FOMO বা Fear Of Missing Out – টার্মটি সাইকোলজি ও মার্কেটিং এ একটি পরিচিত টার্ম। সোজা বাংলায় এর মানে হল ‘আফসোসের ভয়’। এটা মানুষের একটি সহজাত স্বভাব। মানুষকে এই ফাঁদে ফেলে লেখক থেকে শুরু করে কোম্পানী, সোশ্যাল মিডিয়া – সবাই ব্যবসা করছে।
কোনও কাজ না করলে আপনি কি হারাবেন, অথবা একটি নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট না কিনলে কি মিস করবেন – এই ভয়ই মানুষকে অপ্রয়োজনীয় কাজ করতে বা পন্য কিনতে বাধ্য করে।
মানুষ জানে যে একটি লটারির একটি পুরস্কারের বিপরীতে লক্ষ লক্ষ টিকেট ছাড়া হয়। এবং তার জেতার চান্স লক্ষে মাত্র এক। কিন্তু তারপরও মানুষ টিকেট কেনে কারণ তাদের মনে হয় – হয়তো এটা আমার ভাগ্যেই আছে – না কিনলে সুযোগ মিস হয়ে যাবে।
এটি আসলে একটি ফাঁদ। ইন্টারনেট ভিত্তিক মিডিয়া পাবলিকেশন স্লিকনোট এর চিফ মার্কেটিং অফিসার এমিল ক্রিস্টেনসিন বলেন – সীমিত সময়ের জন্য ছাড় বা অন্য লিমিটেড টাইম অফার, অনলাইন কোর্স বা এই ধরনের ডিজিটাল প্রোডাক্টে নির্দিষ্ট সংখ্যক ছাত্র নেয়ার ঘোষণা, প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ব্যাপারে অন্য মানুষের পজিটিভ রিভিউ, সেলিব্রিটির সাথে ডিনারের অফার, ভিডিওর থাম্বনেইলে আকর্ষণীয় কিছুর আংশিক ছবি এবং ভিডিওতে ক্লিক করলে পুরোটা দেখানোর প্রতিশ্রুতি – ইত্যাদি মানুষের মাঝে আফসোস বা মিস করার ভয় থেকে কেনার প্রবণতা তৈরী করে।
২০১৩ সালে জুলাইয়ে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার সাইকোলজি, এবং রচেস্টার ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল সোশ্যাল সাইন্স ইন সাইকোলজি ডিপার্টমেন্ট, এবং আরও দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক মিলে “Motivational, emotional, and behavioral correlates of fear of missing out” নামে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন।
গবেষণা পত্রে তাঁরা FOMO কে এভাবে ব্যাখ্যা করেন, “অন্যরা যা পাচ্ছে, তা না পেলে কি হবে, এই নিয়ে দুশ্চিন্তা একজন মানুষকে গ্রাস করার নাম FOMO”
মার্কেটিং এর ভাষায়, “ফমো মার্কেটিং দিয়ে একটি অপ্রয়োজনীয় জিনিসকে ভয়ানক প্রয়োজনীয় হিসেবে মানুষের মনে ধাঁধা তৈরী করা যায়”