প্রশ্নের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যান কথোপকথন
মন্তব্যের চেয়ে প্রশ্ন মানুষের চিন্তা ও মনোযোগকে বেশি এ্যাকটিভ করে। এটা আপনি অন্যকে কথা শোনানোর ব্যাপারে কাজে লাগাতে পারেন। বিশেষ করে যখন খুব বিস্তারিত ভাবে কাউকে কিছু বলছেন বা বোঝাচ্ছেন – তখন এই কৌশলটি দারুন কাজে আসে।
বিস্তারিত ভাবে কিছু বলার বা বোঝানোর সময়ে মাঝে মাঝে সামনের মানুষকে প্রশ্ন করুন। এতে কথপোকথনটি একপেশে হবেনা। আপনার বক্তব্যের প্রতিটি পয়েন্ট শেষ করার পর অপর পক্ষের জন্য কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি করুন।
ধরুন, আপনি একটি নতুন আইডিয়ার কথা কারও কাছে শেয়ার করলেন, নিজের কথা বলার একটা পর্যায়ে তাকে জিজ্ঞাসা করুন, “ব্যাপারটা আপনার কেমন মনে হয়?” – অথবা “এভাবে আমি চিন্তা করেছি, আপনার কি মনে হয়?”
মানুষের একটি স্বভাব হল, তার কাছে কিছু জানতে চাইলে সে মনে করে তাকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এবং গুরুত্ব দেয়ার ফলে সে মনোযোগ দিতে আগ্রহী হয়।
এই পদ্ধতি বিশেষ করে কাউকে কিছু শেখানোর ক্ষেত্রে খুব কাজে লাগে। অনেক শিক্ষক আছেন, যাঁরা শুধু নিজের মত লেকচার দেয়ার বদলে মাঝে মাঝে ছাত্রছাত্রীদের কাছে মন্তব্য নেন। এটা তাদের শিক্ষকের কথা শোনার ব্যাপারে অনেক বেশি মনোযোগী করে তোলে।
আপনার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ক্ষেত্রেও এটা কাজে লাগাতে পারেন। নতুন কোনও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে কর্মীদের সাথে সেটা নিয়ে আলোচনা করার সময়ে তাদের কাছে সেই ব্যাপারে জানতে চাইতে পারেন। আপনার চেয়ে উপরের পজিশনের কারও কাছে কিছু বলতে গেলে প্রথমেই তাকে পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যা করার বদলে মোটামুটি একটা ধারণা দিয়ে তারপর তার পরামর্শ চান। দেখবেন, আপনার বক্তব্য সে মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করছে।
আগে অন্যকে বলার সুযোগ দিন
আগেই বলেছি, বেশিরভাগ মানুষ অন্যের কথা শোনার চেয়ে নিজের কথা বলতে বেশি আগ্রহী হয়। নিজের কথা বলার আগে তারা অন্যের কথা শুনতেই চায় না। এটা একটা অসুবিধা। কিন্তু এটাকেও সুবিধায় পরিনত করা যায়।
আপনি যদি এমন কারও সাথে কথা বলতে যান, যে নিজের কথা বলতে বেশি পছন্দ করেন – তাহলে আগে তার কথা শুনে নিন। আপনি যদি প্রথমেই তাকে থামিয়ে দিয়ে বা তার কথার মাঝখানে নিজের কথা বলতে শুরু করেন – তাহলে সে কোনওভাবেই আপনার কথা শুনতে আগ্রহী হবে না। সে শুধু আপনার কথা শেষ হওয়ার অপেক্ষা করবে – যাতে সে নিজের কথা আবার শুরু করতে পারে।
কাজেই, যদি আপনাকে দেখে কেউ তার নিজের কথা বলতে শুরু করে – তাকে আগে শেষ করতে দিন। এবং শুধু শুনে গেলেই হবে না। সে যেন বোঝে যে, আপনার তার কথায় আগ্রহ আছে। ধৈর্যের সাথে তার কথা শুনুন, এবং চেহারায় আগ্রহ প্রকাশ করুন। এতে করে সে-ও পরে আপনার কথা শুনতে আগ্রহী হবে।
এভাবে একবার যখন সে পুরোপুরি নিজের কথা বলা শেষ করবে, আপনি তারপর নিজের কথাটি তাকে বলুনন। নিজের কথা বলা হয়ে যাওয়ায় সে অনেকটা স্থির হয়ে যাবে, এবং মনোযোগের সাথে আপনার কথা শুনবে।
কেমন লাগছে এই পর্ব গুলি,উত্তর কমেন্টে জানাবেন।