ভাবনা যখন এফ-কমার্সে পর্ব-১১

টপিক- বিজনেস কার্ড (পর্ব-০১)

অনেক বিজনেস কার্ড মানুষ একবার দেখে বাড়ি ফেরার আগেই ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দেয়। আপনাকেও প্রতিদিন অনেকে বিজনেস কার্ড দেয়, আপনি তার মধ্য থেকে কয়টি কার্ড সংরক্ষণে রাখেন? আজকে আপনাদের সাথে কিছু টিপস শেয়ার করবো যা আপনার কার্ডকে শুধু মাত্র একটি ফেলনা কাগজের টুকরোর মত হতে দেবে না। বরং, এটি চুম্বকের মত কানেকশন গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। আশা করি সময় দিয়ে পড়বেন ।

1. প্রথমে আসি বিজনেস কার্ড কি?

সহজ কথায় বিজনেস কার্ড হলো একটি কার্ড যা কোন কোম্পানি, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাক্তিরা তাদের ইনফরমেশন এবং তাদের কন্টাক্ট নাম্বর গুলো মানুষকে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করে থাকে ।

2. বিজনেস কার্ডের প্রয়োজনীয়তা:

বিজনেস কার্ড যেকোনো প্রফেশনাল মানুষের ধারক ও বাহক। একটি আকর্ষণীয় বিজনেস কার্ডের মাধ্যমে যে কেউ তার সার্কেল বা ক্লায়েন্টদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে সক্ষম হন।একটি প্রফেশনাল বিজনেস কার্ড শুধু আপনার তথ্যই অন্যদের কাছে তুলেই ধরে না, বরং পার্সনাল লেভেলে কারো সাথে পরিচিতিরও সুযোগ সৃষ্টি করে। এত সকল ডিজিটাল নেটওয়ার্কিং এর মাঝেও, ভিজিটিং কার্ডের গুরুত্ব অনন্য, কারণ এর মত হিউমেন ফ্যাক্টর ইউটিলাইজ করার সুযোগ অন্য কোন ডিজিটাল মাধ্যমে নেই। একটি প্রফেশনাল ভিজিটিং কার্ড আপনার ব্র্যান্ডের এক্সটেনশন হিসেবে কাজ করে, এটি একটি পাওয়ারফুল টুল যা আপনাকে অন্যদের কাছে মেমরেবল করে তুলতে সাহায্য করে।

* মানসম্পন্ন বিজনেস কার্ড তৈরিতে কি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

1. বিজনেস কার্ড তৈরির মূল উদ্দেশ্য নির্ধারণ

2. কার্ডের জন্য একটি উপযুক্ত লোগো নির্বাচন

3. ট্যাগলাইন নির্ধারণ

4. নাম ও জব টাইটেল

5. সেবার ধরন

6. কন্টাক্ট নাম্বার

7. সৃজনশীলতা

8. কার্ডের সঠিক মাপ নির্ধারণ

9. কালার মোড, রেজুলেশন

10. প্রফেশনাল মূল তথ্য উপস্থাপন

11. ওয়েব সাইটের ঠিকানা

12. খালী স্পেস

13. কাগজ নির্ধারণ

14. সঠিক ফন্ট নির্বাচন

15. প্রিন্ট

* কাকে দিয়ে বিজনেস কার্ড ডিজাইন করাবেন?

চলুন এবার মূল টপিক্স নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক। পোস্ট বড় হয়ে যাবে তাই সব টপিক্স নিয়ে আলোচনা সম্ভব নয় ।

* বিজনেস কার্ড কেমন হওয়া উচিত?

১। লোগো ও ট্যাগলাইন :

কি কি তথ্য কার্ডে লিখবেন তা ঠিক করার আগে দেখে নিন আপনার লোগো ও ট্যাগলাইন ঠিকমত দেয়া হয়েছে কিনা।একজন বাহক যেন কার্ডটি হাতে নেয়া মাত্রই পরিষ্কারভাবে আপনার ব্র্যান্ড ও পরিচিতি স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে, পরবর্তীতে আপনার লোগো বা নাম দেখলেই যেন সাথেসাথে আগে দেখা ব্র্যান্ডিং এর সাথে মিলিয়ে চিনে ফেলতে পারে।

২। নাম ও জব টাইটেল :

আপনাকে মানুষ যেই নামে চেনে, সেই নামই কার্ডে ব্যবহার করতে হবে, যে নামে আপনার পরিচয় মানুষ জানেনা, তা কার্ডে ব্যবহার করার দরকার নেই। আর এমন জব ডেসিগনেশন ব্যবহার করুন – যেটা দিয়ে আপনার ব্যবসায়, আপনার কাজ সম্পর্কে টাইটেলটি পড়েই ধারনা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে সেই কাজের জন্যই মানুষ আপনাকে কাজে নিতে চাইবে।

৩। কন্টাক্ট নাম্বার

যোগাযোগের অনেক উপায় আছে কিন্তু এতো উপায়ের মধ্যে কন্টাক্ট করার কোন উপায়গুলো কার্ডে দেবেন? এর উত্তর হচ্ছে, সব “ডাইরেক্ট উপায়গুলো”। বাজারী সাধারণ মেইল যেমন info@DomainName.com বা দেখতে গুরুত্বহীন কোন অ্যাড্রেস ব্যবহার করে কানেকশন নষ্ট করা একদমই উচিৎ নয়। বা ল্যান্ডফোনের জেনারেল লাইন, যেখান থেকে আপনাকে খুজে পেতে কয়েকটা এক্সটেনশন পার করতে হয়।বাড়ির নাম্বার দেয়া যাবে না। আপনার পার্সোনাল নাম্বার, ইমেইল অ্যাড্রেস, যেগুলো একমাত্র আপনিই ব্যবহার করে থাকেন তা দিবেন।

৪। সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল

আপনার কার্ডে সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলাও অ্যাড করুন কিন্তু সবগুলো নয়।একটা কি দুইটা প্রোফাইল দিলেই যথেষ্ট, যা থেকে সবাই আপনার কাজের সম্পর্কে একটি আইডিয়া পাবে। আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ না থাকা মানে হচ্ছে কাস্টমারের কাছে আপনার অস্তিত্ব না থাকা।তাই শুধু অ্যাকটিভ সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলো অ্যাড করুন।

৫। খালী স্পেস

মাঝেমধ্যে আমরা কিছু এমন কিছু কার্ড দেখি, যেগুলার মধ্যে ডিজাইন ও তথ্য একটাই ঘিঞ্জি অবস্থায় থাকে যে দেখে অসুস্থ অনুভব হয়। মনে রাখতে হবে যে কার্ডের পয়েন্টগুলো দিয়ে মানুষকে বিরক্ত করে ফেলা যাবেনা। ঘিঞ্জি কার্ড দেখে সবাই বিরক্ত হয়।

৬। সৃজনশীলতা

এটি প্র্যাকটিকেল ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত, যা দিয়ে সাধারণত সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। বোরিং ও প্রেজেনটেশন ভালো না হয় তাহলে এই কার্ডের মাধ্যমে কেউই আপনার সাথে সহজে যোগাযোগ করবে না, যত হাজার কার্ডই আপনি বিলান না কেন। তাই উপস্থাপনায় ক্রিয়েটিভিটি দিয়ে কার্ডের ডিজাইনে নিজেকে তুলে ধরতে হবে! ডিজাইনের মাধ্যমেই কিন্তু মানুষকে জানানো সম্ভব যে আপনি কি করেন, কার্ডের পদবী দেখতে হবে না।

৭। কাকে দিয়ে বিজনেস কার্ড ডিজাইন করাবেন

আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন জানেন, যদি কিছুটা ডিজাইন ক্রিয়েটিভিটি আপনার মাঝে থাকে তাহলে আপনি নিজেই করতে পারেন। আর যদি না জানেন একজন প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইনারের মাধ্যমে করাতে পারেন। একজন প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইনারই কালার কম্বিনেশনসহ সবকিছু ভালো করে করতে পারবে।

সবাইকে ধন্যবাদ সময় দিয়ে পডার জন্য। কোন টপিক্সের উপর যেকোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানেতে পারেন।

একটা কথা বলি শেষে- বিজনেস কার্ড সকল উদ্যোক্তার অটোমেটিক মার্কেটিং করে ফেলে।
এটা মাথায় রাখা উচিত।

সৌভিক
ফাউন্ডার এন্ড সি ই ও- আই সি টি কেয়ার/ ICT CARE

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *