যদি নিজের মাঝে থাকা যেকোন অভ্যাস বদল করার জন্য প্রথমেই বিশাল এক টার্গেট নেন, তাহলে আপনার ইচ্ছাশক্তিও কাজ করবে না। আপনি বডি বিল্ডিং করতে গিয়ে প্রথম দিনেই যদি ১০০ টি পুশ আপ (বুকডাউন) দেয়ার টার্গেট নেন, তাহলে সেটি করাটা কষ্টকর। অথবা মেডিটেশান অর্থাৎ ধ্যান করতে গিয়ে প্রথম দিনেই যদি ৩০ মিনিট ধ্যান করার টার্গেট নেন তাহলে সেটি করতে পারার সম্ভাবনাও অনেক কম।
প্রথম দিনেই যখন লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন না, তখন আপনার আত্মবিশ্বাস টলে যাবে – কন্টিনিউ করার আগ্রহও হারিয়ে ফেলবেন। তাহলে উপায়?
এইসব সমস্যার সেরা সমাধানটি হচ্ছে “ছোট অভ্যাস” (mini habits) – আপনি যে কোনও নতুন অভ্যাস সহজে করতে চাইলে, অথবা বাজে অভ্যাস দূর করতে চাইলে, প্রথমেই একটি মিনি হ্যাবিট অর্থাৎ ছোট অভ্যাস শুরু করুন। নিজের ইচ্ছাশক্তিকে ছোট ছোট করে কাজে লাগান।
ধরুন, আপনার লক্ষ্য প্রতিদিন এক ঘন্টা দৌড়ানো, তাহলে শুরুটা করুন ৫ থেকে ১০ মিনিট দিয়ে। কারণ পাঁচ-দশ মিনিট দৌড়ানোর জন্য খুবই কম ইচ্ছাশক্তি লাগে। এটি আপনার কাছে তেমন কঠিন মনে হবে না। আবার ধরুন আপনার টার্গেট প্রতিদিন ১০০টি পুশ আপ দেয়া। তাহলে প্রথম দিন ৫টি দিয়ে শুরু করুন! মাত্র ১০ সেকেন্ড এর ব্যাপার।
আপনি যদি চান, প্রতিদিন আধা ঘন্টা করে মেডিটেশন করবেন – প্রথম দিন মাত্র ১ মিনিট করলেই চলবে। কয়েক দিন পর এটা একাই বেড়ে যাবে। কিন্তু আপনি দ্বিতীয় দিনেই ১ মিনিট থেকে ১ ঘন্টায় চলে যাবেন না। ধীরে ধীরে সময় ও পরিমান বাড়ান।
১ মিনিট থেকে ২ মিনিট, সেখান থেকে ৩ মিনিট – এভাবে বাড়াতে থাকুন। পুশ আপ ৫ থেকে এক লাফে ২০ করবেন না – পাঁচ থেকে ছয়, সাত, আট … এভাবে বাড়াতে থাকুন।
যদি ভোর ৫টায় উঠতে চান, তাহলে প্রথমেই অত ভোরে ওঠার চেষ্টা করবেন না। ভালো হয় ৭টা থেকে শুরু করলে। কয়েকদিন পর আরও ১৫ মিনিট আগে ওঠার চেষ্টা করুন। কয়দিন পরপর ১৫ মিনিট করে সময় কমিয়ে আনুন। আশা করা যায় এক-দেড় মাসের মধ্যেই ভোর ৫টায় ওঠার অভ্যাস হয়ে যাবে।
একবারে করতে গেলে অল্প দিনেই সেটি আপনার কাছে বোঝা মনে হবে। কাজেই একবারে করার চেষ্টার চেয়ে ধীরে ধীরে অভ্যাসটা স্থায়ী করে নেয়াই ভালো।
মিনি হ্যাবিটগুলো অনুশীলন করার মাধ্যমে এগুলো ধীরে ধীরে আপনার রেগুলার অভ্যাসে পরিনত হবে, তাই কাজগুলোও অনেক সহজে করতে পারবেন।
নিয়ম এভাবে সেট না করলেই তো হয়ে যাবে সব হ য ব র ল, আর তোইরি হবে বাজে অভ্যাস।