হারানো শক্তিকে আবার ফিরিয়ে আনুন
এই বিষয়ে পর্যবেক্ষন হলো, বেশিরভাগ মানুষই সাধারনত দুপুর ২টা থেকে ৩টার ভেতরে তাদের শক্তির একটি বড় অংশ খরচ করে ফেলে। তাই তারা দিন শেষ হওয়ার আগেই এনার্জি হারিয়ে ক্লান্ত হয়ে যায়।
কিন্তু কিছু অসাধারন মানুষ অনেক বেশি সময় ধরে তাঁদের শক্তি ধরে রাখতে পারেন।গবেষণায় দেখা যায়, বেশিরভাগ মানুষ আসলে একই দিনে কোনও ব্রেক ছাড়াই নানান ধরনের চিন্তা ও কাজের মাঝ দিয়ে যেতে যেতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
অন্যদিকে হাই পারফর্মাররা এক কাজ থেকে আরেক কাজে যাওয়ার মাঝে ছোট ছোট ব্রেক নেন যা তাঁদের পরবর্তী কাজের জন্য আবার আগের মত শক্তিশালী করে তোলে।
অনেকেই দুই কাজের মধ্যবর্তী সময়ে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ ধ্যান করে। এটি তাদের বিশ্রাম ও স্বস্তি দেয় এবং ঠান্ডা মাথায় তাঁদের পরবর্তী কাজ নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ দেয়। এর ফলে পরের কাজের জন্য এক নতুন উদ্যম সৃষ্টি হয়।
হাই পারফর্মারা সারাদিন এই ছোট ছোট বিরতির মধ্যদিয়ে নিজেদেরকে ‘রিচার্জ’ করে নেন এবং শক্তি হারানোর বদলে নতুন করে শক্তি অর্জন করেন।
আপনি যদি সারাদিন চাঙ্গা থেকে আরও বেশি পরিমানে কাজ করতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনার শরীর ও মস্তিষ্ককে মাঝে মাঝে কিছুটা বিশ্রাম দিতে হবে।
কাজের মাঝেও অন্তত ৪০ মিনিট থেকে ১ঘন্টা আপনার শরীর ও মস্তিষ্ককে সবধরনের চাপ থেকে মুক্ত রাখুন। এটি খুবই জরুরী একটি বিষয়, তাই আপনার দৈনিক কাজের রুটিনে এই বিষয়টিও গুরুত্ব দিন।
আমরা সবাই জানি স্বাস্থ্যই সম্পদ। আপনাকে কর্ম জীবনে সফল হতে গেলে অবশ্যই পুরো মাত্রায় সুস্থ থাকতে হবে। বড় সাফল্য পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে পুরোপুরি এ্যাকটিভ থাকতে হবে।
আপনি নিশ্চই কাঠুরে ও কুড়ালের গল্পটি শুনেছেন? শুনে থাকলে আরেকবার শুনুন, আর না শোনা থাকলে শুনুন এবং মনে রাখুন।
একজন খুবই দক্ষ ও পরিশ্রমী কাঠুরে প্রচুর কাঠ কাটতে পারত। কাঠ কেটে বিক্রি করে তার দিন ভালই যাচ্ছিল। কিন্তু এই কাজের মাঝে সে একটি বড় ভুল করছিল। সে কাঠ কাটতো ঠিকই, কিন্তু কখনওই তার কুড়ালের অবস্থার দিকে নজর দিতোনা। কাঠ কাটতে কাটতে কুড়ালটির ধার ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছিল কিন্তু কাঠুরে কুড়াল ধার দেয়ার বদলে আরও জোরের সাথে কাঠ কাটতে শুরু করল।
কুড়ালের ধারের বদলে তার সমস্ত মনযোগ ছিল কাজের ফলাফল, মানে কাঠের দিকে। কিন্তু কুড়ালের ধার কমে যাওয়ার সাথে সাথে কাঠুরের কাঠের পরিমানও দিনে দিনে কমে যেতে লাগল এবং এক পর্যায়ে কুড়ালটির এমন অবস্থা হল যে তা দিয়ে কাঠ কাটা অসম্ভব হয়ে গেল।
আপনার শরীর আর মস্তিষ্কও সেই কাঠুরের কুড়ালের মত। আপনি যদি ঠিকমত এর যত্ন না করেন তাহলে আপনিও ধীরে ধীরে কাজের এনার্জি পুরোপুরি হারিয়ে ফেলবেন।
আপনি যদি আপনার স্বাস্থ্যের দিকে নজর না দিয়ে শুধু কাজের দিকে এবং কাজের ফলাফলের দিকে নজর দেন, তাহলে আপনার কাজ করার শক্তি দিন দিন কমতেই থাকবে।
সাধারন মানুষ সাধারনত এই ব্যাপারটি ভুলে গিয়ে কাজ করে চলে এবং ধীরে ধীরে নিজেদের কর্মক্ষমতা শেষ করে ফেলে।
আপনি ছোট প্রজেক্ট করুন, বা বড় প্রজেক্ট, ঠিকমত নিজের যত্ন না নিলে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য। হাই পারফর্মাররা তাই নিয়মিত নিজের শরীরের যত্ন নেন।