পমোডেরো টেকনিক (দিন টা যেন ৩৬ ঘন্টা)- শেষ পর্ব

পমোডোরো টেকনিক এপ্লাই করলে হয়তো আরও অনেক বেশী প্রোডাক্টিভ ভাবে আরও বেশি কাজ করা সম্ভব ছিল। যা হয়তো বেটার রিটার্ন জেনারেট করতো এবং টায়ার্ড ও কম লাগতো।
আমি বেশ কিছু দিন ধরে এটি এপ্লাই করছি এবং ভাল ফলাফল পেয়েছি। তাই মনে হল আপনাদের সাথে এটি শেয়ার করা উচিত।

পমোডোরো টেকনিকটি আসলে কী?

এক কোথায় যদি বলি তাহলে এটি হচ্ছে একটি প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর টেকনিক। এই টেকনিকটি আবিষ্কার করেছেন Francesco Cirillo, ১৯৯০ সালে।
এর মুল ফর্মুলা টা হচ্ছে, আমি আমার মুল কাজটিকে ২৫ মিনিট সাইকেলের মধ্যে ভাঙবো এবং কয়েকটি ব্যাচ আকাঁরে এটি শেষ করবো।
সহজ করে বলি?
আমাদের যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে যাবতীয় ডেস্ট্রাকশন থেকে দুরে থাকতে হবে ২৫ মিনিটের জন্য। এমন একটি জায়গাতে বসতে হবে যেখানে মূলত আমাদের কোন রকমের ডেস্ট্রাকশন থাকবে না। মোবাইলটিকে দুরে রাখতে হবে। তারপর একটি এলার্ম ⏰ দিতে হবে যা ঠিক ২৫ মিনিট পর বাজবে।
শুরু করি বিসমিল্লাহ বলে।
তারপর এই ২৫ মিনিট পুরো ফোকাস দিয়ে কাজ করতে থাকবো। ২৫ মিনিট পর যখন এলার্ম বাজবে, তখন ৫ মিনিটের একটি ব্রেক নিব। একটু হাটাহাটি করবো। মুল উদ্যেশ্য হচ্ছে কাজ থেকে দুরে থাকা। যাতে মস্তিষ্ক একটু রিফ্রেসড হতে পারে।
তারপর আবার ২৫ মিনিট কাজ করবো। তারপর আবার ৫ মিনিটের ব্রেক।
এভাবে ৪ বার করবো, মানে ৪ বারে ১০০ মিনিটের কাজ এবং ১৫ মিনিটের ব্রেক। চার বার হবার পর আমাদের একটি পমোডোরো সাইকেল সম্পন্ন হবে, এবং আমরা এখন একটু বড় ব্রেক নিব। যেটা ২০ থেকে ৩০ মিনিটের ব্রেক হতে পারে।
এখানে মনে রাখতে হবে, ডেস্ট্রাকশন থেকে দুরে থাকা বলতে কি বোঝায়। (আমার ২৫ মিনিট শেষ, এলার্ম বেজেছে, এখন ৫ মিনিটের ব্রেক নিব, ৫ মিনিট পর আবার লিখা শুরু করবো)।
(ব্রেক শেষে শুরু করলাম আবার) আমি ধরে নিচ্ছি আমরা মোবাইল থেকে দুরে আছি। কেউ ফোন দিলে তা ধরছি না, কিন্তু একটু পর পর স্কাইপ এর মেসেজ চেক করছি, উত্তর দিচ্ছি, মেইল চেক করছি তাহলেও কিন্তু আসলে হবে না। আমাদের এমন ভাবে মাইন্ডসেট তৈরি করতে হবে যে এই ২৫ মিনিট আমি এই একটি কাজের বাইরে আর কিছু করবো না। যা করার এই ২৫ মিনিটের পরে করবো। আর যদি সম্ভব হয় তাহলে পুরো সাইকেল সম্পন্ন হবার পর করবো।
মুল বেপার হচ্ছে ২৫ মিনিট পুর্ন মনোযোগ দিয়ে কাজ করা। এতে আমাদের কাজের প্রোডাক্টিভিটি বাড়বে, নিজেকে মাল্টি টাস্কিং এর কারনে খুব একটা টায়ার্ড লাগবে না। অথবা ওভার ওয়েল্মড লাগবে না।
আরও বেশ কিছু সুবিধা আছে। যখন আমরা পুরো মনোযোগ দিয়ে কাজ করছি তখন আমাদের জন্য এটা আইডেন্টিফাই করা সহজ যে, কোন কাজ করতে আমাদের কতক্ষণ সময় লাগে। যা আমাদেরকে পুরো প্লান তৈরি করতে সহায়তা করবে।
এখন কথা হচ্ছে আমরা কোন একটি কাজ করার সময় আমাদের অন্য অনেক কিছু মনে আসতে পারে।
যেমন কোন আইডিয়া, অথবা কোন টু ডু লিস্ট। তখন কী করব?
এটার সমাধান হচ্ছে যখনি এমন কিছু মনে আসবে তখনি ওটা লিখে ফেলতে হবে। ওটা নিয়ে কাজ করতে যাবো না, কিন্তু কোথাও লিখে রাখবো যাতে পমোডোরো সাইকেল শেষ হলে ওটা নিয়ে কাজ করা যায়। আর লিখে রাখার কারনে আমাদের ভুলে যাবার সম্ভাবনাও থাকছে না।
আমায় বিশ্বাস করতে পারেন এটি খুবই ইফেক্টিভ একটি স্ট্রাটেজি। কিছুদিন মেইন্টেইন করতে পারলে দেখবেন নিজের প্রতি অনেক কন্ট্রোল চলে এসেছে।
আমি গত কিছু দিন ধরে কিছুটা বেটার ফিল করছি। এবং মনে হচ্ছে একি টাইমে একটু বেশি কাজ করা যাচ্ছে।
যাদের টাইম ম্যানেজ করতে হয়, প্রচুর কোলাবোরেশন করতে হয়, তাদের জন্য দিনের কিছু নির্দিষ্ট অংশ রাখতে হবে কমিউনিকেশন অথবা মিটিং এর জন্য, এবং কিছু অংশ কমিউনিকেশন এবং অন্যান্য ডেস্ট্রাকশন ছাড়া কাজ করার জন্য।

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *