আপনি যখন নতুন ব্যবসা বা উদ্যোগ শুরু করবেন, তখন অবশ্যই মাথায় রাখবেন যে, ব্যবসা সব সময়েই একটি অনিশ্চিত ব্যাপার নিজের পুরোটা দিয়ে লেগে থাকলে যে কোন কিছুতে সফল হওয়া যায়,এটা যেমন সত্যি, তেমনি এটাও সত্যি যে, ব্যবসার সাফল্য অনেক ক্ষেত্রেই অনেক সময় নিতে পারে।
এমনকি যদি বাজারের সেরা প্রোডাক্ট বা সার্ভিসও আপনার হাতে থাকে তারপরও নামার সাথে সাথেই সফল হবেন,এটা কোনওভাবেই বলা যায় না।
পন্য ভালো হলেও আপনার সেলস টেকনিকে বা বিক্রয় কৌশলে সমস্যা থাকতে পারে। আপনার পন্য বা সেবা ক্রেতাদের এখন প্রয়োজন না হতে পারে। আপনি বাজারে নামার সময়েই হয়তো আরও একজন প্রতিযোগী বাজারে নেমে আপনার মার্কেট শেয়ারে ভাগ বসাতে পারে। আবার হয়তো বাজারে নেমে দেখতে পাবেন আগে যা হিসাব করেছিলেন, পন্য চালাতে তারচেয়ে অনেক বেশি খরচ হচ্ছে।
এমন নানান ধরনের অপ্রত্যাশিত বিষয় ঘটতে পারে।
ছোট হোক, বড় হোক, নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে মাঠে নামলে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটবেই। আপনি যেমনটা আশা করবেন, প্রথমেই তেমনটা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম। এবং এই চ্যালঞ্জ মোকাবেলা করার প্রস্তুতি ও মানসিকতা নিয়েই আপনাকে শুরু করতে হবে।
অনিশ্চয়তার মুখেও সফল ভাবে এগিয়ে যেতে পারাই এই চ্যালেঞ্জকে জয় করার সেরা উপায়। আর এই অনিশ্চয়তার চ্যালেঞ্জ জয় করতে হলে আপনাকে ব্যবসা শুরু করার আগেই কিছু বিষয় হিসাব করে রাখতে হবে। নিচের কয়েকটি পয়েন্ট আপনাকে এ বিষয়ে সাহায্য করবে –
মার্কেটে নামার আগে কয়েক ধরনের মার্কেটিং প্ল্যান সেট করুন- প্ল্যান A, B, C – এভাবে পরিকল্পনা সাজান। কি কি কারণে প্রথম প্ল্যানটি কাজ না করতে পারে, সেগুলো নির্দিষ্ট করে বোঝার চেষ্টা করুন। এরপর সেই কারণগুলো ঘটলে কি ব্যবস্থা নেবেন ,তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখুন দ্বিতীয় প্ল্যান হিসেবে। আবার দ্বিতীয় প্ল্যানের ক্ষেত্রেও একই কাজ করুন। এভাবে করলে দেখবেন সম্ভাব্য সব অনিশ্চয়তা গুলো বুঝতে পারার পাশাপাশি সেই সমস্যার সমাধানও ভাবতে পারছেন। এতেকরে, বাস্তবে এইসব পরিস্থিতিতে পড়লে সহজেই বিপদ কাটাতে পারবেন।
কিছু টাকা আলাদা করে রাখুন
মার্কেটে নেমে অনেক সময়েই দেখা যায় যা বাজেট করেছিলেন ,তাতে কাজ হচ্ছে না। এই ঝামেলা এড়ানোর জন্য,কিছু টাকা আলাদা করে রাখুন। এতে বাজেট ঘাটতি পুরোপুরি পূরণ না হলেও, ধাক্কা সামলানো সহজ হয়ে যাবে।
অপ্রত্যাশিত প্রতিযোগীতা নেতিবাচক রেসপন্স কিভাবে সামলাবেন ভেবে রাখুন-
অপ্রত্যাশিত প্রতিযোগীতা বা ক্রেতা/গ্রাহকদের নেতিবাচক রেসপন্স হলে কি করবেন,তা আগে থেকে প্ল্যান করে রাখুন। প্রয়োজনে অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন। তারা কি ধরনের সমস্যায় পড়েছিল, এবং কিভাবে এর সমাধান করেছিল,তা জানার চেষ্টা করুন, এবং সেই অনুযায়ী নিজের প্ল্যান সাজান।
ধীরে চলো নীতি মানুন-
প্রথমেই একবারে না নেমে একটু একটু করে পরীক্ষামূলক ভাবে এক একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করুন। সব ডিম এক ঝুড়িতে রাখবেন না। পরীক্ষামূলক অবস্থায় যে কৌশলটি সবচেয়ে ভালো ফল দেবে,সেটাই চূড়ান্ত ভাবে কাজে লাগান।
একজন উদ্যোক্তা কখনওই অনিশ্চয়তা বা চ্যালেঞ্জ দেখে পিছিয়ে যান না। সঠিক পরিকল্পনা ও কাজ দিয়ে প্রতিটি অনিশ্চয়তাই জয় করা সম্ভব। অনিশ্চয়তার মুখে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা সফল উদ্যোক্তা হওয়ার একটি প্রধান শর্ত ।