প্রথম স্কুলে যাবার দিন ( ছোট গল্প)
গল্প টি পড়ে আমার ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করানো এবং প্রথম স্কুলে নিয়ে যাওয়ার কথা মনে পড়ে গেল।
অপুর মা যেমন করে ভেবেছে বাবা হিসেবে আমার ভাবনাও ছিল একই রকম।ভালো একটি স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করানো।
তবে আমার কাছে ভালো স্কুলের সংজ্ঞা টা আলাদা ছিলো আর আছে।
আমি খেয়াল করেছিলাম যশোরে যেহেতু থাকি তাই যশোরের লিডিং স্কুল গুলির দিকে।
তাসরীফ জন্মের পর থেকেই খোজ নিতাম আর তার মাঝেই এই স্কুলের নাম টা আসে।
পছন্দ হয় এই জন্য যে এখানে লেখাপড়ার চাপে পিষ্ট করার মানসিকতা নাই।
স্কুলের কোন রেজাল্ট নেই আর আমি যা যা চেয়েছি সব গুলি এখানে পেয়েছি।
বাচ্চা দের প্রাইভেট টিউটর রাখার নিয়ম নেই, প্রাত্যাহিক ও সাপ্তাহিক মনিটরিং হয় সব সময়।
৪ বছর ৮ মাসে এর ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলাম।
গল্পের চরিত্র অপুর সাথে আমার ছেলেরও কিছুটা মিল আছে। স্কুলের প্রথম দিনে অপু যেমন বুঝতে পারেনি ক্লাসের
অন্য বাচ্চাদের কান্নাকাটির কারন তেমনি আমার ছেলেও বুঝেনি। কিন্তু তাসরিফ প্রফুল্ল ছিলো, নতুন বই নতুন মানুষ আর নতুন বন্ধুদের পেয়ে।
কিন্তু বারবার বাবা কে খুজতে হচ্ছিলো।
অপু প্রথম দিনেই দুটো টিচারের ভালোবাসা পেয়েছিল তার মেধার কারনে।
আমার ছেলেটাও টিচারদের ভালোবাসা পেয়েছিল ক্লাসের স্মার্ট বয় হয়েছিলো আর খুব ইনটেলেকচুয়াল’ আচরনের জন্য।
তাসরীফ তুই শব্দ টার সাথে অপরিচিত ছিলো তাই ওর সামনে মারামারি বা চিল্লিয়ে কথা বলা তো দুরের কথা তুই বললেও ভয় পেতো আর উৎকন্ঠা নিয়ে তাকায়।
আর স্কুলের প্রথম দিনেই দুইটা বাচ্চার ধাক্কাধাক্কি দেখে ও ওর স্কুলের শিক্ষক কে ডেকে বলে বন্ধু (ওদের স্যার দের বন্ধু বলতে হয়) এখানে এমন কেন করছে?
তবে অপু তার আপন ইচ্ছে শক্তির প্রখরতায় লেখাপড়ায় ভালো ছিল।
গল্পে ভালো লেগেছে অপুর বড় খালার ভূমিকা। নিজ সন্তান কে মানুষ করতে না পারলেও সবচেয়ে কঠিন
সময়ে নিজের যতটা ছিল ততটা দিয়েই বোনের ছেলের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে তিনি যে অবদান রেখেছেন
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে। এমন সচরাচর দেখা যায় না।
অপুর মায়ের ইচ্ছেকেও খুব ভালো লেগেছে। তিনি নিজে কম শিক্ষিত হলেও ছেলের ভবিষ্যৎ যেন ভালো হয়
সেজন্য দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হলেও ভালো একটা স্কুলে ভর্তি করতে চেয়েছিলেন এবং করেছেন।সময়ের
হিসেবে এমন চাওয়ার প্রসংশা করা যেতেই পারে।
অপুর বাবার সততার চিত্র ও ভালো লেগেছে। দারিদ্র্যতা নষ্ট করতে পারেনি তার সততা।নতুন কাজের চাপের কারনে
স্কুলের প্রথম দিনে ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও যেতে পারেনি বাবা।
পুরো গল্পেই আছে বাস্তব চিত্র। আমার ছেলেকে স্কুলে দিয়ে এমন অনেককেই দেখেছি তারা কষ্টে থাকলেও বাচ্চাদের
ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে ভালো স্কুলে ভর্তি করেছেন সন্তান কে।
গল্প টি বাস্তবতায় ঘেরা।খুব ভালো লেগেছে। মন ছুঁয়েছে।