না বলতে না পারার পেছনে অপরাধবোধের ভূমিকা কতটুকু ?

 

“সফল হতে গেলে ‘না’ বলা শিখতে হয়” – এই কথা আপনি নিশ্চই শুনেছেন। কিন্তু অনেকেই আছেন যাঁরা নিজের জরুরী কাজ ফেলে অন্যের কাজ করে দেন। নিজের কাজ ফেলে হয়তো বন্ধুর বার্থডে পার্টির জন্য কেক কিনতে দৌড়ান, অথবা সিনেমা দেখতে যান, বন্ধুর ফোন পেয়ে কাজ ফেলে আড্ডা মারতে যান। না-বলতে না পারার কারণে আপনার মূল্যবান কাজের সময় নষ্ট হয়। এটা জীবনে সফল হওয়ার পথে বিরাট বাধা।
বেশিরভাগ মানুষের জন্য ‘না’ বলাটা একটি কঠিন কাজ। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, অপরাধবোধ, এবং অন্যকে কষ্ট দেয়ার ভয়।আপনার কি কখনও মনে হয়েছে যে আপনি সব সময়েই হ্যাঁ বলছেন? অনেক সময়েই কষ্ট করে ‘না’ বলে ফেললেও পরে নিজেকে কেমন যেন অপরাধী মনে হয়। এটা চলতে থাকলে আপনি একটা সময়ে মানসিক চাপে ভুগতে পারেন।
আপনার হাতে যদি বাড়তি সময় থাকে, অথবা আপনার কাছে যদি কারও কোনও উপকার পাওনা থাকে, তবে আপনি হ্যাঁ বলতে পারেন। কেউ খুব বিপদে পড়লে তখন কাজ ফেলে তার উপকার করার একটা যুক্তি আছে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই আমরা আমাদের নিজের কাজ ফেলে অন্যদের এমন সব কাজের পেছনে সময় দিই – যেগুলো আসলে কোনও জরুরী কাজ নয়।
এভাবে আমরা নিজের অজান্তেই পিছিয়ে পড়ি। অনেক সময়ে আমরা বুঝি যে আমাদের ছাড়াও কাজটি হবে, কিন্তু তবুও না- বলতে পারি না। কারণ আমরা অন্যকে কষ্ট দিতে চাই না। কিন্তু সত্যি কথা হলো, আপনি সবাইকে খুশি রেখে চলতে পারবেন না। সেটা করতে গেলে আপনার নিজেরই ক্ষতি হবে।
আপনার সমস্যা হবে বুঝেও যদি কেউ আপনার কাছ থেকে সময় পাওয়ার জন্য জোরাজুরি করে, তবে বুঝতে হবে তার কাছে আপনার কাজের গুরুত্ব নেই। একটু খেয়াল করলে আপনি অনেক মানুষের মাঝেই এমন মনোভাব দেখতে পাবেন। আপনি হয়তো অফিসের খুব জরুরী একটা কাজ করছেন, বা ক্লাসের কোনও এ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে ব্যস্ত আছেন, আপনার বন্ধু আপনাকে তার সাথে সিনেমা দেখতে যাওয়ার জন্য জোর করছে। আপনি ব্যস্ত থাকার কথা বললেও সে ছাড়তে চাইছে না।
এমন ভাবে কথা বলছে, যেন আপনি না গেলে তার বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে। এর মানে, সে শুধু নিজের দিকটাই দেখছে। আর আপনি তাকে খুশি করতে, এবং অপরাধবোধ থেকে বাঁচতে তার কথা শুনছেন। কিন্তু এই ধরনের মানুষ ইচ্ছা করে আপনার মাঝে এই ধরনের অপরাধবোধ জাগায়এরা আসলে দারুন স্বার্থপর ধরনের মানুষ। তাই, আপনাকে বুঝতে হবে, কার জন্য আপনি আপনার কাজ ফেলে দৌড়াচ্ছেন।

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *