একটা নিদৃষ্ট বয়সের পরে সকল প্রকার সম্পর্কই মুলত নির্ভর করে দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের উপরেই।এই ভাবনার পক্ষ্যে বিপক্ষ্যে আপনার অনেক মতামত থাকতে পারে,কিন্তু শুধুমাত্র মতামত দিতে হবে তাই দিচ্ছেন এমন বিবেচনা না করে যদি খুব গভীর থেকে চিন্তা করেন তাহলে এমন টাই আপনার ভাবনাজুড়ে আসার কথা।যদি নাও আসে তবুও আমার ভাবনা আমি লিখে রাখি আমার এই প্রোফাইলে।
এই যেমন ধরুন,
আমার বয়স ৩০,আমার বয়সী প্রায় সকল মানুষের একটা নতুন পরিবার থাকার কথা,জন্মগতভাবে পাওয়া পরিবারের বাইরেও একটি পরিবার তৈরি হয় যেটিকে অনেকেই নামে বললেও কাজে দেখায় না,শ্বশুর বাড়ি যার নাম।
আবার আমার নিজের একটা পরিবার-পরিজন তো জন্মগতভাবেই আছে।এর বাইরে আছে বন্ধু-বান্ধব সার্কেল,প্রফেশনাল সার্কেলসহ নানান রকমের সম্পর্কের সার্কেল।
এই বয়সে আসার পরেও কিন্তু আমাদের দিনটা ২৪ ঘন্টাতেই যায়,ঠিক যেমন আগে আমার অঢেল সময় ছিলো তখনো ২৪ ঘন্টায় একটা দিন হতো,ঠিক তেমন এখনো এই চাকুরী,দ্বায়িত্ববোধ এবং নতুন সম্পর্কের পাশাপাশি নানান কাজের চাপ থাকার পরেও কিন্তু সময়টা ২৪ ঘন্টাতেই আটকে আছে।
একবার ভাবুন-
আগে যেখানে আপনি চাইলেই ২/৩/৪/৫ ঘন্টা আড্ডা দিতে পারতেন,এখন নিশ্চয়ই সেটা সম্ভবনা।খুব লজিক্যালি সেটা সম্ভব নয়।কেননা আপনাকে বুঝতে হবে আপনি কাজ করলে আপনার পারিপার্শ্বিক সকল কিছু ঠিক থাকার একটা সম্ভাবনা তৈরি হবে (ঠিক থাকবেই এই গ্যারান্টি কিন্তু নেই)।আপনি সাফিসিয়েন্ট ইনকাম করতে পারলেই কেবল- বাবা,মা,স্ত্রী,সন্তান,আত্নীয়-স্বজন সকলের উপরে থাকা দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের চেষ্টা করতে পারবেন (যদিও পালন করতে পারবেন এমন বলা যায়না)।
এর বাইরেও দেখুন সত্যিকারের মানুষ হিসাবে আপনার-আমার সামাজিক একটা দ্বায়বদ্ধতা আছে।সেটাও পালন করা দরকার সকলের।
সবই তো ঠিক আছে তাহলে আবার সমস্যাটা কোথায়?
সমস্যা ঠিক না,কিছু বোঝার পার্থক্য তো মানুষ ভেদে থাকবেই সবখানে,এখানেও আছে এই আর কি,
আমার কাছে বন্ধুত্ব মানেই শুধু আড্ডাদেয়া আর অপজিট জেন্ডার নিয়ে কথা বলে সময় নষ্ট করা না,একটা বয়সের পরে যেটাতে আমরা এখন বিচরণ করি বা বলা যায় সাংসারিক জীবনে কিংবা প্রফেশনাল লাইফে,
বন্ধুত্ব হলো- একে অপরের উপরে দ্বায়িত্ব পালন করা আর পাশে থাকা নিজের সাধ্য মত।
একটা সময় অনেক আড্ডা দিতাম বলেই যে এখনো অনেক আড্ডা দিতে হবে ব্যাপারটা কিন্তু তেমন নয়,কারন ঐ যে সবদিক ভাবতে হবে।ভাবনার স্পেস বাড়লেও সময়টা সেই ২৪ ঘন্টাই আছে।
আমার সাথে যাদের কাজের সুত্রে পরিচয়,কাজ দিয়েই একসাথে বেঁধে রাখার ইচ্ছা আমার।এখানে আলাদা কোন জুজু নেই।কাজের জায়গায় কাজ,আর সম্পর্কের জায়গায় সম্পর্ক।এমনটাই হওয়া উচিত।
ক্লোজ সম্পর্ক বলতেই বা বুঝি কি?
আমার কাছে মনে হয়- আমার যে বন্ধুটা সবচেয়ে ক্লোজ আমার,কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন হলে সে সবার আগে আসবে আমার বাসায় (দাওয়াত এর কার্ড না দিলেও), সব কাজ করবে দ্বায়িত্ব নিয়ে আবার খাবার কম পড়লে একসাথে ভাগ করে খাবো কিংবা না খেয়ে থাকবো।ইদানিং কালে কিছু মানুষ ক্লোজ বলে দাবী করেই একটু বেশি ফায়দা নেবার জন্য,আমার কাছে মনে হয় এই ফায়দা নেবার জন্য আত্নার সম্পর্ক তৈরি হয়না।
আত্নার জিনিস হৃদয় দিয়ে অনুভুত হতে হয়।
আমি প্রায় সার্কেলছাড়া একটা মানুষ,কারন আমার সার্কেল খুব লিমিটেড।আমাদের ০৭/০৯ এর ১ লক্ষ মেম্বারের গ্রুপের সবাই আমার ফ্রেন্ড না,এইটাই স্বাভাবিক।সবাই ব্যাচমেট কিন্তু বন্ধু না।
যে সত্যিকারের সম্পর্কের মুল্যায়ন করতে জানে,সে কখনো আপনাকে নিয়ে বাজে মুল্যায়ন করবেনা,ভুল হলে আলাদা ডেকে আপনাকেই বোঝাবে কিন্তু জনসম্মুখে আপনার সুনাম করবে।
আমি খুব সাধারন মানুষ,আমার চিন্তাভাবনা গুলি নিয়ে আর আমার ছোট্ট সার্কেল নিয়ে আমি খুশি থাকি।খুব দ্রুত মানুষকে বিশ্বাস করি আবার আপন ও ভাবি।কাউকে ভালোবাসলে সবটা দিয়েই ভালোবাসি,আবার একবার কারো থেকে মন উঠিয়ে নিলে সেদিকটা আর পা মাড়াই না।
একটু ঘাড়ত্যাড়া টাইপের বলতে পারেন।এতে আমার আপত্তি নেই,কারন আমি জানি- আমিও ভুলের উর্ধে নয়,ভুল করতেই পারি তাইবলে অন্যায় মেনে নিইনা।
ভালো থাকুক সকল সম্পর্কগুলি,সকলেই ভালো থাকুক তাদের বিভিন্ন সম্পর্কের সার্কেল নিয়ে।
মোঃ সৌভিকুর রহমান
শিক্ষক (কম্পিউটার বিভাগ)
যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
আমার কাজ- লোগো ডিজাইন,ব্যানার ডিজাইন,বিজনেস কার্ড ডিজাইন,ফেসবুক পেজ ডেকোরেশন,ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন,পেজ প্রমোট ও বুষ্টিং,কন্টেন্ট রাইটিং,ভিডিও এডিটিং ও সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট নিয়ে।