মেয়েরা জন্মগতভাবেই মুল্যবান আর ছেলেদেরকে মুল্যবান হতে হয়।
এই লাইন দেখে জাজ না করে আসেন একটু ব্যাখাটা দেখি আর সেই সাথে কারো ব্যাপারে জাজমেন্টাল হবার আগে একটু ভেবে দেখি যে আসলেই কি আমরা সঠিকভাবে কাউকে জাজ করছি?
একটা মেয়ে যখন পৃথিবীর বুকে অয়া রাখে তখনই সে মুল্যবান হয়ে জন্ম নেয়।আল্লাহ পাক এমনভাবেই তো সৃষ্টি করেছেন সকল নারীকে।আর ইসলাম সেই মুল্য, সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে।
আমাদের সমাজেও এইটা খুব ভালোভাবে এটাবলিশড হয়ে আছে।
নাহ,আপনি যে দিক দিয়ে ভাবছেন আমি ঠিক সেই দিক দিয়ে বলছিনা।আল্লাহ পাক সবাইকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং নিজের মনের মত করেই সৃষ্টি করে দিয়েছেন।তাই কারো চেহারা ভালো বা খারাপ বলার কোন উপায় নেই।
এরপরেও আমি কেন বলছি মেয়েরা মুল্যবান?
একটা মেয়ে যদি এই সমাজে কারো দ্বায়িত্ব না নিয়েও থাকে,তাহলে তাকে নিয়ে কোন কথার সৃষ্টি হবেনা কিন্তু একটা ছেলের বেলাতে কি তাই?
একটা মেয়ে জন্মের পর থেকে সে যদি বিশ্বের সবচেয়ে পাওয়ারফুল নারীর মর্যাদাও পেয়ে থাকে,তবুও তার জন্য ডেটে যেয়ে বিল পে করা,সংসারের দ্বায়িত্ব নেওয়া কিংবা বাবা-মায়ের বা স্বামীর বা পার্টনারের দ্বায়িত্ব নেয়াটা বাধ্যতামূলক নয় কোন জায়গাতেই।
অথচ একটা পুরুষ জন্মের পর থেকে যত দিন যেতে থাকে তত তার ছেলে থেকে পুরুষ হয়ে ওঠার অভ্যাস তৈরি করতে হয়।নিজেকে মুল্যবান বানাতে হয়।ঠিক ততটাই মুল্যবান বানাতে হয়,যতটা দামি প্রোডাক্ট সে পেতে চাই।
খেয়াল করে দেখুন,আপনার ভাই হয়তো কখনোই তার বেড গোছাতোনা,তার কাপড় পরিষ্কার করতোনা।ঠিক একই কাজ আপনার স্বামী কিংবা বাবা কিংবা ছেলেও হয়তো করেনা বা করতোনা বা করছেনা।
অথচ এই ছেলেটিই যখন পুরুষ হতে থাকে,তখন তার সব সহ্য হয়ে যায় আর সে সব শিখে ফেলে।
আমার পার্সোনাল অবজারভেশন বলে- নারীরা হলো জুয়েলারি দোকানের অলংকারের মত।যেটা ছাড়া আসলে পরিবার,সংসার কিংবা কোন মানুষের জীবন পরিপূর্ণ নয়।
আর ঐ সাজিয়ে রাখা অলংকার পাবার জন্য এবং সেটাকে ধরে রাখার জন্য মুলত পুরুষরা নিজেদেরকে মুল্যবান বানাতে থাকে।
যার পকেটের ব্যাসার্ধ যত বড়,যোগ্যতার ব্যাসার্দগ যত বড় হয়,তত দামি অলংকার কিনে আনার ক্ষমতা তৈরি হয় একটা পুরুষের।
একটা উদাহরণ দিই- আমার ওয়ালে থাকা অনেকেই দেখি পোস্ট করেন,তাদেরকে অনেক ছেলেরা ফেসবুক ইনবক্সে ডিস্টার্ব করে।আমি দেখুন তাদেরকে পুরুষ বলিনাই,আমি বলেছি ছেলে।কারন কোন পুরুষের দ্বারা এটা সম্ভব না।
এখন এই আপুরা কিন্তু অনেক ম্যাসেজ ইগনোর করেন আবার ওনারা আমাকে ইনবক্স করেন।ওনারা আমার সাথে কথা বলেন,আমার সাথে কাজ করেন।
আমিতো এমন অনেক কে দেখেছি ও তাদের সাথে মিশেছি,যাদের কাছে যাবার মত অর্থনৈতিক যোগ্যতা আমার নেই কিন্তু যোগ্যতার কারনেই তারা আমার সাথে কাজ করেন।
তাহলে আমাকে কি করতে হয়েছে বলেন তো?
নিজেকে মুল্যবান বানাতে হয়েছে।
সেই তালিকা ছোট নয় নেহায়েত।খুব ছোট করে বলি-
১. আমি প্রতিদিন ১২-১৬ ঘন্টা কাজ করি।
২. কাজের বাইরে কখনোই কাউকে টেক্সট করিনাই।
৩. যেচে কারো সাথে কথা বলিনি বা বন্ধুত্ব করিনি।
৪. প্রতিদিন ২৫-৩৫ টা আর্টিকেল লিখছি দিনের পর দিন।
৫. সবার কাছে নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছি।
“আমাকে নিয়ে হয়তো অনেকেই বলেন,সৌভিক ভাই খুবই রুড।টাকা ছাড়া কথাও বলেন না।কিংবা নারীদের সাথে যেভাবে কথা বলা উচিত সেভাবে বলেনা।কথা বলতেই ভয় লাগে।”
অনেকেই এই কম্পলেইন দেন আমার আড়ালে।আবার আমার কিছু বড় বোন সেগুলা বলেন আমাকে যে ভাই একটু নমনীয় হয়ে বলেন/বলো/বল।
আসলে আমি মোটেও এমন না কিন্তু একটু ভাবেন তো, আমি যে সেক্টরে আর যাদের সাথে কাজ করি।এখানে ঠিক কিভাবে কথা বলা উচিত? কিভাবে চলা উচিত?
আমি যদি খুব বেশি এভেইলাবল হয়ে কাজ করতে চাইতাম,সবার সাথেই নিজে যেয়ে কথা বলতাম,তাহলে কি এতদিন ধরে,এইভাবে কাজ করে যাওয়া সম্ভব ছিলো?
যত অভিযোগ দেন না কেন,অন্তত কেউ বলতে পারবে না যে,সৌভিক ভাই কারো ক্ষতি করেছেন কিংবা কোন আর্থিক ক্ষতি ওনাকে দিয়ে হয়েছে।
এই যে বিশ্বাস আপনারা আমার উপরে রেখেছেন, এটা কিন্তু আমাকে অর্জন করে নিতে হয়েছে।আর এটাকেই আমি বলছি – মুল্যবান করে তোলা।
অনেক কে আক্ষেপ করতে দেখি- রান্না থেকে ছুটি নেই কিন্তু অফিসের তো ছুটি আছে।আচ্ছা একটু ভাবেন তো- আজকে আপনার ইচ্ছে নেই রান্না করার।আপনি বললেন,আজকে পারবোনা।আপনার পার্টনার কি তবু বলবে রান্না করতেই হবে,বাইরের খাবার খাবোনা?
বলেন না,বরং মানিয়ে নেন।আপনি কেন নিজে রান্না করেন?
কারন,আপনার প্রিয় মানুষ খাবেন তাই।
পুরুষ কিন্তু অফিশিয়াল দ্বায়িত্ব পালন করেনা শুধু।তারা সংসার সামলাতে আপনাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে।
একটা অফিস কে কি বলা যায়,আমি কাজ করবোনা আজকে।একদিন বলবেন নাহয় মেনে নিবে।বারবার বা প্রতিদিন বা সপ্তাহে বা মাসে একদিন বললেই কি মেনে নিবে?
বাড়িতে বসে বৃষ্টি উপভোগ করে স্ট্যাটাস দেন যখন, কিংবা শীতের সকালে চায়ের কাপে চুমুক দেবার ছবি যখন পোস্ট করেন।তখন কিন্তু আপনার ঐ ছবিকে মুল্যবান করে রাখার জন্যই তার বৃষ্টি,রোদ ও শীতকে উপেক্ষা করে কেউ কাজে নেমে পড়েছে।
বিছানায় যখন আপনি রেস্ট করেন,তখন একজন আপনাকে ঐ রেস্ট করার সুযোগ টুকু করে দিতে দিন রাত এক করে খেটে চলেছে।
সংসার জীবন বলেন আর পারিবারিক জীবন বলেন, সবটাই আসলে নারী-পুরুষের সংমিশ্রণে তৈরি হয়।
একজন নারী যদি সমাজের দৃষ্টিতে সুন্দরী হয়,তাহলে তার মুল্য কিভাবে নির্ধারিত হয় বলেন তো?
একটা পুরুষের পকেট আর চারিপাশের ইনকামের ব্যাসার্ধে।
হ্যাঁ, exceptional কেউ কেউ হয়তো আছেন,কিন্তু সে সংখ্যাটা আসলে কত % হবে?
১-৫% এর মধ্যে নিশ্চয়ই তাইনা?
Dear Brothers,
Don’t chase girls, chase your dream & everything else will come to your arms.
ছেলে হওয়াতে আপনার কোন ক্রেডিট নেই,আল্লাহ পাক নিজে বানিয়েছেন কিন্তু পুরুষ হতে পারলে সেই ক্রেডিট আপনার।
নারী হওয়াতেও ক্রেডিট নেই,কারন সেটা আল্লাহ পাক বানিয়েছেন।তবে কারো মানসিক শান্তির কারন হতে পারলে সেই ক্রেডিট আপনার।