ডিজাইনের যে কোনো শাখায় রিসার্চ বা গবেষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আর সেটা যদি হয় লোগো ডিজাইন তাহলে তো কোনো কথায় নেই। লোগো ডিজাইন করার আগে তাই কিছু গবেষণা করে নেয়া ভাল। গবেষণা আপনাকে সমস্যা বুঝতে সাহায্যে করে, যার ফলে আপনি ওই সমস্যা সমাধান করে ভালোভাবে একটি ডিজাইন প্রেজেন্ট করতে পারেন।
গবেষণা বলতে কোনো ডিজাইন করার আগে ভালোভাবে জেনে নেওয়া। একটা ভালো গবেষণা করা ডিজাইন ক্লায়েন্ট কি চায় তা সহজেই পূরণ করতে পারে। অন্যদিকে কম গবেষণা করা ডিজাইন বাতিল হওয়ার সম্ভাবণা থাকে। ক্লায়েন্টের কথায় আপনি শুধু আইডিয়া পেতে পারেন কিন্তু কিভাবে ডিজাইন করা যায়, কিভাবে ব্যবহার করা যায় এ-সব প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই গবেষণা করতে হবে। মানে লোগো ডিজাইন শুরু করার আগে কিছু বিষয় জেনে রাখতে হবে।
কেনো কোম্পানির নতুন লোগো প্রয়োজন?
যে কোন লোগো ডিজাইন শুরু করার আগে এটা জানা জরুরি যে কোম্পানি কেনো নতুন লোগো চাচ্ছে। যদি কোম্পানিটি নতুন হয়, তাহলে তো কোনো কথা নেই। কিন্তু লোগোটি যদি রি-ডিজাইন হয়, তাহলে পুরাই অন্য কাহিনী। লোগো পরিবর্তণ করার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। যেমন- মালিক পরিবর্তণ, যে তার নিজের মতো কিছু পরিবর্তণ চায়। অথবা নতুন প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস যা মার্কেটের সাথে পরিবর্তিত হয়েছে। এ-সব ভালোভাবে জানা উচিত লোগো ডিজাইন করতে যাওয়ার আগে।
কোম্পানি কি করে?
যদিও এটা খুবই সাধারণ প্রশ্ন, কিন্তু আপনাকে জানতে হবে কোম্পানি কি করে, কেন করে? কোম্পানির ইতিহাস বের করতে পারেন, কি কি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস দেয় সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন। কোম্পানির মূল্য বুঝতে হবে, তারা কাস্টোমারের কাছে কি ম্যাসেজ দেওয়ার চেষ্টা করছে, কাস্টোমারের অনুভূতি কি ঐ কোম্পানি নিয়ে? অনেক সময়, বলতে গেলে বেশিরভাগ সময়ই ডিজাইন কাস্টোমারকে প্রভাবিত করে।
টার্গেট কাস্টোমার কারা?
আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে আপনি যে কোম্পানির লোগো বানাচ্ছেন তার কাস্টোমার কারা। তাহলে আপনি এমনভাবে ডিজাইন করবেন যাতে লোগোটি কাস্টোমারকে আকর্ষণ করে। কিছু কোম্পানি হয়তো ভালোভাবেই বলে দিতে পারবে তাদের টার্গেট কারা। কিন্তু অনেক ছোট কোম্পানি হয়তো নির্দিষ্টভাবে বলতে পারবে না।
এ জন্য আপনাকে আদর্শ কাস্টোমার কারা হতে পারে জিজ্ঞেস করে নিতে হবে। কাস্টোমারের বয়স, লিঙ্গ, কি পরিমাণ আয় করে, তাদের লাইফস্টাইল, তারা কি চায় কিংবা ঐ কোম্পানি যে সার্ভিস দেয় সে সার্ভিসে তারা খুশি কিনা, এ-সব জানাও অনেকটা সাহায্য করে আপানাকে ক্রিয়েটিভ কিছু ডিজাইন করতে।
কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য কি?
একটা লোগো এমন হওয়া উচিত যেনো সময়ের সাথে মানিয়ে যেতে পার। তাই আপনি যে লোগো ডিজাইন করছেন সেটা যেনো পরে আরো ১০ বছর তারা ব্যবহার করতে পারে এমনভাবে করতে হবে। এজন্যে আপানাকে কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী কোনো পরিকল্পণা আছে কিনা জেনে নিতে হবে। যেমন- একটা কোম্পানি এখন একটা প্রোডাক্ট বা সার্ভিস দিচ্ছে, কিন্তু পরে তারা আরো বাড়াবে। তাই এসব বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে।
প্রতিযোগী কারা?
প্রতিযোগী কারা এটা জানা অত্যন্ত জরুরি। আপনি যে কোম্পানির লোগো করতে যাচ্ছেন তারা যে সার্ভিস দেয়, সেই সার্ভিস অনেক কোম্পানি হয়তো দিচ্ছে। তাই লোগো ডিজাইন করার আগে আপনার যদি জানা থাকে কারা প্রতিযোগী, তাহলে লোগো নকল বা একই রকম হোওয়ার সুযোগ কম থাকবে। এটা আপনি ক্লাইন্টের কাছে জেনে নিতে পারেন কিংবা নিজে গবেষণা করতে পারেন।
আপনার লক্ষ্য এমন এক লোগো ডিজাইন করা যেটি হবে সবার থেকে আলাদা। যারা প্রতিযোগী তাদের লোগো একবার দেখে নিলে কোনো সুযোগ থকেবে না আর নকল বা একই রকম হওয়ার।
গবেষণা একটি বড় হাতিয়ার, যা আপনাকে ভালো একজন ডিজাইনার এবং জ্ঞানী মানুষ হতে সাহায্যে করবে। তাই যে কোনো কাজের আগে আমাদের উচিত একটু গবেষণা করে, কি করতে যাচ্ছি একটু ভালোভাবে জেনে নেওয়া। বিশেষ করে যারা ডিজাইনের কাজ করি।
যারা ডিজাইন করছেন তারা অবশ্যই কাজ পাবার আশায় পারিশ্রমিক কমিয়ে ক্লায়েন্টের ক্ষতি করবেন না।আর যারা কাজ করাচ্ছেন তারা আপনাদের আজীবনের পুঁজি কে অদক্ষ মানুষের কাছে দিয়ে পস্তাবেন না।