আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বহুবার রুটিন বানিয়েছি,এই লেখা পড়ার পরে অনেকেই আবার বানাবো,এবং এখানেই থেমে যাবোনা বরং ভবিষ্যতে আবারো বানাবো।
সেই ছেলবেলা থেকেই আমাদের রুটিন বানিয়ে পড়তো হতো,যেমন- সকাল ৬-৭ টা, ইংরেজী পড়বো, আবার ৭-৮ টা, ম্যাথ করবো, ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু ভেবে দেখুন এই রুটিন কতটা বাস্তবায়ন যোগ্য হতো?
আমার বেলাতে অন্তত হয়নি,কারন সময় ধরে পড়া যায়?
বিভিন্ন মতবিরোধ থাকতেই পারে,আমার কাছে যেমন মনে হয়- ধরুন আমি ম্যাথ করছি এমন সময় ঠিক এক ঘন্টার মাথায় আমার সবগুলি ম্যাথ করা শেষ হলোনা,ঠিক তখন থেকেই আমাদের মস্তিষ্কে একটা ধাক্কা লাগে।
সেটা কেমন?
আরে আমার ম্যাথটা সময়েই শেষ হলোনা,তাহলে কি আমার স্পিড কম ছিলো? পরের সাবজেক্টের টাইম কমে যাচ্ছে,সেটাও তো টাইমে শেষ হবেনা মনে হয়।
এর পরের সাবজেক্টের কি হবে?
এসব ভাবনা গুলিই আমাদের এই রুটিন থেকে বের করে নিয়ে আসতো।আর এইজন্যই আমি বলি সময় ধরেই করবো কাজ কিন্তু সেটা হবে ভিন্ন ভাবে।
আমি যেভাবে রুটিন করি-
সবার আগে আমি আমার খাতায় লিপিবদ্ধ করি আমার ফিক্সড টাইম গুলি- যেমন আমার ঘুম,নামাজের সময়,লেখাপড়া,গোসল,ফ্রেশ হওয়া ও খাবারের সময়গুলি।
এরপরে আমি লিপিবদ্ধ করি আমার হাতের বাকি সময়টা,যেমন- ২৪ ঘন্টা থেকে আমার উপরিউক্ত কাজের জন্য চলে যাই ধরুন ১০ ঘন্টা।তাহলে আমার বাকি রইলো ১৪ ঘন্টা।
এই ১৪ ঘন্টার মধ্যে আমি কাজ করবো কতটুকু?
আমি হয়তো এখানে সর্বোচ্চ ১২ ঘন্টা কাজ করবো,এবং বাকি দুই ঘন্টার মধ্যে- আমার ছেলের জন্য ১ ঘন্টা এবং আমার নিজের বাইরের কাজ ১ ঘন্টা।
এবার আমি আমার কাজের ১২ ঘন্টার জন্য রাতে ঘুমানোর আগে কিংবা সকালে উঠেই আগে লিপিবদ্ধ করে নিই যে, আজ আমার সিডিউলে কি কি কাজ আছে।
তারপরে আমি সেভাবে আমার কাজগুলির তালিকা বানিয়ে কাজ করা শুরু করি।
প্রতিটা কাজ করি আর একটা করে টিক মার্ক করি যেন আমার মাইন্ড সেটিং টা বোঝে যে আমার কাজ শেষ হচ্ছে।
এবং দিনের শেষে আমি বাড়ি ফেরার আগেই আমার কাজের একুরেসি ও ইফিসিয়েন্সি বের করি।
কাজের কর্মদক্ষতা খুঁজে বের করা খুব গুরুত্বপূর্ণ,কেননা আজ হয়তো ৭০% কাজ শেষ হলো,তারপরে আস্তে আস্তে এটাকে আপনি টার্গেট ওয়াইজ ১০০% এ উন্নত করুন।
সবচেয়ে বড় কথা- সারা বছরের যে পরিকল্পনা থাকে আমাদের উদ্যোগ নিয়ে, সেটাকে আগে ৪ ভাগে ভাগ করুন,তারপরে সেই ৪ ভাগের সব গুলিকে আমার ইন্ডিভিজুয়ালি ৩ ভাগে ভাগ করুন,এবার ঐ তিন ভাগের সব গুলিকে আমার তিনটা আলাদা সেগমেন্টে ভাগ করুন।তাহলে হাতে এসে দাঁড়ায় এক এক সেগমেন্টে ১০ দিন করে।
কেন এইটা করবেন?
কারন হলো- একটা বড় লক্ষ্যকে সব সময় ছোট ছোট করে দেখতে হয়ে,এতে কাজের স্পিড সর্বদা বেড়ে যায়।
আমি যখন ক্রিকেট মাঠে ক্যাপ্টেন্সি করতাম- তখন টিমমেট দের বোঝাতাম- দেখ,আমাদের টার্গেট ২০ ওভারে ২০০ রানের,তাহলে এক ওভারে ১০।
এইভাবে না ভেবে ৬ বলে ১০ রান,এমন করে চিন্তা করে দেখেন।
কি পেলেন?
১ এর সাথে ১০ আর, ৬ এর সাথে ১০।
পার্থক্যটা বুঝলেন তো?
সংখ্যাতত্বটা আমাদের ব্রেইনে খুব আঘাত করে।এজন্য ব্রেইন যেভাবে শান্তি পাই তাকে সেভাবেই চালিয়ে কাজ করে নিতে হবে।
রুটিনে এমন করে নিজেকে সাজান,আর এই রুটিন টাই ফলো করুন,তাহলেই নিজের উন্নতি টের পাবেন।
মোঃ সৌভিকুর রহমান
শিক্ষক (কম্পিউটার বিভাগ)
যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
আমার কাজ- লোগো ডিজাইন,ফেসবুক পেজ ডেকোরেশন, ওয়েবসাইট ডিজাইন, ফেসবুক পেজ প্রোমোট,পোষ্ট বুষ্ট,ডোমেইন-হোষ্টিং,ভিডিও এডিটিং,কন্টেন্ট রাইটিং।
আমার পেজ- ICT CARE