আরো একটি চাকুরীর ভাইভা দিয়ে নিজেকে যখন আর চাকুরীর জন্য প্রস্তুত করবেনা বলে সিধান্ত নিয়েছে শৈবাল,ঠিক ঐ মুহুর্তেই হৃদিকে পড়াতে,তাদেরই বাড়িতে ঢুকছে।
আজ বেল বাজাতেই গেট খুলে দিলো অদ্রি (হৃদির ছোটবোন)। পড়া্নোর জন্য ভিতরে ঢুকতে যাবে শৈবাল,এমন সময়েই অদ্রি জানালো- ভাইয়া,আম্মু আপুর জন্য নতুন টিচার নিয়েছে,ছেলেটা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে।
ফ্যাকাশে মুখ নিয়ে কিছুটা নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো শৈবাল,অদ্রির ডাক্তেই সম্বিত ফিরে পেয়ে পা বাড়াতে চাইলো বাইরের দিকে,এমন সময়ে হৃদি এসে বললো- আপনার জন্য আম্মু খাম রেখে গেছে,ভিতরে বসেন।
নির্বাক নিশ্চল শৈবাল ভিতরে এসে বসলো,সুন্দর মায়াবি হাতে শৈবালের প্রিয় “প্রকৃতির মত নির্জন আর গোধুলীর মত রঙিন চা”।
চা হাতে নিতে নিতেই শুনলো হৃদি বলছে- স্যার, আম্মু জানে এখনকার মেয়েরা শিক্ষকের প্রেমে পড়ে ভীষণ,আর তার মেয়েও যদি পড়ে যায়,তাই একটা ভালো,শিক্ষিত,সুন্দর,হ্যান্ডসাম ভালো ফিউচার আছে এমন ছেলেকে মেয়ের টিচার বানিয়েছে।মেয়ে প্রেম করলেও যেন ভালো একটা ছেলের সাথেই করতে পারে,এতে জীবন সুন্দর হবে।
অন্তত শিক্ষিত বেকার কারো হাতে মেয়েকে কেউ তুলে দিতে চাইনা,ঠিক না স্যার?
শৈবাল বুঝেছে-হৃদি কথাটা ওকেই বলেছে।এইটা শুনতে শুনতেই শৈবাল খামটা হাতে নিয়ে হৃদির বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছিলো।
আজ যখন অফিসের ভাইভা বোর্ডে সেই হৃদিকেই শৈবাল দেখতে পেলো-তখন তো অবাক হয়ে তাকিয়ে এগুলিই ভাবছিলো শৈবাল।হঠাত তানভীর সাহেব ডাকলো- স্যার, ক্যান্ডিডেট কে আপনি কিছু বলবেন?
শৈবাল- ম্যাডাম, শিক্ষিত,সুন্দর,হ্যান্ডসাম আর ভালো ক্যারিয়ার ওয়ালা ছেলের সংসার রেখে আজ আপনি কেন চাকুরী করতে এলেন?
হৃদি- স্যার, আমার আম্মু জানতো ভালো ক্যারিয়ার ফিউচার আছে মানেই সেটা ভালো আর চেহারা সুন্দর, একটা নামকরা ভার্সিটি ও উপরে ফিটফাট হলেই হয়তো তাকে শিক্ষিত সুন্দর বলা যায়।
শৈবাল- এই জানাতে সমস্যা কোথায়?
হৃদি- এই জানাতে সমস্যা নেই,সমস্যা হলো-প্রয়োগে।
এমন উপরে ফিটফাট অনেকেই,আমার মত হৃদিদের শুধুই ডোমিনেট করে চলাকে পুরুষত্ব ভাবে।তাই আমি এমন শিক্ষিতদের থেকে দূরে।
শৈবাল- আর কিছু না বলতে পেরে,তানভীর সাহেবকে জানালেন- ওনাকে এপোয়েন্টমেন্ট লেটার দিয়ে দিয়েন।