সময় যেখানে সবার আগে প্রাধান্য পাবে,সফলতা সেখানেই নিহিত

আজ থেকে ঠিক ৫০ বছর আগে ১৯৭১ সালেই আমরা (বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত) একসাথে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম।সেই দুইটি দেশের কিছু উন্নয়ন ও উন্নতির পার্থক্য একটু অনুধাবন করার চেষ্টা করি।
মরুভূমি অধ্যুষিত একটি দেশে যেখানে সারা বিশ্বের পর্যটক ও বিনিয়োগকারীরা আসতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। পক্ষান্তরে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক নৈসর্গিক লীলাভূমি বাংলাদেশ, অথচ এখানে কেন বিদেশিদের আকৃষ্ট করতে পারেনা?
আসুন, একটু বিস্তারিত জেনে নেই তফাৎটা কোথায়?
বিদেশিদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস হচ্ছে সময়। এইদেশে কাজ করতে গেলে প্রথমে বিডা, RJSC , আমদানি রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, কাস্টম, ভ্যাট, ট্যাক্স অফিসে যেতে হবে।
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাগজপত্র ও রেসিডেন্স ভিসা প্রসেসিং করতে সময় লাগে প্রায় একমাস। পাশাপাশি সরকারি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অপেশাদার সুলভ আচরণ, সিঁড়ি এবং লিফটে পানের পিক ও থুথুর দাগ, টয়লেটে তো যাওয়াই যায়না- চরম দুর্গন্ধ, না আছে হ্যান্ড শাওয়ার, হ্যান্ডওয়াশ লিকুইড ও টিস্যু পেপার। ঠান্ডা কিংবা গরম চা, কফি বা পানির কোন ব্যবস্থা নেই।
একইসাথে বিদেশী শুনলেই যেন জিহবা লক-লকিয়ে ওঠে পকেট গরম করতে কত ঘুষ নেয়া যাবে সেটার চিন্তায়,এসব দেখে একজন মানুষ এখানে কিভাবে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে,ভেবে দেখেন।
এছাড়া ঘুষ, দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, সিন্ডিকেট, দাঙ্গা-হাঙ্গামা তো আছেই। কর্মকর্তা কর্মচারীদের নেই কোন ড্রেস কোড। ভাঙ্গা রাস্তা আর সীমাহীন যানজট তো আছেই ফ্রী।
গত কয়েক বছরে আপনি যদি, দুবাইতে একটু চোখ বুলিয়ে নেন তাহলে দেখবেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিনিয়োগকারীদের বিজনেস লাইসেন্স, ভিসা এমিরেটস আইডি ও ব্যাংক একাউন্ট করতে গেলেই তারা বুঝে যাচ্ছে এখানে প্রফেশনালিজম কেমন।
এখানে সরকারি অফিস গুলো অত্যন্ত সুন্দর ও পরিপাটি। পুরুষরা অফিসিয়াল ড্রেস হিসেবে জুব্বা এবং মহিলারা আবায়া বা বোরখা পরিধান করে থাকেন।
কাস্টমার কেয়ারে যারা থাকেন তারা অত্যন্ত ইয়াং ও দক্ষ, সুশ্রী, স্মার্ট, বিনয়ী এক কথায় ১০০% প্রফেশনাল হয়ে থাকেন। তারপরও সব অফিসারের পেছনে থাকে সিসিটিভি যাতে অফিশিয়াল কাজের বাইরে অন্য কোন কাজে সময় নষ্ট না করেন।
অফিসের টিম লিডার সব সময় মনিটর করেন কোন কাস্টমার কোথায় কোন প্রবলেম ফেস করছেন কিনা
যেটা সবার জন্য জরুরী তা হচ্ছে-
পাবলিক টয়লেট থেকে রেস্টরুম, যেখানেই যাবেন আপনি সেখানেই পাবেন প্রফেশনালিজমের ছোঁয়া। সেখানে গেলে আপনি এয়ার ফ্রেশনার, এসি, হ্যান্ডওয়াশ লিকুইড, একেবারে পরিষ্কার ও শুকনা টয়লেট, হ্যান্ড শাওয়ার, টিস্যু পেপার পাবেন। চা-কফি এবং ঠান্ডা ও গরম পানির ব্যবস্থা তো আছেই।
পাশাপাশি পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা মসজিদ ও রেস্ট নেওয়ার জায়গা আছে। প্রেগন্যান্ট মহিলারা, ফিজিক্যালি ডিজেবল ও সিনিয়র সিটিজেনরা আলাদা প্রিভিলেজ পেয়ে থাকেন সর্বক্ষেত্রে।
বাচ্চাদের জন্য আছে খেলার রুম। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিনা ঘুষে ১০০% মালিকানায় কোম্পানির লাইসেন্স, দুবাই চেম্বার অব কমার্সের মেম্বারশিপ, মেমোরেন্ডাম পাবেন পাক্কা এক ঘন্টায়। তিন দিনের মাথায় মিলবে রেসিডেন্টস ভিসা, এমিরেটস আইডি পেতে লাগবে মাত্র ৫ দিন।
এখানে রাস্তাঘাটে জোড়াতালি কিংবা কোন রকমের গর্ত খুঁজে পাবেন না।
গাড়ি তো পানির দরে পাওয়া যায়। অন্যান্য সুযোগ সুবিধা তো আছেই।
এই কন্টেন্ট থেকে কি বুঝলেন সেটিই লিখবেন।

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *