খাবার আমাদের দৈনন্দিন চাহিদা,চাহিদা কখনো বিলাসিতা হয়না
মানুষ বাজে খরচ করে যতকিছু নষ্ট করে – তার মধ্যে খাবারের পেছনে টাকা নষ্ট করা অন্যতম।আমি আমার কন্টেন্ট দ্বারা কাউকেই খেতে বারন করছিনা,বরং আমি নিজেও খাবার গ্রহনের পক্ষ্যে এবং সেটার জন্যই আমাদের মুলত এত ছোটাছুটি।
আপনার যদি আসলেই লক্ষ লক্ষ টাকা বাড়তি পড়ে থাকে, তবে মাঝে মাঝে প্রিয়জনদের নিয়ে ভালো কোনও রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন। কিন্তু সামর্থ্য না থাকলেও বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে গিয়ে দামী খাবার খাওয়া, আর চেক ইন দেয়ার মানে আপনি এ যুগের বোকাদের একজন।
ভেবে দেখুন খুব নামীদামী রেষ্টুরেন্টের খাবারে কি এমন আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে যে সেখানে এত টাকা দিয়ে রেগুলার খেতে হবে? এর চেয়ে বাড়িতেই ঐ খাবার রান্না করে সবাই মিলে খাওয়া যেতে পারে।খুব বেশি হলে আমরা হোমমেড খাবার অর্ডার করা যেতে পারে,কেননা এইগুলি আসলেও স্বাস্থ্যকর।
আত্ম নিয়ন্ত্রণ এবং আত্ম উন্নয়নের জন্য নিজের রসনা বা খাবার ইচ্ছাকে দমন করা খুবই জরুরী। এটা স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। জিহ্বাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে খাওয়ার বদলে প্রয়োজন মেটানোর জন্য খাওয়া দাওয়া করুন।
যদিও ইদানীং আমাদের বাচ্চাদের জন্য বরাদ্দকৃত সময় কমেছে আর সেজন্য আমরা আউটিং এ গেলেই কোন জায়গা থেকে খেয়ে আসি।আমিও চাই এসব করুন তবে নিজের লিমিট বুঝেই।
ফাস্ট ফুড বা রিচ ফুড আসলে খাদ্য হিসেবে তেমন ভালো কিছু নয়। এগুলোতে অতিরিক্ত চর্বি, তেল, চিনি – ইত্যাদি থাকে।
আমাদের দেশে ফাস্টফুড ‘বড়লোকের’ খাবার বলে বিবেচিত হলেও – এগুলো যেখানে সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে অসমর্থ্য লোকদের টার্গেট করেই সৃষ্টি হয়েছে।
আমি আমার কথা বলি- যশোরের Zabeer International একটি পাঁচ তারকা হোটেল।কিন্তু আমি এখনো আমার পরিবার নিয়ে সেখানে যায়নি।সেখানে আমার অনেক ছাত্র ইতিমধ্যেই গেছে।এবং আমি এমন অনেককেই সেখানে যেতে দেখি যারা বাস্তব জীবনে স্বচ্ছল নন।আমি কারো ব্যাক্তিগত ব্যাপারে বলতে চাইনা।বরং আমি কেন যায়নি সেটা বলি- ২০ টাকার পানি ৮০ টাকা,আর ৮০ টাকার কফি ৩৫০ টাকা দিয়ে খাবার মত সামর্থ্য আমার নেই।এজন্য আমি যাইনি বলতে পারেন।
জীবনে উন্নতি করতে গেলে টাকাকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করা যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন নিজের স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখা।
স্বাস্থ্য ঠিক থাকলে আপনার শরীর ও মস্তিষ্ক অনেক ভালোভাবে কাজ করবে। আপনি বেশি পরিশ্রম করতে পারবেন এবং মাথা খাটাতে পারবেন – জীবনে বড় হওয়ার জন্য যার কোনও বিকল্প নেই।
সন্তানেরা বাইরে খেতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক,তারা আনন্দ নিতে চাইবে এইটাই স্বাভাবিক।আমি আমার ছেলেকে আমার সামর্থ্য বুঝিয়ে চলতে শিখিয়েছি এবং শেখাচ্ছি।ওকে আমি আমার ইনকাম এবং আমাদের খরচ বুঝিয়েই গনিতের যোগ বিয়োগ দেখাচ্ছি।
ছেলেকে সাথে নিয়ে আমি যখন সুপার শপে যায় তখন ওকেই নিজের জিনিস বেছে নিতে বলি,এবং সব শেষে যোগ টেনে নিতে বলি।আমার মানিব্যাগের কোন অংশ টা ওর জিনিসের জন্য সেটাও দেখিয়ে দিই।প্রথমে ছেলে একটু বুঝতো কম কিন্তু আস্তে আস্তে এখন সে তার চাহিদার বাইরে কিছুই কেনেনা।
ওর কোন খেলনা পছন্দ করার সাথে সাথে আগে ও দাম জিজ্ঞাস করে দোকানীকে কিংবা আমার কাছে।নিজেই বুঝে নেয় কোনটা নেয়া যাবে আর কোনটা নেয়া যাবেনা।