এই একটা লাইন আমার নিজেকে বদলে নিতে সাহায্য করলো

শেষ তিন বছরের তিনটা বড় সিধান্ত নিয়ে এই পোস্ট টা লিখি।হাতে সময় থাকলে পড়বেন এতে আপনার হয়তো সামান্য হলেও উপকার হবে।কোন প্রকার ক্ষতি হবেনা।
১. ২০২২ এর সেপ্টেম্বরে আমি সিধান্ত নিলেম যে,আমি আর শিক্ষকতা পেশাতে থাকবোনা কলেজে।
২. ২০২২ এর অক্টোবরে আমি সিধান্ত নিলাম যে, আমি অফিস করবো ঢাকাতেই।
৩. ঢাকার মোহাম্মদপুরে ১ বছর অফিস রাখার পরে সিধান্ত নিলাম যে, আমি মুভ করে Mirpur DOHS যাবো।
খোলা চোখে এগুলি কেবলই সিধান্ত বলে মনে হবে।হয়তো অনেক বড় কিছুনা।তবে আমার কাছে অনেক বড় ইস্যু।
আমি একেবারে নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান।আমার উপরে আমার পরিবার সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল আর সেখান থেকে ভাবুন।আমার চাকুরী আছে আর আমি মোটামুটি বেশ ফিক্সড একটা ইনকামে ভালো লাইফ লিড করছিলাম।
সেখান থেকে ফুল টাইম ব্যবসায়ী হতে চাওয়াটা কেমন অন্যায় আর অপরাধের একটু ভাবেন।আরও যখন জানবেন যে,এই কাজটা করতে যেয়ে আপনাকে এই পরিবারের কেউ সাপোর্ট করছেনা,তখন উপলব্ধি টা কেমন হবে?
যাহোক এইগুলা কোন একদিন বলবো,আজকে আসি মুল কথাতে- আমি পিউর সায়েন্সের ছাত্র আর আমার ব্যাকগ্রাউন্ড হলো- কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং।মানে হলো- আমার কোথাও ব্যবসার কিছু নেই।কেবল মনের মধ্যে বিরাট সাহস আর স্বপ্ন ছাড়া।
তাই শুরু থেকেই আমাকে অনেক পড়ালেখা করতে হয়েছে আর হচ্ছেও।আমি দিনে ১৬ ঘন্টার মত কাজেই থাকি।এরমধ্যে ৮ ঘন্টার মত ব্যয় করেছি শুধু জানার জন্য আর শেখার জন্য।
এই ৮ ঘন্টার মধ্যে ৪ ঘন্টা ব্যয় করতাম ব্রান্ডিং এর জন্য আর বাকি ৪ ঘন্টা শেখার জন্য।আর বাকি ৮ ঘন্টাতে আমি ২ ঘন্টা কাস্টোমার কনজিউম করতাম আর ৬ ঘন্টা কাজ করতাম সেগুলিকে ডেলিবারি করার জন্য।
কোভিডের সময়ে আমি একটানা সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত কাজ করতাম।এরপরে লাঞ্চ সেরে রেস্ট করে আবার সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ৩ টা।এইভাবে কাজ করেছি।
ঐ সময়ে অফিসে কাজ করতাম কেবল আমরা দুজন মানুষ।আর সবাই তো বাসায়।সেখান থেকে আমাদের অফিস এখন প্রতিমাসে ২০ জন মানুষকে স্যালারি দিচ্ছে এবং সেটাও আলহামদুলিল্লাহ কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই মানে বেতন অনেক বড় বড় অফিসের চেয়ে কম কিন্তু আমাদের স্যালারি হয় অন টাইমে মানে মাসের ১-৫ তারিখের মধ্যে।
ব্যবসাটা সেটেল করার জন্য আমি যশোর ছেড়ে ঢাকা যাবার সিধান্ত নিয়েছিলাম আর সেটাকে স্কেল আপ করার জন্যই আমি মোহাম্মদপুর ছেড়ে এই Mirpur DOHS এ আসার প্ল্যান করি।
খরচের এমাউন্ট এক বছরের ব্যবধানে বেড়ে গেলো প্রায় ৪ গুন আর সেটা নিয়ে সবাই ভীত হলেও আমি খুব কনফিডেন্ট ছিলাম।
লাস্ট তিন বছরে আমার রুটিন আমি একেবারেই নিজ স্টাইলে বানিয়ে চলেছি তবে ২০২৪ এর ডিসেম্বর মাসে আমার চিন্তা বদলে যায়।আমি আমার স্বপ্নটাকে আরও বড় করে প্ল্যান করি।
সেই উদ্দেশ্যেই ২০২৫ এর জানুয়ারিতে অফিসটাকে ঢেলে সাজিয়েছি।আমার এই সাজানো নিয়েও অনেক কথা বলেছে,আমারই তথাকথিত বন্ধু আর কাছের মানুষগুলা।
মোট কথা হলো- আমি যখন শুরু করেছিলাম ২০১৪ এর শুরুতে,তখনো কথা শুনেছি।আবার যখন ২০২৫ এর জানুয়ারিতে এই চেহারা দিলাম অফিসের,তখনো অনেক কথা শুনলাম।মানে মানুষ যে কথা বলবে এটাই সত্য।
নিজেকে একজন বিজনেস কোচ হিসাবে দেখার ইচ্ছা পোষণ করি ২০২০ তে আর সেটার বাস্তবায়ন শুরু করি কিন্তু হঠাৎ মনে হলো- এটার স্কেল আপ করার জন্য আমায় আরও গুছিয়ে কাজ করতে হবে।
আমি বিশ্বের সব নামকরা বিজনেস কোচদের আর বিলিওয়ন ডলারের মালিকদের ফলো করতে শুরু করি।দেখলাম সবার একটা ব্যাপার কমন আর সেটা হলো- লেখাপড়া।
আমি এইবার শুরু করলাম আবার পুরোদমে আমার জ্ঞান অর্জনের কাজ।সকাল ৬ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত লেখাপড়া করতে হবে বলে আমি কোন আত্নীয়ের বাসাতেও যাইনি কারন ব্যাঘাত ঘটবে তাই।
এই সময়ে আমি কারো টেক্সট রিপ্লাই করিনা তেমন আর এখন যেহেতু আলহামদুলিল্লাহ আমাদের মাসিক সার্ভিস নেয়া ক্লায়েন্টই ২০০+ আর ফেসবুক মার্কেটিং হিসাবে প্রায় ৭০০ ক্লায়েন্ট তাই ম্যাসেজের চাপ বেশি হবে সেটাও স্বাভাবিক তবুও আমি আমার শেখার জায়গাকে ফোকাস করেই গেলাম।
একমাসে দেখলাম আর্নিং ফল করেছে কারন- আমি ক্লায়েন্টদেরকে পর্যাপ্ত সময় দিই নি বরং শেখার কাজে দিয়ে ফেললাম।
এমন অবস্থায় সবার হয়তো মনেহবে যে ধুর এভাবে এত সময় পড়ালেখাতে না দিয়ে বরং আমি ইনকাম আগে করে নিই।
ঠিক তখনই দেখলাম –
“সফল মানুষেরা সেটাই করে,যেখানে ব্যার্থ মানুষেরা কোন আনন্দ খুঁজে পান না।”
এই লেখাটা আমায় মোটিভেট করলো এমনভাবে যে, আসলেই তো আমার শেখা দরকার কারন শেখার অনেক ঘাটতি।
বিশ্বের প্রায় ১৩০ জন টপ লেভেলে বিজনেস কোচ ও বিজনেস ওনার কে ফলো করে শিখি আমি।নিয়ম করে প্রতিদিন আমি আমার সব প্ল্যাটফর্ম মিলিয়ে ৩০-৩৫ টা কন্টেন্ট লিখি।
এই যাত্রাটা মোটেও সহজ ছিলোনা কিন্তু আমি জানি আমাকে করতেই হবে।আজকেই দেখেন খুব ঘুমানোর ইচ্ছে ছিলো তাই ভাবলাম আজকে ঘুম কাটাবো কিভাবে?
এই কন্টেন্ট তা লিখে ফেললাম।সময় লাগলো প্রায় ৪০ মিনিট কিন্তু ঘুম চলে গেছে আর মনের শান্তিটা ফিরে এসেছে।
আমরা সফল হতে চাই ওমুকের মত লাইফ লিড করতে চাই কিন্তু কখনোই দেখিনা যে,এই লাইফ টা পেতে একটা মানুষের স্যাক্রিফাইস কতটা।
আমরা তো একটা কন্টেন্ট লিখতে গেলে কপি পেস্ট করি আর পড়ার বা শেখার মত তো সময় নেই আর টাকা খরচ করে একটা ক্লাস করতে চাওয়া যেন বড় ক্রাইম।

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *