পৃথিবীর প্রায় সব বড় বড় সফল মানুষ ও সেলফ ডেভেলপমেন্ট কোচ নিজেকে নিয়ে লেখার ব্যাপারে খুব বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।কাগজ কলম হাতে নিয়ে বসে চিন্তা করলে সেই চিন্তা সাধারণ চিন্তার চেয়ে অনেক বেশি গোছানো হয়। লেখার উদ্দেশ্যে মানুষ যখন চিন্তা করতে বসে – তখন সেই চিন্তা অনেক বেশি পরিস্কার হয়।
বিজ্ঞানের ভাষায় একে “সাইকো-নিউরো-মোটর-এ্যাক্টিভিটি” বলা হয়।যখনই আপনি হতাশ বোধ করবেন, বা মনে হবে, “নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি” তখনই নিজেকে নিয়ে চিন্তা করার আদর্শ সময়। কাগজ কলম নিয়ে বসুন, তারপর একপাশে লিখুন – কেন আপনি হতাশ।
পয়েন্ট আকারে লিখুন। কি কি কারণে আপনার মনে হচ্ছে যে আপনি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছেন।
– কোনও কাজ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন?
– কোনও কাছের মানুষ অপ্রত্যাশিত ব্যবহার করেছে?
– আপনার আশা অনুযায়ী পরিশ্রমের ফল পাননি?
– নাকি অন্যকিছু?
কারণ যেটাই হোক স্পষ্ট করে সময় নিয়ে চিন্তা করে লিখুন। লেখার পর হয়তো প্রথম বারের মত বুঝতে পারবেন – ঠিক কি কারণে আপনার এমনটা মনে হচ্ছে। অনেক সময়ে মনের ভেতরে খারাপ লাগার সঠিক কারণটা আমরা ধরতে পারি না। কিন্তু ব্যাপারটা নিয়ে গুছিয়ে চিন্তা করলে বেশিরভাগ সময়েই আসল কারণ ধরা যায়।
এরপর অন্য পাশে নিজের গুণ ও সম্ভাবনার কথা গুলো লিস্ট করুন। যত ছোট যোগ্যতাই হোক, যত ক্ষুদ্র গুণই হোক – সব লিখে ফেলুন। এরপর চিন্তা করুন এগুলো দিয়ে আপনি কি অর্জন করতে পারবেন?
সময় নিয়ে গুছিয়ে চিন্তা করলে আপনার এমন অনেক গুণ বা সম্ভাবনার কথা মাথায় আসবে – যা হয়তো আগে চিন্তাও করেননি। একজন মানুষ যদি নিজের গুণ আর সম্ভাবনাগুলোকে সঠিক ভাবে বুঝতে পারে – তবে তার চোখের সামনে অনেক নতুন অর্জনের দরজা খুলে যায়। অনেকেই এভাবে নিজের জীবনের সঠিক ও সবচেয়ে কার্যকর লক্ষ্য খুঁজে পেয়েছে।
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সফল উদ্যোক্তা ও পাবলিক স্পিকার গ্যারি ভেইনারচাক এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,
“তুমি যদি বেসবল ভালো না খেল, এবং সারাদিন খেতে পছন্দ করো – তাতে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। তোমাকে সবার মত হওয়ার দরকার নেই। হাইস্কুলে অন্যরা যত ভালো খেলোয়াড় হতে পারবে – তুমি হয়তো তাদের সবার চেয়ে বড় একজন শেফ বা খাবার ব্যবসায়ী হতে পারবে”।
আসলে মানুষ অনেক সময়ে সমাজের সাথে মিশতে গিয়ে, বা অন্যদের মত হতে গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। অন্যদের উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়ায় তার নিজের উদ্দেশ্য। ক্রিকেট খেলা বা বিসিএস ট্রেন্ড হলেই আপনাকে তা হতে হবে – এমন কোনও লেখা নেই। প্রতিটি মানুষের নিজস্ব যোগ্যতা আছে। রবীন্দ্রনাথ যদি পড়াশুনায় মন বসেনা বলে হতাশ হয়ে যেতেন, তাহলে তিনি অন্যের লেখা পড়ার বদলে নিজের লেখার গুণকে বিকশিত করতে পারতেন না। ’মেধাহীন’ টমাস আলভা এডিসন বা ‘গর্ধভ’ আলবার্ট আইনস্টাইনকে যারা এসব নামে ডাকতো – তাদের কথা কে মনে রেখেছে?
এই মানুষগুলো কোনও পরিস্থিতিতে হতাশ না হয়ে নিজের সত্যিকার যোগ্যতা খুঁজে বের করেছেন – এবং সেই যোগ্যতার বিকাশকে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বানিয়েছেন।
একজন মানুষ যদি ঠান্ডা মাথায় নিজের সত্যিকার যোগ্যতা আর সম্ভাবনাগুলো খুঁজে বের করতে পারে – তবে সে কখনওই নিজেকে হারাবে না। আর গুছিয়ে চিন্তা করলে মানুষ তার নিজের সম্ভাবনা খুঁজে পাবেই।
মোঃ সৌভিকুর রহমান
শিক্ষক (কম্পিউটার বিভাগ)
যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
আমার কাজ- লোগো ডিজাইন,ব্যানার ডিজাইন,বিজনেস কার্ড ডিজাইন,ফেসবুক পেজ ডেকোরেশন,ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন,পেজ প্রমোট ও বুষ্টিং,কন্টেন্ট রাইটিং,ভিডিও এডিটিং, সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট এবং প্রফেশনাল সিভি নিয়ে।
আমার পেজ- ICT CARE