পজিটিভ চিন্তা কিভাবে সাফল্য নিয়ে আসে,এই কন্টেন্ট দেবার পরে সবচেয়ে বেশি যেটি আলোচিত হয়েছে সেটি হলো- পজিটিভ চিন্তা করার উপায় নিয়ে। এজন্য আজকের কন্টেন্ট জুড়েই থাকছে পজিটিভ চিন্তা করার কিছু টেকনিক নিয়ে আলোচনা।
অন্যদের চেয়ে আলাদাভাবে ভাবুন এবং সজাগ থাকুন
আমরা অনেকেই সচেতন ভাবে চলি না। আমাদের সাথে প্রতিদিন ঘটা ঘটনা ও চারিপাশের পরিবেশ নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করি না। অথবা চিন্তা করলেও সেসবের নেগেটিভ বা নেতিবাচক বিষয়গুলোই বেশি চোখে পড়ে। বেশিরভাগ সময়ে আমরা শুধু সমস্যার দিকে তাকাই। কিন্তু যারা পজিটিভ চিন্তার মাধ্যমে সফল হন, তাঁরা সমস্যার ভেতর থেকে সুযোগ খুঁজে নেন।
আপনি যদি আপনার আশপাশে কোনও সমস্যা দেখেন, এবং অন্য সবার মত সেই সমস্যা নিয়ে অভিযোগ করেন – তবে আপনিও বেশিরভাগ মানুষের মত নেগেটিভ দিকেই বেশি ফোকাস করেন। কিন্তু মানব সভ্যতার প্রথম থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যাঁরা সফল হয়েছেন – তাঁরা এইসব সমস্যার দিকে অন্য ভাবে তাকিয়েছেন। তাঁরা সেইসব সমস্যাকে নিজের যোগ্যতা দেখানোর একটা সুযোগ হিসেবে দেখেছেন। তাঁরা চোখ কান খোলা রেখে একটি সমস্যার গভীরে যেতে চেয়েছেন, এবং সেই সমস্যার সমাধান করে সফল হয়েছেন।
জীবনে সবাই বড় কিছু করতে চায়। কেউই নিচে পড়ে থাকতে চায় না। কিন্তু বড় হওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা আর পজিটিভ চিন্তা করা এক কথা নয়। আপনি যদি প্রতিটি জিনিসের নেতিবাচক ও ক্ষতিকর দিকগুলো দেখা ও শোনার পাশাপাশি তার পজিটিভ দিকগুলো দেখার চেষ্টা করেন, অথবা সমস্যার সমাধান নিয়ে ভাবেন – তবে আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের চেয়ে বেড়ে যাবে।
অন্যরা যেখানে শুধুই নেতিবাচকতা দেখবে, আপনি সেখানে সুযোগ দেখতে পাবেন। তাই প্রতিটি ব্যাপারে সব সময়ে চোখ কান খোলা রাখুন এবং সবকিছু নিয়ে একপেশে চিন্তা না করে, বিভিন্ন দিক থেকে ভেবে দেখুন। তাহলেই দেখবেন, সবকিছুর মধ্যেই আপনি পজিটিভ কিছু করার সুযোগ দেখতে পাবেন। হয়তো আপনার আশপাশের সবচেয়ে বড় সমস্যার মধ্যেই আপনার লক্ষ্য পূরণের উপাদান রয়েছে।
লক্ষ্যগুলো লিখে রাখুন, সময়সীমা ঠিক করুন এবং বড় লক্ষ্যকে ছোট ছোট লক্ষ্যে ভাগ করুন
লক্ষ্যগুলো লিখে রাখার ফলে- আপনার সামনে লক্ষ্যের একটা পরিস্কার ছবি থাকবে। বিজ্ঞানের ভাষায় লেখালেখিকে “সাইকো-নিউরো-মোটর এ্যাক্টিভিটি” বলা হয় – সোজা কথায়, লিখতে গেলে আপনাকে অবশ্যই গভীর ভাবে চিন্তা করতে হবে, ও মনোযোগ দিতে হবে। এতে লক্ষ্যের বিষয়ে অনেক খুঁটিনাটি জিনিস মাথায় আসে, যা সাধারণ ভাবে আসে না।
মূল লক্ষ্যটি বিস্তারিত ভাবে লিখে রাখার পর আপনাকে সেই লক্ষ্যটিকে ছোট ছোট লক্ষ্যে ভাগ করতে হবে। এবং প্রতিটি ছোট লক্ষ্য কবে শেষ করবেন – তার জন্য একটি সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে। এগুলোও লিখিত পরিকল্পনা আকারে সাজাতে হবে।
অনেক সময়ে আমরা খুব বড় লক্ষ্য ঠিক করার কিছুদিন পর নিজের ঠিক করা লক্ষ্য দেখেই ভয় পেয়ে যাই। প্রথমে ঠিক করার সময়ে উত্তেজনা কাজ করে বলে আমরা ততটা ভড়কাই না। কিন্তু কিছু সময় পরে বড় লক্ষ্যটি আমাদের ভয় দেখাতে শুরু করে। এর ফলে, একটা সময়ে গিয়ে আমাদের মনে হয় এত বড় লক্ষ্য আমাদের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব নয়।
এই নেগেটিভ চিন্তা থেকে মুক্তি দিতে পারে লক্ষ্যকে ছোট ছোট ভাগ করার পদ্ধতি। মনে করুন, আপনার লক্ষ্য হল সিঁড়ি বেয়ে দশ তলায় উঠবেন। এখন একবারে দশ তলায় তাকালে একটু ভয় লাগবেই। কিন্তু আপনি যদি দশ তলায় ওঠার চিন্তা পরে করে আগে এক তলায় কিভাবে উঠবেন – সেই পরিকল্পনা করে একটি একটি করে সিঁড়ি বাইতে থাকেন – তখন আর ব্যাপারটা অতটা কঠিন মনে হবে না।
দশ বছর পর ১০ কোটি টাকার মালিক হবেন – এটা সারাদিন চিন্তা করার বদলে, এটাকে এক জায়গায় লিখে রাখুন। তারপর সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য প্রতিদিন কি করবেন – তার পরিকল্পনা করুন। সপ্তাহের ও মাসের লক্ষ্য ঠিক করে সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য প্রতিদিন কাজ করুন। তাহলেই দেখবেন অনেক বেশি পজিটিভ থাকতে পারছেন। একটু একটু করে ছোট লক্ষ্য গুলো পূরণ করতে থাকলে আপনি সব সময়ে অনুপ্রাণিত থাকতে পারবেন। – একটা সময়ে বড় লক্ষ্য নিয়েও কোনও নেতিবাচক চিন্তা মাথায় আসবে না।
অন্য টেকনিক গুলি নিয়ে লিখবো ইনশাআল্লাহ পরের কন্টেন্টে।