বর্তমানে ফেসবুকে যে সমস্যাটা সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে সেটার মধ্যে অন্যতম হলো- পেজ রেস্ট্রিক্টেড করে দেওয়া এবং আইডি রেস্ট্রিক্টেড করে দেওয়া।
আমি আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে এর কিছু কারন ও প্রতিকার নোট করেছি,সেটাই উপস্থাপন করছি।
বছরের এই সময়টাতে, অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি ম্যাসেজ আসে-ভাইয়া,আমার পেজটা রেস্ট্রিক্টেড হয়ে গেছে,কি করলে ফেরত পাবো?
অনেকেই কয়েকটা কাঠি বেশি সরেষ হয়ে,যেখান থেকে এড রান করাতেন তার দোষ দিয়ে নিজেকে আনলাকি ভাবতে শুরু করেন।আসলে ব্যাপারটা এমন না যে শুধু ঐ ব্যাক্তির দোষ কিংবা শুধু আপনার দোষ।আসলে মুল সমস্যাটা কিছুটা অসাবধানতা, মোটামুটি লেভেলের অসততা আর বেশিরভাগ অজ্ঞতা।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি কথাগুলি আমি-
-
ফেসবুকে বিজনেস করতে গেলে সবার আগে জানতে হবে-ফেসবুকের কমিউনিটি গাইডলাইন সম্পর্কে,এখানে বলে দেওয়া থাকে,“আপনি কোন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে পারবেন আর কোনটা নিয়ে পারবেন না।কোন কাজ করতে পারবেন আর কোনটা করতে পারবেন না।”
-
এড রান করার আগে অবশ্যই আগে এড ক্যাম্পেইন করা সম্পর্কে ধারনা নিতে হবে।
-
ফেসবুক পেজে এড রান করার আগে অবশ্যই,আপনার ফেসবুক পেজটি ভালো করে সেটাপ করে নিন,সকল সেটিং ঠিক করে নিন (প্রয়োজনে প্রফেশনালের সহায়তা নিন)
-
পেজ ক্রিয়েট করার অন্তত ১৫ দিন পরে এড রান করবেন,কোন অবস্থাতেই পেজ খুলেই এড ক্যাম্পেইন চালাবেন না।যেকোন কাজে বিশ্বাসযোগ্যতা সবচেয়ে বড় ব্যাপার।
-
পেজ প্রমোট করার সময়,সর্বদা রিয়েল কাষ্টমার বেইজ লাইক কেনার দিকে মনযোগ দিন।অল্প টাকায় ভলবো গাড়ির চিন্তা না করে বরং টাকা বেশি খরচ হলেও সবসময় রেগুলার লাইক ও ক্লায়েন্ট বেইজ লাইক নেবার দিকে মনোযোগ দিন,এবং এই প্রসেস নিয়মিত করুন।
-
নিজের তোলা ইমেজ দিয়ে পোষ্ট বুষ্ট ও এড ক্যাম্পেইন চালাতে চেষ্টা করুন,যদি একান্তই অন্যের তোলা ছবি কিংবা রিসেলিং প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করেন,তবে অবশ্যই সেটাকে এডিট করুন এবং নিজের লোগো সহ প্রেজেন্ট করুন।
-
কপিরাইট ফ্রী মিউজিক দিয়ে ভিডিও তৈরি করুন,কন্টেন্টের বেলাতেও এটা মান্য করে চলুন।
-
এড ক্যাম্পেইন রিয়েল ডলার দিয়ে করবেন।কোন প্রকার কুপন বা থ্রেসহোল্ড দিয়ে রান করাবেন না।
-
এড একাউন্টে ডলার ডিউ করবেন না (যারা নিজেরা এড রান করেন)। অনেক সময় ডলার ডিউ রাখলে এড একাউন্টে সমস্যা করবে।
প্রতিমাসেই অন্তত ৫০০-১০০০ এড ক্যাম্পেইন সেট করি,যারা শুধুমাত্র বুষ্ট করান পেজে,তাদের অনেকেই হয়তো এখন বলবেন এবং বলে থাকেন- ভাইয়া, আমি একটা পোষ্ট করেছি সেটা দেখে দেন। তাদের জন্য এই কথাগুলি-
-
পোষ্ট টা দেখলাম নাহয় কিছু সময় নিয়ে,সেটার ভুল বলে দিলাম।কথা হচ্ছে-দিনে ১০ জনকে দেখে দিতে গেলে অন্তত সেখানে ১/২ ঘন্টা এমনিই ব্যয় করতে হয়,যেটা এই ব্যাস্ত জীবনে প্রায় অসম্ভব।
-
উপরে আমি লিখেছি-পেজের সেটিং ঠিক করবেন,আপনার এড কন্টেন্ট ঠিক থাকলেও যদি সেটা ঠিক না থাকে,তাহলে সমস্যা হবে।এখন একটা পেজকে দেখতে মিনিমাম ১-২ ঘন্টা সময় চলে যায়,সব এনালাইসিস করতে।সেই সময়টা ফ্রীতে দেয়া সম্ভব না আমার পক্ষ্যে।
-
ভাইয়া এত টাকা তো নেই বিজনেসে,টাকা থাকলে সব সাপোর্ট নিতাম আপনার থেকে,তাদেরকে বলছি-আমি যখন শুরু করেছি,তখন কারো সাহায্য পাইনি এইজন্য আমি সব কন্টেন্ট আকারে লিখে দিই, ভিডিও আকারে আমার চ্যানেলে পোষ্ট করি।আপনারা পড়ুন,সেই অনুযায়ী চলেন।
-
সার্চ করে পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন,সার্চ করে না পড়লে আপনাকে কেউ গুলিয়ে খাইয়ে দিবেনা।
-
অনেকেই বলেন- খুঁজে পাচ্ছিনা,ভাই মন দিয়ে খোঁজেন।নিজের সর্বোচ্চ লেভেল দিয়ে চেষ্টা করুন,না পেলে আমাকে জানাবেন।
-
কেউ আপনাকে এতটা স্টেপ বাই স্টেপ বলে দিবেনা যতটা আমি এই গ্রুপে বলে দিই সব ফ্রীতে।এটা না নিতে পারলে সেই দ্বায় একান্তই আপনার।
এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে আপনার পেজ সুরক্ষিত থাকবে, আপনার বিজনেস ইনশাআল্লাহ দাঁড়িয়ে যাবে,আর সব মুনাফা আমার একাউন্টে আসবে (মজা নিলাম)। তবে, অবশ্যই চেষ্টা করবেন পেজের পাশাপাশি একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে, যেন পেজে সমস্যা হলেও একবারে ব্যবসা বন্ধ না হয়ে যায়।