প্রথমেই বলেছি, উদ্যোক্তা হতে চাইলে আপনাকে বেশকিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। এই পথে নামার পর থেকেই আপনার জীবনে বেশ কিছু পরিবর্তন আসতে শুরু করবে। আপনার চিন্তা ভাবনা থেকে শুরু করে আপনার ব্যবহার আচার, চলাফেরা, কথাবার্তা – সবকিছুতেই বদল আসবে।
ভালোভাবে কাজ শুরু করার পর বুঝতে পারবেন – আপনি ইচ্ছামত ঘুমাতে পারছেন না, নিজের মত সময় কাটানোর মত সময় পাচ্ছেন না, বন্ধুবান্ধবের সাথে ইচ্ছামত আড্ডা দিতে পারছেন না। সেইসাথে, অনেক কাছের মানুষ ,যারা কখনও আপনার ব্যাপারে প্রশ্ন করেনি , তারা বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ করতে শুরু করবে। কারণ তাদের পেছনে যে এনার্জি ও সময় দিতেন , তা এখন আর দিচ্ছেন না। অনেকে স্বার্থপরও বলে বসবে।
মানুষ যেভাবে আগে আপনাকে দেখত, এখন আর দেখবে না। এবং এটা অনেক সময়েই আপনাকে মানসিক যন্ত্রণা দেবে। এবং এগুলো সাথে নিয়ে নিজের কাজ করে যাওয়াটা বড় একটা চ্যালেঞ্জ।
কিন্তু সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য এগুলো সহ্য করে কাজ করে যেতে হবে। ব্যবসা সফল হওয়ার আগ পর্যন্ত আপনার প্রধান মনোযোগের বিষয় হবে কিভাবে ব্যবসাকে সফল করবেন। এবং সফল হওয়ার পরও আপনাকে এটা চালিয়ে যেতে হবে।
আপনার প্রতিটি দিনই হতে হবে রুটিন মাফিক, শিডিউল ধরে। দিনের প্রতিটি কাজ যেন কোনও না কোনও ভাবে আপনার ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখে। আগে হয়তো যখন ইচ্ছা ঘুমিয়েছেন, জেগেছেন। যেভাবে ইচ্ছা খরচ করেছেন – কিন্তু এখন থেকে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অবসর সময়ে টিভি বা সিনেমা দেখার বদলে নিজের দক্ষতা বাড়ানোর কাজ করতে হবে।
সব সময়ে ব্যবসা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। কিভাবে উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হবেন ,তাই হবে আপনার ধ্যান জ্ঞান। আগে হয়তো কিছু পছন্দ হলেই দাম দিয়ে কিনে ফেলতেন, কিন্তু এখন আপনাকে হিসেবি হতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া টাকা খরচ করা বা বিলাসী পন্য কেনা বাদ দিতে হবে। রিচ ড্যাড পিওর ড্যাড বই এর লেখক রবার্ট কিওসাকি এই ব্যাপারে সর্বোচ্চ জোর দিয়েছেন।
নিজের লাইফস্টাইলে এসব পরিবর্তন আনা অনেকের জন্যই বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু সফল উদ্যোক্তা হতে চাইলে ,নিজের লাইফস্টাইল বদলাতেই হবে। কাজেই, যখন থেকেই লক্ষ্য ঠিক করেছেন যে আপনি উদ্যোক্তা হবেন , তখন থেকেই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুতি নিন। একটু একটু করে নিজের লাইফস্টাইলকে উদ্যোক্তা হওয়ার উপযোগী করতে থাকুন। একটা সময়ে গিয়ে ঠিকই পারবেন।