প্রযুক্তির এই যুগে এসে জিমেইল নামটি শোনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। তবে এটা সত্য যে জিমেইল ব্যবহার করলেও এর সিংহভাগ ফিচার সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারনা একেবারেই কম।
এই আর্টিকেল এ আমি তুলে ধরেছি সেরা ৫টি টিপস, যা আপনার জিমেইল ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ এনে দিবে।
একাধিক জিমেইল একাউন্ট এক জায়গায় করুন
আমাদের প্রায় সকলেরই একাধিক জিমেইল একাউন্ট থাকে। একটি হয়তো ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের জন্য, একটি অফিসিয়াল কাজের জন্য। আপনি এতদিন হয়তো একবার ব্যক্তিগত একাউন্টে কাজ শেষ করে লগ-আউট করে আবার অফিসিয়াল একাউন্টে লগ-ইন করেন অফিসিয়াল কাজ করার জন্য!
এই ঝামেলা থেকে মুক্তি দেবে জিমেইল এর চমৎকার একটি ফিচার। এই ফিচার এর মাধ্যমে যখন একাধিক একাউন্ট এক জাগায় করবেন তখন এক জায়গা থেকেই আপনি দুটি জিমেইল একাউন্ট এর যাবতীয় কাজ করতে পারবেন।
যেভাবে একাধিক জিমেইল একাউন্ট এক জাগায় করবেন
আপনার জিমেইল একাউন্টে লগ ইন করুন, তারপর সেটিংস থেকে Accounts and Import এই অপশনে ক্লিক করুন। এবার Send mail as: এর পাশে থাকা Add another email address এ ক্লিক করুন, একটি পপ-আপ ওপেন হবে। এখানে আপনার কাঙ্ক্ষিত জিমেইল একাউন্টটি লিখুন এবং Next Step এ ক্লিক করুন।
এবার আপনার ঐ দ্বিতীয় ইমেইল ঠিকানায় লগইন করলে দেখতে পাবেন যে একটি যাচাইকরণ কোড গিয়েছে, সেই কোড টি বসিয়ে নেক্সট ক্লিক করুন। ব্যাস হয়ে গেলো দুইটি একাউন্ট এক জায়গায়!
এবার একটি ইমেইল পাঠাতে গিয়ে দেখুন আপনি দুটি ইমেইল ঠিকানা থেকে একটি সিলেক্ট করার অপশনও পেয়ে যাচ্ছেন।
না পারলে আমায় জানাবেন ভিডিও বানিয়ে দিব
Undo Send বাটন চালু করুন
ধরুন আপনি আপনার অফিসের একজন উচ্চপদস্থ স্যারকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল সেন্ড করার পর পর মনে পরলো আপনি ঐ ইমেইলে কিছু একটা ভুল করেছেন। এটি দেখলে আপনার উপরে খারাপ ইমপ্রেশন পরতে পারে। তখন আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন ইমেইলটি ফেরত আনতে!
জিমেইলে এমন দারুণ একটি ফিচার রয়েছে। এটি চালু করে রাখলে আপনি কোনো ইমেইল পাঠানোর পর একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঐ ইমেইলটি ফেরত নিয়ে আসার সুযোগ পাবেন।
যেভাবে Undo Send অপশন চালু করবেন
লগইন করে সেটিংস থেকে প্রথম অর্থাৎ জেনারেল ট্যাব এর আন্ডারে একটু নিচেই পেয়ে যাবেন Undo Send এই অপশনটি। এখানে আপনি নির্ধারণ করে দিতে পারবেন যে আপনি কতক্ষণ পর্যন্ত Undo করার সুযোগ পাবেন।
তবে বলে রাখা ভালো যে, ৩০ সেকেন্ড এর বেশি আপনি সময় পাবেন না।
Smart Compose চালু করুন
জিমেইলের আরেকটি জনপ্রিয় ফিচার হলো Smart Compose। আপনি ইমেইল লিখার সময়, গুগলের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আপনার সুবিধার সেন্টেন্স শেষ করার জন্য কিছু ওয়ার্ড সাজেষ্ট করবে। আপনি চাইলে সেই সাজেশন ব্যবহার করতেও পারেন, আবার নাও করতে পারেন।
ধরুন আপনি লিখছেন I hope, এর পাশেই দেখবেন জিমেইল তাদের সাজেশন কিছুটা ধূসর রঙে দেখাবে you are doing well. আপনি যদি এই সাজেস্ট করা অংশটি আপনার ইমেইলে যুক্ত করতে চান তাহলে কীবোর্ড এর tab বাটনে ক্লিক করুন (পিসি থেকে), আর মোবাইলে হলে ডান দিকে স্লাইড করুন তাহলেই যুক্ত হয়ে যাবে।
কী বোর্ড শর্ট-কাট ব্যবহার করুন
মাউসের ব্যবহার কমিয়ে কীবোর্ডের শর্ট-কাট ব্যবহারে পারদর্শী হতে পারলে, নিঃসন্দেহে কাজের গতি অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই জিমেইলের কিছু শর্ট-কাট কী ব্যবহার শিখে নিলে মন্দ হয় না!
এই অপশনটিও পেয়ে যাবেন General ট্যাব এর কিছুদূর নিচে গেলেই।
জেনে নিন কয়েকটি জিমেইল কী বোর্ড শর্ট-কাটঃ
Shift + ! = Report as spam. স্প্যাম হিসেবে রিপোর্ট করুন।
R = Reply. এটি সাধারণ মনে হলেও এটি অসাধারন। কারন, R প্রেস করে রিপ্লাই দিলে Reply All এর বিব্রতকর অবস্থা এড়ানো যায়।
C = Compose. জিমেইল ড্যাসবোর্ডে থাকা অবস্থায় C চাপলে নতুন ইমেইল লেখার উইন্ডোটি পপ-আপ হবে।
শিডিউলড ইমেইল সেন্ড করুন
ধরুন আপনি অফিসের কাজ শেষ করে বের হলেন বিকেল ৫ টায়। এরপর ট্রাফিক জ্যামে সময় নষ্ট হচ্ছে, কখন বাসায় পৌছাবেন তার ঠিক নেই। কিন্তু, ঠিক সন্ধ্যা ৭ টায় আপনার একটা জরুরি মেইল পাঠাতে হবে স্যারকে। জ্যাম, ক্লান্তি সব কিছু মিলিয়ে ভুলে গিয়েছেন মেইল পাঠানোর কথা! এরকম পরিস্থিতিতে হয়তো বড় বিপদে পড়তে হতে পারে।
এইসব ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে জিমেইলের রয়েছে সিডিউলড ইমেইল ফিচার।
যেভাবে জিমেইলের সিডিউলড ফিচার ব্যবহার করবেন
ইমেইল লেখা শেষে সেন্ড বাটনের পাশেই থাকা ত্রিকোণাকার বাটনে ক্লিক করলে Schedule send নামের একটি পপ-আপ দেখা যাবে। ওখানে ক্লিক করলেই দেখতে পাবেন সময় নির্ধারণ সহ ইত্যাদি বিষয়াদি।
কন্টেন্ট একটু বড় হলেও আশা করছি এই গ্রুপের ৯০% মানুষের এই কন্টেন্ট অনেক উপকারে আসবে।