যখনই আপনার মাথায় একটি নতুন বিজনেস আইডিয়া আসবে, তার সাথে আরেকটা জিনিসও আসবে। যার নাম, সন্দেহ। যে কোনও নতুন কিছু করতে গেলে এই সন্দেহ জিনিসটা আসবেই।
ভালো একটি আইডিয়া পাওয়ার প্রাথমিক উত্তেজনা কেটে যাওয়ার পরপরই কেন এই আইডিয়াটা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, অথবা কি কি কারণে এটাতে আপনি ফেল করবেন – এইসব বিষয় মাথায় আসতে থাকে।
আপনি ধীরে ধীরে উপলব্ধি করতে থাকেন যে, কত বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সাথে আপনাকে প্রতিযোগীতা করতে হবে। আপনার মনে হতে থাকে, বিজনেস আইডিয়া নিয়ে মাঠে নামার সাথে সাথেই আপনার ছোট আইডিয়াটি বড় বড় ব্র্যান্ডের ভিড়ে হারিয়ে যাবে।এই সন্দেহ ধীরে ধীরে ‘ব্যর্থতার ভয়ে’ রূপ নেয় এবং শেষ পর্যন্ত ‘ব্যবসা শুরু করতে চাই’ – ব্যাপারটা মাথার মধ্যেই ‘ভ্যানিশ’ হয়ে যায়।
ওয়েব ভিত্তিক সফল একটি উদ্যোগ “Create & Go” এর সহ প্রতিষ্ঠাতা এ্যালেক্স নার্নি বলেন তাঁরও এক সময়ে এরকম হত। মাসে ১ লক্ষ ডলার (প্রায় ৮৫ লাখ টাকা) আয় করা এই ওয়েবসাইট ব্যবসায়ীর মাথায় এর আগেও বেশ ভালো ভালো আইডিয়া আসলেও সেগুলো কাজে লাগানো হয়নি।
সেই এ্যালেক্স ই বলেন, “কোনও আইডিয়াই খারাপ না। একটি নতুন ব্যবসা বাজারে নেমে ব্যর্থ হলে, সেটা যে কাজে লাগাতে পারছেনা – তার দোষ। আইডিয়ার এখানে কোনও দোষ নেই”
সমাধান: কাজের ক্ষেত্রকে ছোট করে আনুন
একটা সময় ছিল যখন ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপারটা ছিল নতুন। কিন্তু বর্তমানে প্রায় সবাই এই কাজ করছে। কিন্তু আপনার মাথায় যদি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে নতুন কোনও আইডিয়া আসে – তবে, ‘অনেক ফার্ম আমার পেছনে লাগবে’ বা ‘এই মার্কেটে প্রতিযোগীতা বেশি’ ভেবে পিছিয়ে যাওয়ার কোনও মানে হয় না।
একটি প্রচলিত ব্যবসার মাঝেও ইউনিক আইডিয়া নিয়ে আসা যায়। তাছাড়া বড় একটি কাজের ক্ষেত্রের ছোট একটি বিষয়ে অনেক বেশি ভালে হলে – সেটাও অনেক বাড়তি সুবিধা দেয়।
এই বিষয়ে এ্যালেক্স বলেন, “সার্ভিসের খুব ছোট একটা দিকে অনেক বেশি দক্ষ হয়ে, বা তার মাঝে নতুন কোনও আইডিয়া যোগ করার মাধ্যমে একটি পরিচিত সার্ভিসেও ইউনিক ফিচার নিয়ে আসা যায়। ফেসবুক মার্কেটিং অনেকেই পারে। এমন এজেন্সিও অনেক আছে। কিন্তু আপনি যদি শুধু ফেসবুক ভিডিও মার্কেটার ইসেবে নিজের ইউনিক পরিচয় গড়ে তোলেন – তবে ভিডিও মার্কেটিং ক্লায়েন্টরা অন্য এজেন্সি বাদ দিয়ে আপনার কাছেই আসবে”
থিংক এ্যান্ড গ্রো রিচ বইয়ের প্রধান একটি শিক্ষা হল, বড় ব্যাপারের সব অংশের বিষয়ে একটু একটু না জেনে, একটি ছোট্ট অংশের বিষয়ে সবকিছু জানা অনেক বেশি লাভজনক। এই ক্ষেত্রেও তাই। পুরো গাড়ি না বানিয়ে যদি গাড়ির একটি ছোট যন্ত্রাংশ আপনি সবার চেয়ে ভালো বানাতে পারেন – তবে আপনার কাছেই লোকেরা সেটার জন্য আসবে।
আমি ও ভাবি এই বাক্তির মতই যে, “আমার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী আমি নিজে। আমি অন্যদের দিকে তাকাই না। তাদের প্রতিযোগীতায় হারানোরও চেষ্টা করি না। আমি সব সময়ে নিজেকে ইউনিক ও সেরা করে তোলার চেষ্টা করি”
এই ছোট্ট কাজ গুলি করলেই কিন্তু আপনি জয় করতে পারবেন নিজের ভিতরে থাকা এই মানসিক রোগ টিকে।