আপনার নিজের মূল্য কতটা, তা আপনার খুব ভাল করে বুঝতে হবে। ‘না’ বলতে না পারার একটি বড় কারণ অনেকেই নিজেকে অন্যের চোখ দিয়ে মাপে। অন্যের কাছে ভালো মানে নিজে ভালো, অন্যের চোখে খারাপ মানেই নিজে খারাপ। এই ধরনের মনোভাব আসলে আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। অনেকেই চান না অন্যরা তার ওপরে বিরক্ত হোক, বা অপছন্দ করুক, বা তার ওপরে কোনও কারণে হতাশ হোক।
কিছু মানুষের জীবনের একমাত্র চাওয়াই অন্যদের কাছে পছন্দের পাত্র হওয়া। কিন্তু বাস্তবতা হলো একজন মানুষের পক্ষে এটা অসম্ভব।
যাই হোক, আপনি যদি অন্যদের চোখে নিজের অবস্থানকে আদর্শ ধরে আপনার নিজেকে পরিমাপ করেন, তাহলে বলতে হয় আপনি নিজের মতামতের থেকে অন্যদের মতামত ও মনোভাবকে বেশি গুরুত্ব দেন। এ থেকে আরও বোঝা যায় যে আপনি নিজের থেকে অন্য যে কাউকে ওপরে স্থান দেন।
এটা হতেই পারে যে আমরা আমাদের পিতা মাতা বা কোনও গুরুর চোখে নিজেদের প্রমান করতে চাইবো। কিন্তু এটা যদি সবার ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে আপনার মাঝে আত্মসম্মানের ঘাটতি আছে। প্রতিটি মানুষের নিজস্ব প্রতিভা আর মূল্য আছে। আপনি যদি নিজের মূল্য না বুঝতে পারেন, তবে আপনার মূল্যও কেউ বুঝবে না। আপনাকে বুঝতে হবে আপনার নিজের কাজ ও ব্যক্তিত্বের একটি অনন্য মূল্য আছে। সবার আগে আপনার নিজেকে সম্মান করতে হবে। অন্যের কাজ করে দেয়ার মাঝে একটি মহত্ব নিশ্চই আছে, তবে তা যদি হয় তার কাছে ছোট হওয়া থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য নিজের সময় নষ্ট করা – তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনাকে সেই জাল কেটে বের হয়ে আসতে হবে।
আপনাকে বুঝতে হবে, অন্যের মতামত আপনাকে সঠিক ভাবে কখনওই সংজ্ঞায়িত করতে পারবে না। আপনার নিজেকে বুঝতে হবে আপনার নিজের ও আপনার কাজের মূল্য কতটা। মানুষের কাজই মানুষকে বড় করে, তাই সবার আগে নিজের কাজকে প্রাধান্য দিন। নিজের ইচ্ছাকে মূল্য দিন। তাহলে দেখবেন ‘না’ বলাটা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে গেছে।
কি বলবেন আগে থেকেই ঠিক করে রাখুন
আপনার যদি আগে থেকেই জানা থাকে যে আপনাকে কেউ এমন কিছু করতে বলতে পারে, যা করা আপনার জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে – তবে কি উত্তর দেবেন, তা আগেই ঠিক করে রাখুন। হঠাৎ করে কিছু বলতে গেলে অনেক সময়ে আমরা ঠিকমত বুঝিয়ে বলতে পারি না। আর সেই অবস্থায় কাউকে ‘না’ করতে সবচেয়ে বেশি ঝামেলা হয়।
তাই আপনারও যদি এমন কোনও সমস্যা থাকে, তবে আপনার উচিৎ কথাগুলো আগে থেকে গুছিয়ে রাখা। এতেকরে না করাটা অনেক সহজ হয়ে যায়। প্রয়োজনে আয়নার সামনে প্রাকটিস করুন, যাতে কথাটা শোনা মাত্র জবাব দিতে পারেন। তবে, এটা যে আপনি প্রাকটিস করেছেন, সেটা যেন সামনের মানুষটি বুঝতে না পারে।