আমার লেখায় অনেকেই কমেন্ট করেন- ভাইয়া পড়ি তো সবই কিন্তু মনে রাখা যায় না,এক লাইন পড়লে ভুলে যায় আগের লাইন।তাই ভাবলাম স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কিছু কৌশল তো আছেই পৃথিবীতে, আমি আজ নাহয় সেগুলি নিয়েই লিখি।
স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় সবাই কাজে লাগতে পারে। সেইসাথে যে কোনও কিছু দ্রুত শিখে নেয়ার ক্ষমতাকে যদি আরও শক্তিশালী করা যায় – তাহলে তো কথাই নেই। মানব সভ্যতা যে অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছে, তার অন্যতম একটি কারণ হল মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতা।
প্রখর স্মৃতিশক্তি, দ্রুত চিন্তা করার ও সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা, নতুন কোনও দক্ষতা দ্রুত শিখতে পারা – যে কোনও মানুষকে অনেক তাড়াতাড়ি অনেক দূর এগিয়ে দিতে পারে।
একজন স্বাভাবিক মানুষের শরীরের শক্তি বা সৌন্দর্য একটা বয়সের পর কমে যেতে থাকে, এবং এক সময়ে তা একেবারেই কমে যায়। কিন্তু মস্তিষ্কের ক্ষমতা শারীরিক ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি দীর্ঘস্থায়ী, এবং এই শক্তি ব্যবহার করে অনেক বেশি কিছু অর্জন করা যায়।
আসলে মানুষের জীবনের সাফল্যের জন্য মস্তিষ্ককে ঠিকভাবে ব্যবহার করাই সবচেয়ে জরুরী। মনে রাখতে পারা এবং প্রয়োজনের সময়ে মাথাকে কাজে লাগাতে পারা হতে পারে আপনার সাফল্যের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
আর এই হাতিয়ারকে আরও শক্তিশালী করার জন্যই আমরা জানতে চাই কিছু টিপস।
দি থার্প মেমরী ওয়ার্কআউট
আমেরিকার নিউ ইয়র্কের একজন নামকরা কোরিওগ্রাফার টোয়লা থার্প স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য এই বিশেষ পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেন।
ট্রেনিং দেয়ার পর তিনি তাঁর পারফর্মারদের প্রথম বারের পারফর্মেন্স দেখার সময়ে কোনও নোট নিতেন না। কোনও বিষয়ে ট্রেনিং দেয়ার পর প্রথম পারফর্মেন্সে মানুষ ভুল করে। ট্রেইনার সেই ভুলগুলো সাধারণত লিখে রাখেন, এবং পরে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। থার্প প্রথম ১২ থেকে ১৪টি ভুল লিখতেন না। এগুলো তিনি মনে রাখার চেষ্টা করতেন।
টোয়লা থার্প তাঁর বই “দি ক্রিয়েটিভ হ্যাবিট” – এ লিখেছেন যে, বেশিরভাগ মানুষ সাধারণত দুই থেকে তিনটির বেশি ভুল না লিখে মনে রাখতে পারেনা। – কিন্তু এভাবে দিনের পর দিন প্রাকটিস করলে এক সময়ে গিয়ে মনে রাখার পরিমান বেড়ে যায়।
না লিখে কিছু মনে রাখার চেষ্টা করা, এবং সেইসব নিয়ে পরে আলোচনা করা স্মৃতিশক্তি ও ব্রেনের পারফর্মেন্স বাড়ানোতে দারুন ভূমিকা রাখে।
এখন প্রশ্ন করতে পারেন, সবাই তো আর কোরিওগ্রাফার নয় যে মানুষকে ট্রেনিং দিয়ে তাদের ভুল গুলো মনে রাখার সুযোগ পাবে।
আসলে এই প্রাকটিস করার জন্য কোরিওগ্রাফার বা ট্রেইনার হওয়ার দরকার নেই। একটি বই পড়ে তার লাইনগুলো মনে রাখার চেষ্টা করুন, প্রতিদিন যে রাস্তা দিয়ে যান – সেই রাস্তার আশপাশের জিনিসগুলো মনে রাখার চেষ্টা করুন – এভাবেও এই প্রাকটিস করতে পারেন।
প্রথমে যদি ৩ থেকে ৫টি জিনিস মনে রাখতে পারেন, ধীরে ধীরে এই মনে রাখার পরিমান বাড়তে থাকবে। আর এই অভ্যাস করতে করতে দেখবেন, যে কোনও জিনিসই অনেক দ্রুত মনে রাখতে পারছেন।
আপনি নিশ্চয় এই লেখাটি পড়ছেন আর ভাবছেন এপ্লাই করবো আজ থেকে কিংবা এই কন্টেন্ট পড়া শেষেই।তাহলে আর দেরি কেন?
এমন দারুন দারুন আরো কিছু টিপস গুলি নিয়ে লিখবো ধারাবাহিকভাবে।