বর্তমান বিশ্বে যে কয়জন সফল উদ্যোক্তা অন্যদের অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রেও এগিয়ে আছেন, তাঁদের মধ্যে গ্রান্ট কার্ডন অন্যতম একজন। তাঁর লেখা বই ও তাঁর বক্তৃতা হাজার হাজার মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে এবং সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পথ দেখিয়েছে।
৬০ বছর বয়সী এই উদ্যোক্তা ও মোটিভেটরের মোট সম্পদের পরিমান বর্তমানে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলা টাকায় যা ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি!
উদ্যোক্তা ও কর্মী মানসিকতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে গ্রান্ট বলেন:
“আপনি কি জানেন, যারা এখন সাফল্যের চূড়ায় আছেন, কেন তাঁরা এখনও এত কষ্ট করেন?
কেন নিয়মিত কাজ করে যান? – কারণ তাঁরা কোটা পূরণের জন্য কাজ করেন না, তাঁরা নিজের যোগ্যতার পুরোটা ব্যবহার করেন। নিজের ক্ষমতার পুরোটা কাজে লাগান। তাঁরা নিজেদের দক্ষতাকে সব সময়ে এক ধাপ বাড়াতে চান। নিজের কর্মক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার করা তাঁরা নিজের দায়িত্ব মনে করেন।”
– একটু চিন্তা করলেই ব্যপারটা বুঝতে পারবেন। জ্যাক মা, বিল গেটস, ইলন মাস্ক, মার্ক জুকারবার্গ – বা এমন আরও অনেক বিলিওনেয়ারের কোনওকিছুরই অভাব নেই। তাঁরা হাত বাড়ালেই যে কোনও কিছু কিনতে পারবেন। তাঁদের টাকা তাঁদের পরের ১০ প্রজন্ম মিলেও শেষ করতে পারবে না। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ তাঁদের চেনে। তাঁদের খ্যাতি এমনকি বড় বড় ফিল্মস্টারদের চেয়েও অনেক বেশি। তাঁরা পৃথিবীর চেহারাই পাল্টে দিয়েছেন।
কিন্তু তবুও তাঁরা প্রতিদিন নিয়ম করে অফিস করেন। মিটিং করেন – নতুন নতুন আইডিয়া ও ব্যবসা নিয়ে কাজ করেন।
এর মূল কারণ, তাঁরা নিজের কাজের ক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার করতে চান। তাঁরা দেখিয়ে দিতে চান তাঁরা কি পারেন। বেশিরভাগ মানুষের মত তাঁরা শুধু কিছু সময় কাজ করে কয়েকটি টাকা রোজগার করে বেঁচে থাকতে চান না।
যাদের মধ্যে নিজের ক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার করে পৃথিবীকে দেখিয়ে দেয়ার বদলে ৯টা-৫টা কাজ করার, অথবা নির্দিষ্ট সময় কাজ করে টাকা ইনকাম করার মানসিকতা থাকবে, তারা জীবনেও সফল উদ্যোক্তা হতে পারবে না।
উদ্যোক্তা হতে চাইলে প্রথমেই এই মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যতক্ষণ কাজ করার ক্ষমতা আছে – প্রতিদিন ততক্ষণ কাজ করে যেতে হবে।
অন্যদের দেখে বা অন্য কোনও ভাবে যদি নিজের ভেতরে দিনে ঘড়ি ধরে একটি নির্দিষ্ট সময় কাজ করার পর ছুটি নেয়ার মানসিকতা আপনার মাঝে আছে কি না – সেটা খুঁজে বের করুন এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে পরিবর্তন করুন।
আলিবাবা ডট কম এর একদম শুরুর দিকে, জ্যাক মা এর একটি উক্তি এখনও খুব জনপ্রিয়। তিনি বলেছিলেন – “আমরা যদি এখানে ৮টা-৫টা কাজ করার চিন্তা করি – তবে এটা কোনও হাই টেক কোম্পানী নয়। যদি সেরকম মানসিকতা আমাদের মাঝে থাকে – তবে আমাদের অন্যকিছু করা উচিৎ”
উদ্যোক্তা হতে গেলে নিজেকে সময়ের ফ্রেমে আটকে ফেললে হবে না। ঘড়িতে কয়টা বাজে সেই হিসেবে কাজ বন্ধ করার বদলে কতটুকু কাজ হয়েছে – এবং যথেষ্ঠ কাজ হয়েছে কি-না – এই হিসেব করে দিনের কাজের ইতি টানতে হবে।
সফল উদ্যোক্তা হতে হলে দিনে কয় ঘন্টা কাজ করতে হবে?
এই কন্টেন্ট নিয়ে লিখবো আগামীতে ইনশাআল্লাহ।