Domain (ডোমেইন) কেনার আগে যে বিষয় গুলো জানা জরুরী !

ডোমেইন কি জানতে আমার আগের পোষ্ট দেখুন।

প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিগত কারনে ওয়েব সাইটের প্রয়োজন হয়। না বুঝে Domain ক্রয় করার ফলে আপনি পরর্বতি সময়ে আপনার প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করতে পারেন না ফলে অর্থও সময় দুই নষ্ট হয়।তাই Domain ক্রয় করার আগে ভালোভাবে জেনে নিবেন ।
এবার জেনে নিন নিজস্ব বা টাকার বিনিময়ে ডোমেইন হোষ্টিং সংগ্রহের পূর্বে অবশ্যই অনুসরনীয় দশটি সাবধানতা।

১. ডোমেইন হচ্ছে আপনার সাইটের পরিচয় অতএব সবদিক ভেবে চিন্তে সুন্দর একটি নাম সিলেক্ট করুন। এসইও নির্ভর কিছু করতে চাইলে কিওয়ার্ডকে গুরুত্ব দিয়ে নাম বাছাই করুন।

২. আপনি যে নামটি বাছাই করেছেন সেটি ফাঁকা আছে কিনা দেখে নিন। কেননা একটি ডোমেইন নেইম সমগ্র বিশ্বে একজনই নিতে পারবে।

৩.আপনি যে প্রতিষ্ঠান থেকে ডোমেইনটি কিনবেন তাদের সম্পর্কে ভালভাবে জেনে নিন। কেননা ডোমেইন কিনে প্রতারিত হয়েছেন এমন ঘটনা এখন আর বিরল নয়।

৪.ডোমেইন এর দাম একটা চিন্তার বিষয়। খুব কম হলেও যেমন সন্দেহপূর্ন তেমনি অনেক চড়া দামে সাধারন ডোমেইন কেনাটাও এক ধরনের বোকামি। বর্তমানে ডোমেইনের চলমান মূল্য হচ্ছে ১০-১৩ ডলার বা বাংলাদেশী ৮০০-১০০০ টাকা।

৫.ডোমেইন কেনার সময় রেজিষ্ট্রেশন যেন আপনার নাম, ঠিকানা দিয়ে হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন।

৬.যাদের কাছ থেকে ডোমেইন নিলেন তাদের থেকে একটি ক্যাশমেমো সরাসরি কিংবা মেইলে নিয়ে নিন। মেইলে নিলে মেইলটি অবশ্যই সেইভ রাখুন। (এটি নিলে উপকার আছে, অথবা না নিলেও তেমন ক্ষতি নেই)

৭.ডোমেইন হোষ্টিং কিনলে আপনাকে হয়তো শুধুমাত্র হোষ্টিং এর সি প্যানেল দেয়া হবে অথচ আপনি পাবেন ডোমেইন এবং হোষ্টিং এর জন্য আলাদা আলাদা দুটি সিপ্যানেল।

৮.যার কাছ থেকে ডোমেইন নিবেন আগে জেনে নিন সে আপনাকে ডোমেইনের ফুল কন্টোল দিবে কিনা? যদি না দেয় তাহলে তার কাছ থেকে ডোমেইন নিবেন না।

৯. ডোমেইন সিপ্যানেল ছাড়া ডোমেইন ক্রয় করা এক ধরনের বোকামি। ধরুন, আপনি যার কাছ থেকে ডোমেইন কিনলেন কিছুদিন পরে সে ব্যবসা বন্ধ করে দিল বা তার সাথে আপনার কোন কিছু নিয়ে দ্বন্দ হল এখন আপনি কিভাবে আপনার সাইটটি সেইভ করবেন। ডোমেইন সিপ্যানেল ছাড়া কেউই আপনাকে সাহায্য পাবেন না।

১০.ভেরিফিকেশন সিষ্টেম থাকলে অবশ্যই ডোমেইন কেনার ১৫ দিনের মধ্যে মেইলের মাধ্যমে ভেরিফাই করে নিন। এরপর যদি সম্ভব হয় ডোমেইন এর প্রাইভেসি প্রোটেকশন এনাবল করে রাখুন। (যেটা বর্তমানে অধিকাংশ কোম্পানি 3-15 ডলার পর্যন্ত চার্জ করে থাকে।

১১.ডোমেইন ও হোষ্টিং এর সিপ্যানেলে লগইন করে দেখুন আপনাকে যা যা দেওয়ার কথা ছিল সব ঠিকমত পেয়েছেন কিনা।

১২. ডোমেইন সহজে মনে রাখা যায়, এমন হতে হবে।

১৩. ডোমেইনকে .com প্রাধান্য দেয়া ভালো।

১৪.ডোমেইন যথা সাধ্য ছোট রাখার চেষ্টা করতে হবে।

১৫. কোনো ট্রেডমার্ক ওয়েবসাইটের নামের সাথে মিলে না যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
যেমন: facebookbd, googleinfo, applebd ইত্যাদি।

১৬. ডোমেইন নেম কেমন হবে: মানুষ ডোমেইন মানেই ডট কমকে মনে করে থাকে। তাই সব সময় ডট কমকেই প্রাধান্য দিতে হবে।
সহজে মনে রাখা যায়, সহজে বানান করা যায়, শ্রুতিমধুর হয়, উদ্ভদ কোনো ডোমেইন পছন্দ করে পাঠকে ভড়কে দেবার প্রয়োজন নেই।
ডোমেইন যথা সাধ্য ছোট রাখার চেষ্টা করা।

১৭. ডোমেইন রেজিস্ট্রার পছন্দ করবেন যেভাবে: যেহেতু বাংলাদেশে পেপাল ও ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা নাই, সেহেতু বাংলাদেশি ডোমেইন রেজিস্ট্রার থেকেই কেনাটাই ভালো হবে, আবার সাপোর্টও ভালো পাওয়া যাবে। ডোমেইন কেনার আগে কয়েকটা রেজিস্ট্রারের তালিকা তৈরি করুন। তারপর তাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

👌 সবাইকে জিজ্ঞাসা করুন ডোমেইনের ফুল কন্ট্রোল প্রদান করে কি না। ফুল কন্ট্রোল ছাড়া ডোমেইন কিনবেন না।

ডোমেইনের দামের ব্যাপারে চিন্তা করুন। অনেকেই ২০০-৪০০ টাকায় ডোমেইন অফার করে থাকে। এদের পরিহার করুন।
কারন ICANN ডোমেইন নেম নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান। তাদের ফি ১৮ সেন্ট আর .com এবং .net verisign এর মাধ্যমে রেজি করতে হয়। তাদের প্রাইস ৫০০-৬০০ টাকার উপরে। তাই বাংলাদেশি রিসেলাররা কিভাবে এই টাকায় দিবে চিন্তা করুন। (তবে মাঝে মাঝে বিভিন্ন কোম্পানি অফার করে, তখন নিজে কিছুটা লস করে হলেও কাষ্টোমার বৃদ্ধির জন্য কম দামে ডোমেইন দেয়, যাই হোক ডোমেইনের ফুল কন্টোল আপনাকে দিতে হবে)

😭 কমদামে ডোমেইন কিনে পরে প্রতারিত হওয়ার সম্ভবনা বেশি। যেমন- রিনিউ করার সময় আপনার কাছ থেকে বেশি টাকা দাবী করা হতে পারে। অথবা সাইট জনপ্রিয় হলে ডোমেইনটি হাইজ্যাক করা হতে পারে।

১৮ .ডোমেইন কন্ট্রোল প্যানেল: আমাদের দেশে অনেক ডোমেইন প্রভাইডার আছেন যারা আপনাকে ডোমেইন কন্ট্রোল প্যানেল দিবেনা কিন্তু ডোমেইন এর ক্ষেত্রে ডোমেইন কন্ট্রোল প্যানেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি পরবর্তীতে ডোমেইন ট্রান্সফার করতে আপনার ডোমেইন কন্ট্রোল লাগবে। অনেকেই এর প্রয়োজনীয়তা মনে করেনা কিন্তু এর প্রয়োজনীয়তা অনেক।

কোথা থেকে ডোমেইন কিনবেন ?
যেখান থেকেই ডোমেইন কিনেন না কেন কেনার আগে যে বিষয় গুল ভালো ভাবে জেনে নিবেন –
১.ডোমেইন রেজিস্ট্রশন ফি,
২.প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক আবস্থা,
৩.কন্ট্রোল প্যানেল ,
৪. প্রতিষ্ঠানটি ডোমেইন এর পুরো কন্ট্রোল আপনাকে দিবে কিনা?
৫.পরবর্তীতে অন্য কোথাও ট্রান্সফার করে নেয়া যাবে কিনা?
উপরের বিষয় গুলো বিবেচনা করে যে কেউ ভালো কোন প্রতিষ্ঠান থেকে Domain ক্রয় করতে পারেন। তবে অনেকে কম দামে (৪০০-৫০০) ডোমেইন বিক্রয় করার কথা বলে , তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন কারন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ডোমেইন এর পুরো কন্ট্রোল দেয়না । আবার রিনিউ করতে গেলে দিগুন বা তার চেয়েও বেশি টাকা দাবি করে ।

সবচেয়ে ভালো সলিউশন হলো পরিচত বা ভালো বোঝে এমন কারো থেকে সাহায্য নেয়া।
ট্রাষ্টেড কাউকে বেছে ডোমেইন নেয়া,কেননা এটি আপনার সারা জীবনের সম্পদ।

সৌভিক
ফাউন্ডার এন্ড সি ই ও – আই সি টি কেয়ার /ICT CARE

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *