অনলাইন উদ্যোক্তার ১০০ দিন (বাংলাদেশে এফ-কমার্সের ভবিষ্যত কেমন)

 

ডালিয়া জানতে চাইলো আধিরার নিকটে- আচ্ছা ননদিনী আমরা তো ফেসবুক পেজ খুলে ফেললাম কিন্তু প্রশ্ন হলো আমাদের দেশে এফ কমার্সের ভবিষ্যত টা কেমন তা তো জানি না।
আধিরা জানালো- ভাবী এসব না জেনেই কি আর বাবার সামনে কিংবা সকলের সামনে কথা বলেছি বলো?
ডালিয়া আবদার করে বসলো যে আমায় ও একটু জানাও যে এর ভবিষ্যত টা কেমন।
আধিরা শুরু করার জন্য বই টা এনে বললো ভাবী আমি তোমায় জানাচ্ছি ঠিক ই বাকী টা তুমি সৌভিক ভাইয়ার বই থেকে জেনে নিও।
বর্তমানে আমরা সকলেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে সংযুক্ত। সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে আমরা এমনভাবে প্রভাবিত হয়েছি যে কোনো নতুন খবর পেলেই আমরা তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করি। একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে, আমরা প্রতিদিন ১৪৪ মিনিট বা ২ ঘন্টা ২৪ মিনিট করে সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় ব্যয় করি।
সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের প্রতিদিনের জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে আমরা দিনের অনেকটা সময় ব্যয় করি। আর এভাবেই সোশ্যাল মিডিয়া পণ্যের বিজ্ঞাপন এবং বিক্রয় করার জন্য নবীন এবং নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য একটি আদর্শ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।আর এই সুযোগেই এফ-কমার্স এগিয়ে যাচ্ছে খুব দ্রুত গতিতে।
ডালিয়া মাথায় হাত রেখে জানালো যে- কি বলো? আমার বর খানা তো এত টাইম ফেসবুকে থাকেই না, তাও এত এভারেজ? মানে যারা এটা নিয়ে থাকে তারা মোটামুটি বেশ সময় ই পার করছে।তারপর,তারপর বলো শুনি…
আধিরা বললো ভাবী সোশ্যাল মিডিয়া মানে কিন্তু শুধু ফেসবুক ই না, আরো অনেক কিছু আছে- যে সকল সোশ্যাল মিডিয়া ই-কমার্সের অন্তর্ভুক্ত তারা হলো, ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, পিন্টারেস্ট প্রভৃতি।
ডালিয়া- হায় রাব্বা, আমার তো এত জানাই নাই গো ননদিনী।কত কিছু যে তুমি জানো, মাশ আল্লাহ।তবে সৌভিক ভাইয়ার বই পড়ে আমি ও জেনে যাবো তাই না বলো?
আধিরা- হ্যাঁ তা তো বটেই, তবে লেগে থাকতে হবে, স্কিপ করা যাবে না মোটেও।
আমরা কিন্তু এটা দেখছি যে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার গুলির মধ্যে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি এবং এটাই একটি নতুন বিজনেস প্লাটফর্ম তৈরি করেছে যাকে আমরা বলছি F-commerce।
এটি এমন একটি মাধ্যম যেখানে অনলাইনে উদ্যোক্তারা তাদের কাস্টমারদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও ফেসবুকের বাইরে অন্য কোনো ই-কমার্স প্লাটফর্ম কে প্রমোট করে এর মাধ্যমে ব্যবসায়িক আদান প্রদান করা যায়।
ডালিয়া- ভাই তোমার এই ভাষা গুলি আমার একটু কঠিন লাগছে, একতা উদাহরন দেয়া যাবে কি?
আধিরা- হ্যাঁ ভাইয়া নিজেই বলেছেন উদাহরনে,
সাফওয়ান সাহেব একজন কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ যিনি প্রতিদিন খুব ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করেন তার কাজের মধ্য দিয়ে। এক বৃহস্পতিবার বিকেলে শামীম’এর স্ত্রী উনাকে বাসাইয় ফেরার পথেই কিছু বাজার করার জন্য বললেন। পরদিন শুক্রবার দুপুরে উনাদের বাসায় কিছু গেস্ট আসবেন। এটা জানিয়ে কায়নাত ম্যাডাম ম্যাসেঞ্জারে একটি বাজারের লিষ্ট ও দিয়ে দিলেন।
মহাবিপদে পড়লেন সাফওয়ান সাহেব, একদিকে কাজ অন্যদিকে স্ত্রীর আদেশ – কোনটা উনি পালন করবেন? হঠাৎ করে ওনার মনে পড়ল একটি ফেসবুক পেইজ ইজিসদাই এর কথা, যেখানে অনলাইনে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা বেচা করা হয়। দেরি না করে তিনি তৎক্ষণাৎ ফেসবুকে ঢুকেই সেই পেজে গেলেন, দরকারি জিনিসগুলোর যে লিস্ট ছিলো সেতা ওনাদের পেজে ইনবক্স করলেন।
পেজ টি থেকে সুন্দর রিপ্লাই দিয়ে ওনার ফোন নাম্বার চেয়ে নিলেন এবং ফোন করে সাফওয়ান সাহেবের সাথে কথা বলে নিলেন।পেজ টি থেকে জানানো হলো অর্ডার ক্ররতিত পন্য সমুহের মোট মুল্যমানের ১০% বিকাশে পেমেন্ট করতে, কিন্তু সাফওয়ান সাহেব বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তাই আবার ওনাদের পেজে গেলেন এবং একটি ওয়েবসাইট দেখলেন, যা দেখে উনি খুশি হলেন এবং পেজে কিছু রিভিউ দেখে উনি টাকা পাঠিয়ে অর্ডার কনফার্ম করলেন।
পেজের ম্যানেজার তৎক্ষণাৎ তাকে ফোন করে এবং এসএমএস করে ওনার অর্ডার কনফার্ম করলেন। আরও বলে দিলেন পরদিন সকালবেলা তার বাসার সামনে বাজারগুলো পৌঁছে যাবে। পুরো ব্যাপারটি ঘটলো ৩০ মিনিটের মধ্যে। পরদিন সকাল ৯ টার মধ্যেই সাফওয়ান সাহেবের বাসায় বাজারটি পৌঁছে গেল।
সাফওয়ান সাহেব অত্যন্ত খুশি হয়ে ফেসবুক পেজটিতে একটি পজিটিভ রিভিউ দিয়ে দিলেন।
এই ব্যাপারটি যদি ১০ বছর আগে হতো তাহলে সাফওয়ান সাহেব কে অবশ্যই কাজের শেষে রাতের বেলা বাজারে যেতে হতো, কিন্তু F-commerce পদ্ধতি ব্যবহার করে সাফওয়ান সাহেব তার বাসায় বাজারগুলো সঠিক সময়ের মধ্যে পেয়ে গেলেন।
ডালিয়া জানালো- কি দারুন ব্যাপার গো ননদিনী। আমি মাশ আল্লাহ জেনে যাবো আরো।প্রশ্ন মাথায় এলে আবার বসবো একত্রে আমরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *