অন্যকে খুশি রেখে চলছেন- নিজেকে জলাঞ্জলি দিচ্ছেন যেভাবে।

 

আপনার কি কখনও মনে হয়েছে যে আপনি সব সময়ে অন্যদের খুশি রাখার চেষ্টা করছেন? এমনকি যখন আপনার ইচ্ছে করছে না, তখনও আপনি অন্যকে হ্যাঁ বলছেন? অন্যকে খুশি করতে চাওয়া, খুশি রাখতে চাওয়া নি:সন্দেহে একটি ভাল গুণ। কিন্তু সবকিছুরই একটা সীমা আছে। যে কোনও ভাল জিনিস অতিরিক্ত মাত্রায় করে ফেললে সেটার ফলাফল কিন্তু সব সময়ে ভাল হয় না। এটা কেন ভাল নয় এবং কিভাবে এটি আপনি বন্ধ করবেন – তা নিয়েই লিখবো এই সিরিজে।
আপনি যদি সব সময়ে সবাইকে খুশি রাখতে যান, তাহলে অনেক সময়েই দেখা যাবে মানুষ আপনাকে ‘পেয়ে বসেছে’। সবাই ধরেই নেবে আপনি আপনার নিজের কাজ বাদ দিয়ে যে কোনও সময়ে তাদের কাজ করে দেবেন। এবং আপনি তা করবেনও। এতেকরে আপনি আপনার নিজের মূল্য যেমন কমাচ্ছেন, নষ্ট করছেন নিজের কাজের সময়।
এটা করতে গিয়ে কখনও কি আপনার মনে হয়না যে আপনার কাছ থেকে কেউ কেউ অন্যায় ভাবে সুবিধা নিচ্ছে? মানুষজন কারনে অকারনে, দরকারে অদরকারে আপনাকে দিয়ে প্রয়োজন মিটিয়ে নিচ্ছে?
আপনার হয়তো মাঝে মাঝে এমনও মনে হয় যে আপনি প্রয়োজনের থেকে বেশি সৌজন্য দেখাচ্ছেন, কিন্তু চাইলেও এর থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না।
আমাদেরকে জানতে হবে- কিভাবে এই ‘অতি সৌজন্যতার চক্র’ থেকে বের হয়ে আসা যায়। একজন দয়ালু ও ভাল মানুষ হওয়ার মানে এই নয় যে আপনাকে সব সময়ে সবাইকে হ্যাঁ বলতে হবে, বা তাদের খুশি রাখতে হবে। একজন দয়ালু ও ভাল মানুষের সাথে সব সময়ে অন্যকে খুশি রাখতে চাওয়া মানুষের বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে। এবং আপনার যদি মনে হয় আপনি নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধেও অন্যদের খুশি রাখতে চান – এর থেকে বাঁচার উপায়ও রয়েছে।
তবে বাঁচার উপায় জানার আগে চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে বুঝবেন যে আপনি নিজেকে জলাঞ্জলি দিয়ে অন্যের ইচ্ছায় চলছেন-
অনেক ধরনের পরিস্থিতিতে পড়েই মানুষ এমনটা হতে পারে। হয়তোবা আপনি সব সময়ে অন্যদেরকে খুশি করে চলতে চান কারন আপনি চান না আপনার ওপর কেউ রাগ করুক, বা আপনাকে ছোট করে দেখুক। হয়তো আপনার হাতে এই মূহুর্তে প্রচুর কাজ। আগামী দুই ঘন্টায় আপনার কোথাও নড়ার উপায় নেই। কিন্তু আপনার পরিচিত কেউ একজন তাকে আধাঘন্টার একটা কাজ করে দিতে বললে আপনি তাকে না করতে পারেন না। নিজের কাজের ক্ষতি করে তার কাজটি করে দেন।
চলুন লক্ষনগুলি একটু জেনে নিই-
▶️ আপনি নিজেকে অবজ্ঞা করেন: যদিও আপনার মাঝে অন্যকে সাহায্য করার মানসিকতাটি আপনার মহ‌ৎ চরিত্রের পরিচায়ক, কিন্তু আপনি প্রায়ই নিজের প্রয়োজনগুলোকে অবজ্ঞা করে থাকেন। নিজের কাজের ক্ষতি করে হলেও বন্ধু বা পরিচিতজনের কাজ করে দেন। কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে যে অন্যকে সাহায্য করাটা অবশ্যই খুব ভাল, কিন্তু এতে করে যেন আপনি আপনার নিজের ক্ষতি না করেন। আপনাকে বিষয়টি সমন্বয় করে চলতে হবে। কিভাবে তা করবেন সেই ব্যাপার পরের কন্টেন্টে লিখবো।
▶️ মানুষজন নিয়মিত ভাবে আপনার কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়ে থাকে: একটা সময়ে গিয়ে আপনার হয়তো মনে হতে পারে মানুষ আপনার কাছে থেকে খুব বেশি সুবিধা নিয়ে নিচ্ছে। মানুষের আচরনে মনেহবে যে তারা ধরেই নিয়েছে আপনি সব সময়েই তাদের ‘হ্যাঁ’ বলবেন। আপনার হয়তো মনে হয় সবাই তাদের স্বার্থে আপনাকে ব্যবহার করছে, কারন তারা জানে যে আপনি তাদের যে কোনও প্রয়োজনই মেটাতে চেষ্টা করবেন। এরফলে অনেক সময়েই আপনার মন খারাপ থাকে, কিন্তু যার ওপর আপনার মন খারাপ তাকে এরপরও আপনি ‘না’ বলতে পারেন না।
▶️ কখনও কখনও আপনি অন্যদের প্রতি ক্ষোভ অনুভব করেন: আপনি হয়তো অন্যদের খুশি করার জন্য তাদের প্রয়োজনের থেকে বেশি সাহায্য করে থাকেন। কিন্তু একটা সময়ে আপনি তাদের প্রতি কিছুটা ক্ষোভও অনুভব করেন। অনেক সময়ে হয়তো আপনার চোখে ধরা পড়ে যে আপনি তাদের কারনে নিজের ক্ষতি করে ফেলেছেন, অথবা অনেক সময়ে এমন হয় যে আপনার ছোট কোনও কাজের জন্যও কাউকে খুঁজে পাচ্ছেন না। এতেকরে আপনার মনে হতে পারে “সবার সব কাজের সময়ে আমি যাই, কিন্তু আমার দরকারে কাউকে পাই না।”
পরিত্রান পাবার উপায় জানতে পরের কন্টেন্টে চোখ রাখুন

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *