নমনীয় হন তবে লক্ষ্য অর্জনে অটল থাকুন:
প্রত্যেক উদ্যোক্তা কেই সব সময় সব সময় চটপটে থাকতে হয়। নতুন তথ্যের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয় এবং সে অনুযায়ী পরিবর্তন আনতে হয়। আবার সেই সাথে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে থাকতে হয় সদা অটল। এখানেও বিবেক কাজে লাগে। প্রতিষ্ঠানিক কোন কোন পরিবর্তন আনলে তা লাভজনক হবে আবার কোন কোন পরিবর্তন আনলে প্রতিষ্ঠান ক্ষতির সম্মুখীন হবে তার জন্য বিবেকের কাছে প্রশ্ন করতে হবে।
যদি আপনি দৃঢ় চিত্তে বিশ্বাস করেন যে পরিবর্তন আনা উচিত তাহলে তা অবশ্যই করবেন। অন্যথায় আপনি এবং আপনার প্রতিষ্ঠান হতে পারেন ক্ষতির সম্মুখীন। অর্থাৎ যেই বিষয় গুলোতে নমনীয় হলে বাড়বে আপনার লক্ষ্য অর্জনের সম্ভাবনা, সেই বিষয়গুলোকে চিনতে পেরে নমনীয় হতে পারতে হবে।
টিম ওয়ার্কের উপর নির্ভর করতে শিখুন:
একজন মানুষ এর পক্ষে সকল বিষয়ে পারদর্শী হওয়া সম্ভব নয়। যে যেই কাজটি পারে না তার সে কাজটি করে দেয়ার জন্য সেই বিষয়ে দক্ষ অন্য একজন মানুষের সাহায্য প্রয়োজন হয়। উদ্যোক্তারা সাধারনত এতটাই আত্মবিশ্বাসী হয় যে তারা বিশ্বাসই করতে চায় না যে কোন কাজ তাদের দ্বারা সম্ভব না। এই ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে অনেক সময় লাগে। তবে উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হতে হলে যত দ্রুত সম্ভব বেরিয়ে আসতে হবে এই ভুল ধারণা থেকে।
প্রথমে যেটি করতে হবে তা হচ্ছে নিজের দক্ষতা এবং সামর্থ্য সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা অর্জন করতে হবে। তারপর যেসব বিষয় আপনার অন্যান্য দক্ষ মানুষের সাহায্য লাগবে সেই বিষয়গুলো খুঁজে বের করতে হবে। তারপর খুঁজে বের করতে হবে সেই বিষয়গুলোতে দক্ষ কিছু মানুষ। নিজের মত মানুষ খুঁজে পাওয়া সহজ, কিন্তু নিজের চেয়ে ব্যতিক্রম মানুষ যারা কিনা ভিন্ন বিষয়ে দক্ষ, তাদের খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন একটি কাজ। এই কঠিন কাজটি যদি আপনি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারেন তবে আপনি আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হওয়ার দিকে।
বাস্তবায়ন নিশ্চিত করুন:
আপনি যদি সাধারণ কেউ হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি এখন যে কাজটি করার কথা ভাবছেন সেই কাজটির আইডিয়া স্বাভাবিকভাবেই আরো অনেকের মাথায় আসার কথা। সফলতা অর্জনের জন্য যে চমকপ্রদ কোন আইডিয়া প্রয়োজন তা কিন্তু সব সময় সত্য নয়। অতি সাধারণ একটি আইডিয়ার খুব চমৎকার একটি বাস্তবায়ন এনে দিতে পারে অসাধারণ সাফল্য। খেলাধুলার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পরিকল্পনা দ্বারাই কিন্তু খেলা জেতা যায় না। খেলা জেতার জন্য প্রয়োজন মাঠে নেমে যখন যা প্রয়োজন তা করতে প্রস্তুত থাকা।
ব্যবসার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা প্রায় একই রকম। দেখা গেল যে আপনি আপনার স্টার্টআপের জন্য অনেক অনেক পরিকল্পনা করলেন, পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড বানিয়ে ভরিয়ে ফেললেন, কিন্তু এত এত পরিকল্পনার কোনো সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করলেন না। তাহলে কি লাভ হল এত কিছুর? কি করবেন এতো পরিকল্পনা দিয়ে?
সততা এবং ন্যায়পরায়ণতা প্রদর্শন করুন:
ভন্ডামি করে হয়তোবা সাময়িক সাফল্য অর্জন করা যায়। কিন্তু এই সাফল্য বেশিদিন বিদ্যমান থাকে না। আপনি দেখবেন যেসব প্রতিষ্ঠান তার গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করেছে সে সব প্রতিষ্ঠান সাময়িক ভাবে বেশ লাভবান হলেও তাদের পতনও খুব দ্রুত ঘটেছে। দীর্ঘস্থায়ী সাফল্যের জন্য যে দুটি গুণ প্রয়োজন তা হচ্ছে সততা এবং ন্যায়পরায়ণতা।
আপনার কর্মকাণ্ডে এই দু’টি কোন প্রকাশ পাচ্ছে কিনা তা যাচাই করুন আপনার বিবেককে প্রশ্ন করার মাধ্যমে। এ দুটি গুণ কোন যদি আপনার মাঝে থাকে এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কর্মকাণ্ড গুলো যদি আপনি সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পারেন তবে সফলতা আপনার থেকে খুব বেশি দূরে নেই।
প্রতিদান দিতে শিখুন:
এই অংশটি ভুলে গেলে চলবে না। যখন আপনার কর্মকাণ্ডে এই ব্যাপারটি ফুটে উঠবে তখনই কেবল মাত্র আপনি নিজেকে সফল হিসেবে বিবেচনা করতে পারবেন। আপনি যখন সফলতার দ্বারপ্রান্তে থাকবেন তখন খেয়াল করে দেখবেন অনেক মানুষ আপনার এই সফলতার পিছনে অবদান রেখেছে। আমরা অনেক সময়ই আমাদের সফলতার পিছনে যাদের অবদান রয়েছে তাদের সবাইকে এর প্রতিদান দিতে পারি না। কারণ অধিকাংশ সময় তাদের সবাইকে আমরা চিনতেই পারি না।
তাদের অনেকেই নীরবে সংগোপনে আমাদের সাহায্য করে গিয়েছেন। তাই তাদের এই অবদানের প্রতিদান হিসেবে যখন যাকে পারবেন তাকেই সাহায্য করবেন। যখন আপনি সফল হবেন তখন সমাজের প্রতি আপনার একটি দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এই দায়বদ্ধতা থেকে আপনি আপনার সাধ্যের মধ্যে মানুষকে যতোটুকু সাহায্য করতে পারবেন তার মাধ্যমেই আপনার প্রকৃত সফলতা বিচার করা যাবে।