শত চাপের মধ্যেও প্রোডাক্টিভ থাকবেন যেভাবে-পর্ব ০২ (SMARTER FASTER BETTER )

 

দেখে আসি আজকের পর্বে কি আছে?
কিছু মানুষ আছে যারা হাজারটা কাজের মাঝেও চাপহীনথাকতে পারে। অন্যদের চেয়ে তারা অনেক বেশি কাজ করলেও তাঁদের কখনও ক্লান্ত বা বিরক্ত অবস্থায় দেখা যায় না। এবং তাঁদের কাজের ক্ষেত্রে তাঁরা সেরা পজিশনে থাকেন। কিন্তু কিভাবে তাঁরা এই ব্যাপারটিকে সম্ভব করেন?
একটি কাজ করার দুই-তিনটি পদ্ধতি বের করুন এবং তার মধ্য থেকে অন্যদেরও যেমন বেছে নেয়ার স্বাধীনতা দেবেন, তেমনি নিজেও নিজের কাজের একাধিক পদ্ধতির মাঝে একটি বেছে নেবেন।
হতে পারে এক ঘন্টার একটি কাজে দশ মিনিটের বিরতির সুযোগ রয়েছে। বিরতিটি আপনি চাইলে বিশ মিনিট পরও নিতে পারেন, আবার ত্রিশ-চল্লিশ মিনিট পরেও নিতে পারেন। অন্যকে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার সময়েও এই স্বাধীনতাটুকু দিন। এতেকরে কাজের মাঝে উ‌ৎসাহ বেড়ে যাবে।
এই পদ্ধতিটি আপনি আপনার ব্যক্তিগত জীবনেও কাজে লাগাতে পারবেন। মনে করুন আপনার সন্তান ঠিকমত পড়াশুনা করছে না। তাকে সকালেই পড়তে বসতে হবে, অথবা সন্ধ্যা হওয়ার সাথেই পড়তে বসতে হবে – এমন কোনও বাধ্যবাধকতার মাঝে না ফেলে – তাকে বলুন পড়ার জন্য সকাল ও সন্ধ্যা হল সেরা সময়, সে কোন সময়ে পড়তে চায়? – তার সামনে যখন দু’টি অপশন দেয়া হবে, সে তখন ভাববে তার সিদ্ধান্তকে গূরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
এতে করে সে দু’টোর মধ্যে থেকে একটিকে বেছে নেবে, এবং তার বেছে নেয়া সময়েই সে নিজের উ‌ৎসাহে পড়তে বসবে। অথবা এমন যদি হয় যে আপনি আপনার সন্তানকে দায়িত্বশীলতা শেখাতে চাচ্ছেন, তাহলে তাকে একটি নির্দিষ্ট কাজের আদেশ না করে তাকে হয়তো বলতে পারেন ঘর গোছানো এবং বাজার করার মাঝে যে কোনও একটি কাজ বেছে নিতে। এতেকরে সে নিজের সিদ্ধান্তেই আপনার উদ্দেশ্যটি পূরণ করে দেবে।
একই ভাবে ধরুন আপনার হাতে যদি ছুটির দিনে বেশি কাজ পড়ে যায় তবে আপনি আপনার কোনও কর্মচারীকে বলতে পারেন যে সে চাইলে আজ অফিসের পরে আপনাকে কাজে সাহায্য করতে পারে, অথবা চাইলে ছুটির দিনে একটু সময় বের করে আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
এতে করে – সে ধরে নেবে যে কাজটি কখন করবে সেই সিদ্ধান্ত তার নিজের হাতেই রয়েছে। সে উ‌ৎসাহের সাথেই তার পছন্দমত সময়ে কাজটি করে দেবে।
এই পদ্ধতিতে আপনি যদি কাউকে দিয়ে কাজ করান, তাহলে সেই মানুষটি নিজের কাজ মনে করেই আপনার কাজটি করবে, এর ফলে সেই সময়ে আপনি আপনার কাজটি নিশ্চিন্তে করতে পারবেন।
স্মার্ট মানুষেরা এভাবেই অন্যদের উ‌ৎসাহিত করার মাধ্যমে অন্যদের দিয়ে তাঁদের কাজটি করিয়ে নেন, সেইসাথে নিজেকেও একই ভাবে উ‌ৎসাহ দিয়ে থাকেন।
একজন মানুষ যদি ধরে নেয় যে কোনও একটি কাজের নিয়ন্ত্রণ তার নিজের হাতে রয়েছে, তাহলে মস্থিষ্কের “striatum” অংশ অনেক বেশি এ্যাকটিভ হয়ে পড়ে – এতেকরে কাজগুলো অনেক দ্রুত হয়, কাজের ফলাফল বা output ও অনেক ভাল হয়।
একটি বিষয় এখানে জেনে রাখা ভাল যে আমাদের মস্তিষ্ক কল্পনা ও বাস্তব – দুই পরিস্থিতিতেই একই প্রতিক্রিয়া দেখায়। আপনি বিরিয়ানীর ঘ্রাণ বাস্তবে পেলে আপনার মস্তিষ্ক যে প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেই ঘ্রাণের কথা মনে হলেও একই প্রতিক্রিয়া দেখাবে। চোখ বন্ধ করে আপনার প্রিয় খাবারের চেহারা কল্পনা করে দেখুন – একটু পরেই দেখবেন জিভে পানি এসে গেছে।
এভাবে কোনও কাজের সময়ে যদি নিজেকে ভুলিয়ে রাখতে পারেন যে আপনার যে কোনও সময়ে বিশ্রাম নেয়ার অথবা অন্য কিছু করার স্বাধীনতা আছে – আপনি দেখবেন কাজের ক্লান্তিও অনেকটা কমে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *