নিজেকে নিয়ে যদি আপনি হতাশ হয়ে যান তাহলে জেনে নিন কোন প্রশ্নগুলি করবেন আপনি নিজেকে। আর আমার প্রথম কন্টেন্টটি পড়বেন।
বছরের শেষে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
বড় লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে আমরা অনেক সময়েই পথ হারিয়ে ফেলি, কারণ আমরা বেশিরভাগ সময়েই ৫-১০ বছর পর কি হবে – তা নিয়ে চিন্তা করি। কিন্তু যে কোনও বড় বা দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য পূরণের প্রথম শর্তই হল বড় লক্ষ্যটিকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করা।
আপনার লক্ষ্য যদি থাকে ৫ বছর পর কিছু একটা হওয়া, সেই লক্ষ্যটিকে যত ছোট করে ভাগ করা সম্ভব – তা করুন। যদি লক্ষের দিকে কাজ করতে করতে একটা সময় পর পথ হারিয়ে ফেলেন, মানে বুঝতে না পারেন যে, কোথায় যাচ্ছেন, বা কি করছেন – তবে নিজেকে প্রশ্ন করুন, দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যকে কি আপনি যথেষ্ঠ ছোট ছোট ভাগে ভাগ করেছেন?
যদি না করে থাকেন, তবে কয়েক বছরের লক্ষ্যকে প্রথমে এক বছর এক বছর করে ভাগ করুন। তারপর বছর গুলোকে ছয় মাস, তিন মাস, এবং এক মাসের লক্ষ্যে ভাগ করে ফেলুন।
এভাবে করতে পারলে আর হতাশ লাগবে না। এক একটি ছোট লক্ষ্য পূরণ করার সাথে সাথে আপনি নতুন করে আরও আত্মবিশ্বাস পাবেন। এবং পরবর্তী ছোট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাবেন। এভাবে ধীরে ধীরে, পথ না হারিয়ে আপনি এক সময়ে লক্ষ্যটি পূরণ করতে পারবেন।
সবচেয়ে ভালো হয় এই লক্ষ্যগুলো একটির পর একটি লিখিত আকার সাজিয়ে রাখলে। মনে মনে ধরে রাখা, অথবা মুখে বলা লক্ষ্যের চেয়ে লক্ষ্য লিখে রাখলে তা সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
নিজের শক্তি আর সুযোগকে কতটা ব্যবহার করেছেন?
লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার একটি প্রধান কারণ, নিজের দক্ষতা ও শক্তিকে পুরোপুরি কাজে না লাগানো। সময়মত লক্ষ্য পূরণ না হলে হতাশ হওয়ার বদলে নিজেকে প্রশ্ন করুন, আমি কি আসলেই আমার পুরো দক্ষতা, শক্তি ও সময়কে লক্ষ্য পূরণের কাজে লাগিয়েছি?
এই প্রশ্নটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময়ে আমরা নিজেরাই বুঝিনা যে, আমরা নিজের দক্ষতার কতটা আসলেই কাজে লাগিয়েছি? ধরুন একজন দৌড়বিদ ১ মাসের ভেতর নিজের টানা দৌড়ানোর ক্ষমতাকে বাড়িয়ে নিতে চায়। সে হয়তো ৩০ মিনিটে ১ কিলো দৌড়াতে পারতো। এরপর সে ঠিক করেছিল, সে ১ মাসের ভেতরে দেড় কিলো দৌড়ানোর ক্ষমতা অর্জন করবে। কিন্তু ১ মাসের ভেতরে তা করতে না পেরে সে হতাশ হয়ে গেল। কিন্তু দেখা গেল সে প্রতিদিন ২ ঘন্টা প্রাকটিস করেছে, যেখানে সে চাইলে ৩ ঘন্টা প্রাকটিস করতে পারতো।
সত্যিকারে নিজের ক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার করলে লক্ষ্য পূরণ অনেক সহজ হয়ে যায়। আগেই বলেছি, লক্ষ্য পূরণের জন্য কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। একজন ছাত্র সিলেবাস শেষ করার জন্য ৩ মাস সময় ঠিক করে – যদি তা না করতে পারে, তবে নিজেকে কম মেধাবী মনে করে হতাশ হওয়ার চেয়ে তার উচিৎ নিজেকে প্রশ্ন করা। সে যত ঘন্টা পড়েছে, তারচেয়ে বেশি কি পড়তে পারতো না? প্রতি সপ্তাহে যে ৪ ঘন্টা সে সিনেমা দেখে – তার ২ ঘন্টাও যদি সে পড়ার কাজে লাগাতো, তাহলে হয়তো সিলেবাস শেষ হয়ে যেত।
এরকম প্রতিটি ক্ষেত্রেই যদি আমরা নিজেকে প্রশ্ন করি, তাহলে দেখা যাবে, আমাদের ক্ষমতা বা সুযোগের পুরোটা আমরা ব্যবহার করিনি। – অবশ্য এটা নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। বরং এই বাড়তি সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নতুন করে শুরু করার নতুন উৎসাহ খুঁজে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আফসোস করলে আরও সময় বা সুযোগই শুধু নষ্ট হবে।