অপরাজিত উপন্যাসের শেষাংশ ( ২২৩৫ শব্দ)
একটা কঠিন উপন্যাস (যখন আমি শরতচন্দ্রের বই প্রথম পড়েছিলাম তখনো এমন মনে হয়েছিলো) অথচ পড়তে এতো ভালো লাগলো কিছক্ষন সময় নিলাম লিখতে।
অপু যে প্রকৃতির বর্ণনা দিয়েছে নিজেকে যেন হারিয়ে ফেলেছিলাম তারই মাঝে।
বহু বছর পর ছেলেকে নিয়ে অপুর গ্রামে ফেরা।শৈশবের রানুদির সাথে অপুর গল্প করতে বেশ ভালো লাগে।নিজের পরিচিত পরিবেশ ফিরে পায় অপরিচিত পরিবেশেও।শৈশবে বাবা মা বোন নিয়ে তার ছেলেবেলায় ফিরে যায় গল্পে গল্পে।রানুনি অপুর বোন দর্গার কথা মনে আছে কিনা জানতে চাইলে বলে ঠিক মনে নেই আবছা একটা চেহারা মনে আসে।
মৃত্যু বোধহয় এমনই সময়ের ব্যবধানে তাকে ভুলিয়ে দেয়।
আপন মানুষের শোক এ কারনেই হয়তো ভুলে থাকা যায়।
তবুও অপু নিজেকে হারিয়ে খুঁজে। প্রকৃতির কাছে গিয়ে কত কিছু তার মনে ভীর করে।অপুর মনে হয় – যে বিশ্বের সে একজন নাগরিক তা ক্ষুদ্র,দীন বিশ্ব নয়।লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ যার গননার মাপকাঠি দিকে দিকে অন্ধকারে ডুবিয়া ডুবিয়া নক্ষত্রপুন্ঞ্জ,নীহারিকাদের দেশ, অদৃশ্য ঈথারের বিশ্ব যেখানে মানুষের চিন্তাতিত,কল্পনাতীত দূরত্ব ক্রমবর্ধমান পরিধি পানে বিস্তৃত সেই বিশ্বে সে জন্মিয়াছে।
অপু কল্পনার রাজ্যে কোথায় কোথায় চলে যায়।নদীর কাছে গিয়ে প্রকৃতির সংস্পর্শে অপুর ভবঘুরে মন দূর থেকে দূরে হারিয়ে যায়।দেবী র কাছে বর চায় তার দশ বছরের দূরন্ত শৈশব আর একবার যেন তাকে ফিয়েয়ে দেয়।
নির্জনে বসলেই অপুর মনে হয় এই পৃথিবীর একটা আধ্যাত্মিক রপ আছে।এ আমাদের দর্শন ও শ্রাবনগাহ্য জিনিসে গড়া হইলেও আমাদের সম্পূর্ণ অজ্ঞাত ও ঘোর রহস্যময়।
গ্রামে গিয়ে প্রকৃতি মাঝে যে সৌন্দর্য অপু দেখে তার শহরের সাহেব বন্ধুর কথা মনে পরে ভারত বর্ষের একটা সুন্দর রুপ আছে অতি পরিচয়ের দোষে সে দেখার চোখ ফোটেনি তোমাদের।
অপুর ছেলেবেলার কথা মনে পরে, সাইবাবলার ছায়ায় বসে সে মাছ ধরতো।আরও কত কত স্মৃতি।
অপু বিশ্বের বিশালতায় হারাতে চায়, ছেলেকে ভুলিয়ে, শৈশবের রানুদিকে ভরসা মনে করে তার কাছেই ছেলেকে রেখে যায়। ছেলের চিন্তা করে ওকে সব জায়গায় নিজে আনন্দে যেন ছুটে বেড়াতে পারে তাকে যেন আটকে না রাখা হয় সব বুঝিয়ে দিয়ে যায় রানুদি কে।ও চায় কষ্ট পেয়েই বড় হোক ছেলে। তার জন্য একটা সোনার কৌটু রেখে যায় অপু যদি না ফিরতে পারে তাহলে ছেলে যদি বড় হয় বেঁচে থাকে তর বৌমাকে সিঁদুর রাখার জন্য কৌটা বনের এক জায়গায় পু্ঁতে রেখে যায় রানুদিকে দেখিয়ে।
কাজল বাবার কথা প্রায় ই জানতে চায়। সে আপন মনে ঘুরে বেড়ায় জঙ্গলে। পাখি ধরে বাবা তাকে শিখিয়েছিল কোথায় পাখির বাচ্চা পাওয়া যায়।এক সময় দিন যত গড়ায় কাজল বাবার ফেরার আশা হারিয়ে ফেলতে থাকে।পিসিকে তার ভয় ছিলনা বাবা,দিদির পর এই পিসিই তাকে এতো ভালোবাসে যে পিসিকে তার আপন মনে হয়।রানুরও কাজলের চেহারায় ছোট বেলার অপুকেই খুঁজে পায়।
চব্বিশ বছর পর অপু ফিরে আসে তার গ্রামে নিশ্চিন্দিপুর।
চমৎকার একটা উপন্যাস পড়লাম। স্যার কে ধন্যবাদ। দশ মিনিট রাইটিং পোস্ট লিখতে গিয়ে কত কিছুর সাথে পরিচয় ঘটছে আবার নতুন করে।পড়ার মাঝে যে আনন্দ তা হয়তো অন্য কিছুতেই নেই।সময় কেটে গেল কোন দিক দিয়ে বুঝতেই পারিনি।
আমার নিজের ও অবস্থা এমন যে ৫ঃ৫০ থেকে ৭ঃ৫০ বেজে গেলো বুঝিই নাই।