স্বপ্ন পুরণের জন্য বাঁধা

আমরা সারাদিনেই আমাদের বিভিন্ন না থাকা নিয়ে আক্ষেপ করি, যেমন আমিও ভাবছি- ঈদের আগে আমার যেসকল টার্গেট ছিলো, সেগুলি ফিলাপ করা হলোনা মনেহয়।
এমনিতেই আমি প্রতিটি ইভেন্ট (অফিস ক্লোজ বা আমি অফিস না করতে পারলে) এর আগে কিছু কাজের টার্গেট করে রাখি,যেগুলি শেষ করে যাবো ছুটিতে এমন।
কিন্তু কলেজের প্রেসারে অফিসে টাইম দিতে না পারাই একপ্রকার হাল ছেড়ে দেয়া যে, মনে হয়না সব করতে পারবো।এমন সময়ে গতকাল আমার সাথে ভাইভা দিতে এসে এই মেয়েটির দেখা হয়।
ওর নাম সুমাইয়া, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর ৩য় বর্ষের ছাত্রী।ও প্রথম আমার নজরে পড়েছিলো থিওরি পরীক্ষার দিনে।দেখলাম একটা মেয়ে স্ক্র্যাচে ভর দিয়ে পরীক্ষা দিতে আসছে।কিছু জিজ্ঞাস করিনি,আজ যখন ভাইভা বোর্ডে পেলাম ওকে,তখন আমি কোন প্রশ্ন করিনি।
জিজ্ঞাস করলাম, কিভাবে এক্সিডেন্ট হল?
স্যার, আজ থেকে ১৬ বছর আগে এমন হয়েছে।সেই থেকে এভাবেই আমি চলি।
এই তথ্যের চেয়েও বেশি অবাক হলাম এটা জেনে যে- ওর বাবা নেই।ঐ একমাত্র সন্তান।ও আর ওর আম্মা অনেক কষ্টেই ওদের সংসার চালিয়ে লেখাপড়া করছে।
স্বপ্নটাও খুব বড় না, ও শুধু একটা চাকুরী করতে চাই,যেটা দিয়ে ওদের দুইবেলা খাবারের চিন্তাটা করতে হবেনা এমন।ছবিটা রেখেছি এইজন্যই যেন ভবিষ্যতে ওর জন্য কিছু করতে পারি।
এক সেমিষ্টার বাদেই ওদের ইন্টার্নশিপ, আমি ভেবেছি ওকে আমার অফিসে এনে কাজ শেখাবো,আর সকলের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে হলেও একটা ল্যাপটপ কিনে দিব। একটা ভালো ও সিকিউর অফিসে যেন কাজ করতে পারে সেটার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
ও যদি একটা পা না থাকার পরেও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারে এইভাবে,তবে আমি কেন ঈদের আগের পেন্ডিং কাজ শেষ করতে পারবোনা?
কনফিডেন্স বলেন আর প্রেরণা বলেন, দুইটাই সুমাইয়া জুগিয়েছে।
আসুন আমরা অজুহাত না বের করে, যা আছে তাই নিয়েই কাজ করি।

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *