেই পথ খুঁজে বের করা হবেই বুদ্ধিমানের কাজ। আর তাই এখন আপনাকে খুঁজতে হবে কিভাবে আপনি আপনার জীবনে সামনে এগিয়ে যাবেন।
লক্ষ্য নির্ধারণের পর, বাঁধা সম্পর্কে অবগত হবার পর সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় আপনাকে জানিয়ে দেবে আপনি আপনার জীবন নিয়ে কী করছেন। আর এভাবেই জীবন নিয়ে কী করছেন এই হতাশা থেকে বের হতে পারবেন। যে কোন কিছু সমাধান খুঁজে বের করায় সে কাজটি প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়ে যাওয়া। আর তাই শেষ অব্দি আপনাকে সামনে এগিয়ে যাবার পথ খুঁজতে হবে। হতাশাজনক সময় কাটানো বন্ধ করতে হবে। আমি আসলে জীবনে কী করতে চাই, আমি জীবনে কী চাই এই প্রশ্নটির উত্তর ধাপে ধাপে নিজেই নিজেকে দিতে পারবেন। আর এভাবে আপনি আপনার জীবনে এগিয়ে যাবার পথ খুঁজে পাবেন।
কাজ করছি লগো, ফেসবুক পেজ, ডোমেইন-হোষ্টিং ও ওয়াব সাইট নিয়ে।
https://www.facebook.com/ICTCARE2015

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *