বড় কন্টেন্ট পড়ার ধৈর্য্য যাদের নেই তারা দুরেই থাকা ভালো, এই সিরিজে খুব ভালো বা ইন্সপায়ারিং কিছুই নেই।পড়লে কষ্ট পাবেন।
অধিকাংশ উদ্যোক্তা সারাজীবন একটা দোকানের ভেতর বন্দী জীবন কাটিয়ে পার করে দেন। আপনি যদি নিজেকে মুদী দোকানদার ভাবেন তাহলে ঠিক আছে, কিন্তু লক্ষ্য যদি থাকে এরচেয়ে বেশি তাহলে আপনাকে আপনার প্রতিস্থাপক তৈরী করতেই হবে, ডে টু ডে অপারেশন থেকে নিজেকে বের করে আনতে হবে।
কি করবেন?
আজকে আলোচনা করবো এইটা নিয়েই।
সফল ফাউন্ডার সিইও বা অন্ট্রাপ্রেনার সি ই ও এর যে উদাহরণ দুনিয়াতে নেই তা কিন্তু নয়। এ্যামাজনের জেফ বেজোস, ওরাকলের ল্যারি এলিসনসহ আমাদের দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে ফাউন্ডাররা সিইও হিসেবে রোল প্লে করছে।
তবে, এগুলো ব্যাতিক্রম, দুনিয়াজুড়েই ট্রেন্ড হলো ফাউন্ডাররা একটা পর্যায়ে যেয়ে নিজেকে অপারেশন থেকে বের করে নিয়ে আসে। স্টাডি বলছে, ব্যবসার ৩ বছরের মাথায় ৫০% ফাউন্ডাররা সিইও পজিশন থেকে সরে আসে, চার বছরের মাথায় যা ৬০% এ পৌছায়। আইপিও পর্যন্ত ২৫% এরও কম ফাউন্ডার সিইও হিসেবে বর্তমান থাকে কোম্পানীতে।
(সূত্র: অন্ট্রপ্রেনার ডট কম)
ব্যবসার অপারেশনে ফাউন্ডারের সরাসরি যুক্ত থাকা বা না থাকার সুবিধা-অসুবিধাগুলোর উপর চলুন একটু পোস্টমার্টেম করে আসি-
  • উদ্যোক্তা যদি সি ই ও হয় তবে তার গ্রোথ কমে যাবে। একজন উদ্যোক্তা হলেন স্বপ্নদ্রষ্টার মতো। তিনি স্বপ্ন দেখাবেন, আইডিয়া দিবেন, ফান্ড ম্যানেজ করবেন আর লক্ষ্যে পৌছানোর দায়িত্ব সি ই ও র। সবার মধ্যে উদ্যোক্তা হবার মাইন্ড সেট, সাহস, সামর্থ্য ও অর্থ থাকে না।
  • তাই উদ্যোক্তাদের একটা উদ্যোগে থেমে গেলে আল্টিমেটলি নিজের, সমাজের ও দেশের ক্ষতি। উদ্যোক্তা যদি একটা উদ্যোগের সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত হয় তবে অন্য জায়গায় মনোযোগ দেয়া বা নতুন নতুন অপরচ্যুনিটি খোঁজার সামর্থ্য তার কমে যাবে।
  • ফাউন্ডারের হয়তো চমৎকার একটি আইডিয়া আছে, সেটি এক্সিকিউশনের সাহস, সামর্থ্য, অর্থ রয়েছে, কিন্তু একটি উদ্যোগ দিনের পর দিন সফলভাবে চালিয়ে নেয়া কিন্তু ভিন্ন জিনিস। কবি তো অনেক আগেই বলেছেন, “উদ্যোগ অর্জনের চেয়ে উদ্যোগ রক্ষা করা অধিকতর কষ্টের”।
  • আশেপাশেই দেখবেন অনেক পিচ্চি পিচ্চি পোলাপানের উদ্যোগ হুটহাট হিট খেয়ে যায় (এদেশের বিভিন্ন গ্রুপেও সেটি দেখা যায়)।কিন্তু এক্সিকিউশনে যেয়ে, অপারেশনে যেয়ে বা স্কেল আপের সময় কিন্তু এরা অর্গানাইজেশন চালাতে হিমশিম খেয়ে যায়।
এখানে, কিছু মানূষ তো উদ্যোক্তা হিসাবে শুরু করার পরে একটু কেউ চিনে গেলে,আ র সেল হলে সকল ব্যাকারণকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বেড়ান,বাবাহ- যেন কেউ কোনকালে আর কিছু জানেই না।
  • পক্ষান্তরে একজন পেশাদার সি ই ও’র রয়েছে দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান চালানোর অভিজ্ঞতা, অসংখ্য ট্রেনিং, ভালো একাডেমিক ডিগ্রী এবং প্রতিষ্ঠান চালানোর পরিক্ষিত সামর্থ্য। সুতরাং একজন ফাউন্ডারের অপারেশন থেকে সরে এসে যতো দ্রুত একজন প্রফেশনাল সিইও’র হাতে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার ছেড়ে দেয়া যায়, ততই প্রতিষ্ঠান ও ফাউন্ডারের জন্য মঙ্গলজনক।
  • ফাউন্ডাররা তাদের নিজস্ব আইডিয়া নিয়ে খুব উৎসাহী ও আবেগী থাকে। এটা একদিক দিয়ে ভালো হলেও এর কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। ফাউন্ডারদের নতুন কোন পরিবর্তনের প্রতি রেজিসটেন্স থাকে এবং প্রতিষ্ঠানের খারাপ কোন সময়ে সাহসী এবং দূরদর্শী কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে জড়তা থাকে। থেমে যাওয়া বা পিছিয়ে যাওয়া মানেই পরাজয় নয়। প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে অনেক সময় এরকম কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া লাগতে পারে, যেটা ফাউন্ডার সিইও এর ক্ষেত্রে অনেক সময়ই কষ্টসাধ্য।
টাইম ম্যানেজমেন্ট আর লিডারশীপের পরের পর্বে লিখবো- পেশাদার সিইও নেবার কিছু খারাপ দিক নিয়ে।

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *