আবেগের বদলে যুক্তিনির্ভর সিদ্ধান্ত নেয়ার অভ্যাস করুন
যেসব মানুষ আবেগের বশে বেশি সিদ্ধান্ত নেয় – তারাই মূলত এই ফাঁদে বেশি পড়ে। অপ্রয়োজনে কেনাকাটা, ধার দেনা করে চটকদার পন্য কেনা, ঘন্টার পর ঘন্টা ফেসবুকে পড়ে থাকা, ঘন ঘন সেলফি বা পোস্ট আপলোড করা এবং লাইক/কমেন্টের আশায় স্ক্রিণের দিকে ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থাকা – এগুলোর সবই আবেগী সিদ্ধান্ত। এগুলোর বাস্তবে কোনও ভালো ফলাফল নেই।
আপনার পড়াশুনা বা কাজ আছে – কিন্তু সেগুলো বাদ দিয়ে টিভি সিরিজ বা মুভি দেখে প্রয়োজনীয় সময় নষ্ট করাও FOMO- এর ফাঁদে পড়ার কুফল।
দ্যা ভিঞ্চি কোড খ্যাত থ্রিলার লেখক ড্যান ব্রাউন তাঁর একটি রাইটিং টিউটোরিয়াল বা মাস্টারক্লাসে বলেছেন – “পাঠকের সামনে প্রশ্ন ছুঁড়ে দাও। এবং লেখার মধ্যে এমন প্রতিশ্রুতি রাখো, যেন সে বোঝে যে, পৃষ্ঠা উল্টাতে থাকলে সে প্রশ্নটির উত্তর পেয়ে যাবে। কয়েক পৃষ্ঠা পর সেই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পাশাপাশি আরেকটা নতুন প্রশ্ন ছুঁড়ে যাও। – ‘পেজ টার্নিং’ গল্প লেখার এটাই সবচেয়ে ভালো উপায়”
গল্পের বইয়ের মত টিভি সিরিজ, সিনেমাও এই একই প্যাটার্ণ অনুসরন করে। আর এই প্রশ্নের ফাঁদ তৈরী হয় মানুষের FOMO কে কাজে লাগিয়ে।
একটু ভাবুনতো,আপনার বাড়িতে চুরি হয়েছে- যে জিনিসটা চুরি গেল, সেটার মধ্যে এমন কি আছে যে সবাই এত অস্থির হয়ে উঠেছে? – আচ্ছা, চুরি যাওয়া বাক্সে প্রাচীণ কোন স্পেশাল কিছু ছিল! চোরটাকে যে মেরে ফেলল – সে তো বক্সের মালিকের লোক নয়? – তাহলে কে সে? আর ঐ চুরি যাওয়া বক্সে কি আছে?
ট্রেজার ম্যাপ, নাকি এর থেকে এমন কিছু জানা যাবে যা থেকে পৃথিবীর ইতিহাসই নতুন করে লিখতে হবে? – পরের দৃশ্যে/অধ্যায়ে কি এর উত্তর জানা যাবে? নাকি পরের পর্ব/ অধ্যায়/ সিকুয়েলে জানা যাবে?
একের পর এক এমন প্রশ্ন আপনাকে পরের দৃশ্যে বা পরের অধ্যায়ে, অথবা পরের পর্বে নিয়ে যায়।গল্পের বই, টিভি সিরিজ, সিনেমা সবাই আপনার আবেগ আর কৌতুহলকে টার্গেট করে। পন্যের ব্র্যান্ড বা সোশ্যাল মিডিয়াও আপনার একই দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে।
কিন্তু আপনি যদি আবেগের বশে সিদ্ধান্ত না নিয়ে যুক্তি ও বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেন, তবে এরা আপনাকে ফাঁদে ফেলে আপনার সময় ও অর্থ নষ্ট করতে পারবে না