এফ কমার্সে সব চেয়ে গুরত্বপূর্ন হলো ফেসবুক পেজ করা।

এফ কমার্সে সব চেয়ে গুরত্বপূর্ন হলো ফেসবুক পেজ করা।
আর সেটা সবাই বানাতে পারি এমন ধারনা থাকলে এই পোষ্ট আপনি ইগনোর করতে পারেন।

আর যারা পড়বেন তাদের উপকারে আসবে।

কিভাবে একটি কার্যকারী ব্যবসায়ীক পেজ তৈরি করতে হয়?

আপনার ব্রান্ডকে রিপ্রেজেন্ট করতে আপনাকে বিজনেস পেজ খুলতে হবে, পারসোনাল প্রোফাইল নয়। পেজ আর পারসোনাল প্রোফাইল এক নয়। পেজের মাধ্যমে ব্যবসায়, ব্রান্ড ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। আপনার কাস্টমার আপনার পেজটিতে লাইক দিয়ে আপনার ব্যবসায়িক আপডেট তাদের নিউজফিডে দেখতে পারে যেটা কিনা পারসোনাল প্রোফাইল দ্বারা সম্ভব নয়।

১. পেজের URL:
পেজের About সেকশন থেকে Facebook User Name অপশনটি পাবেন। এই অপশন এর মাধ্যমে আপনি আপনার পেজের জন্য একটি একক URL সেট করতে পারবেন, যা আপনার পেজকে ফেসবুক সার্চ এ আসতে সাহায্য করবে । Facebook User Name সেট করার আগে একটি শর্ত আছে তা হচ্ছে, পেজে ৩০টি লাইক থাকতে হবে, ৩০টি লাইক এর কম লাইক থাকলে আপনি পেজের User Name সেট করতে পারবেন না ।

২. প্রাসঙ্গিক কভার ফটো ব্যবহার করুনঃ
আপনার কভার ফটোটি এমনভাবে অপ্টিমাইজ করুন যাতে পেজটির প্রতি নতুন পরিদর্শনকারীদের আকর্ষণ বাড়ে। একটি ব্যবসায়িক পেইজের কভার ফটো এমন হওয়া উচিত যেটা দেখে পরিদর্শনকারীদের ব্যবসায় সম্পর্কে ধারণা পাবে এবং সেই সম্পর্কে আরো জানার জন্য আগ্রহী হবে।

৩. সহজেই চেনা যায় এমন প্রোফাইল পিকচার ব্যবহার করুনঃ
এমন একটি প্রোফাইল পিকচার নির্বাচন করুন যা দেখে কাস্টমাররা সহজেই আপনার ব্র্যান্ডটিকে চিনতে পারে যেমনঃ আপনার নিজস্ব Logo বা ব্যবসায়ের গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রতীক। এটি আপনার কাস্টমারদের সহজেই আপনার পেজটি খুজে পেতে ও লাইক দিতে সাহায্য করবে। এছাড়া প্রোফাইল ফটো ব্যবসায় এর পরিচায়ক, আপনার ফ্যানদের নিউজফিডে, কোথাও কমেন্ট করলে সেখানে সব জায়গায় আপনার ব্যবসায় এর প্রোফাইল ফটো দেখা যাই, তাই এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ।

৪. About সেকশন অপ্টিমাইজ করাঃ
About সেকশনে আপনি আপনার সব ধরণের তথ্য যেমনঃ পেজ ক্যাটাগরি, সাব ক্যাটাগরি, ইউজার নেম, ছোট এবং বড় ব্যবসায়িক বর্ণনা, ঠিকানা, ইমেইল, ওয়েবসাইট, ফোন নাম্বার ইত্যাদি সংযুক্ত করতে পারেন।

৫. “Very responsive to message” এই উপাধিটি লাভ করা:
আপনার ফেসবুক পেজে যদি কেউ মেসেজ দেয় এবং আপনি নিয়মিত ও খুব দ্রুত সাড়া প্রদান করতে পারেন তাহলে আপনি ফেসবুকে “Very responsive to message”এই উপাধিটি লাভ করতে পারবেন। তবে শর্ত প্রযোজ্য যে, গত ৭ দিনে আপনার রেসপন্স রেট ৯০% এবং রেসপন্স সময় ১৫ মিনিটের মধ্যে হতে হবে।

৬. পেজে Call-to-action বাটন যুক্ত করাঃ

আপনার পেজের জন্য উপযুক্ত ও মানানসই Call-to-action বাটনটি নির্বাচন করুন যেমনঃ sign up, Shop now, Contact us, Book now ইত্যাদি। তারপর সেখানে আপনার ব্যবসায়ের সুবিধার্থে ওয়েবসাইটের লিংক অথবা ফোন নাম্বার যুক্ত করুন। এছাড়াও সেখানে আপনার হোমপেজ লিংক, লেন্ডিং পেজ লিংক, Contact পেজ, ভিডিও যুক্ত করা যায়।

৭. অডিয়েন্সের রিচ লাভের জন্য উপযুক্ত সময়ে পোস্টিং করাঃ

একটি কমন প্রশ্ন হলো, ফেসবুকে পোস্ট করার উপযুক্ত সময় কখন?
দুর্ভাগ্যবশত এর কোনো নির্দিষ্ট উত্তর নেই। এক এক ধরণের ব্যবসায়ের জন্য এক এক ধরণের সময় সাপেক্ষে পোস্টিং দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে সময়কাল নির্ভর করে টার্গেটেড অডিয়েন্স, আপনার কন্টেন্টের ধরণ (ফানি/সিরিয়াস), আপনার লক্ষ্য (লাইক/শেয়ার প্রাপ্তি) ইত্যাদি এর ওপর। আপনার পেজে পোস্টিং এর জন্য উপযুক্ত সময়কাল সম্পর্কে ধারণা পেতে ইনসাইটস সেকশনের সাহায্য নিতে পারেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অনেক সময় সন্ধ্যার পর এবং রাত এর দিকে রিচ ভালো হয় ।

৮. ইমেজ সুষ্ঠুভাবে ফরমেটঃ

পেজে শুধুমাত্র পোস্টিং করে দেয়াটাই উদ্দেশ্য নয়। কাস্টমারদের সুবিধার্থে ও তাদের দৃষ্টি আকর্ষণার্থে যে ইমেজটি পোস্ট করা হবে সেটিকে সঠিক সাইজে ফরমেট করতে হবে, যাতে করে এটি ডেস্কটপ, মোবাইল, টেব সব ধরণের প্লাটফর্মের জন্য উপযোগী হয়। আর ইমেজের সাথে ক্যাপশন দিতে ভুলবেন না।

৯. ভিডিও পোস্ট করুনঃ

বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা ভিডিও কন্টেন্টের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে এবং এই ভিডিও কন্টেন্ট দেখার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলছে। তাই আপনার প্রোডাক্ট, কোম্পানী, কার্যপ্রক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কে কিছু ভিডিও পেজে আপলোড করার চেষ্টা করুন।

১০. ফেসবুক ইনসাইট পরিদর্শনঃ

ফেসবুক ইনসাইট হচ্ছে ফেসবুকের এমন একটি অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণমূলক সেকশন যেটা আপনাকে আপনার ফেসবুক পেজের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পেতে সাহায্য করে। এই সেকশনটির মাধ্যমে একজন পেজ ম্যানেজারে তার পেজ ভিজিট ও Engagement সম্পর্কে বিশ্লেষণাত্নক ধারণা লাভ করতে পারে। এর সাহায্যে বুঝা যায় কোন কন্টেন্টটি আপনার Fan দের সাথে Engagement তৈরি করছে আর কোনটি করছে না, পোস্টিংয়ের জন্য সঠিক সময়, ফ্যানদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য ইত্যাদি।

১১. Schedule পোষ্টঃ

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সমস্যা থাকতে পারে যেমনঃ মিটিং, কোথাও দেরিতে পৌঁছানো অথবা অনাকাঙ্খিত কোন ঘটনা ঘটা ইত্যাদি। এসব কারণে আমরা ফেসবুকে সময়মত কন্টেন্ট পোষ্ট করার জন্য থার্ড পার্টি অ্যাপলিকেশন যেমনঃ Hubspot, Hootsuit, Buffer ব্যবহার করে কন্টেন্ট Schedule করি। 3rd Party এর মাধ্যমে পোষ্ট Schedule করলে অনেক ক্ষেত্রেই পোস্ট এর রিচ কমে যায়, কারণ ইউজার ফেসবুক এ না এসেই সেখান থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে, এতে ফেসবুক এর ক্লিক এর পরিমাণ কমে যায়। ফেইসবুকে এ Schedule করার ব্যবস্থা আছে। তাই যদি আপনার সময় সংক্রান্ত কোন সমস্যা থাকে তাহলে নির্দ্বিধায় ফেসবুকে পোষ্ট Schedule করতে পারেন ফেসবুক এর সিস্টেম থেকে।

১২. ফেসবুক বিজ্ঞাপনঃ

আপনার ব্যবসায়, ব্রান্ড, সার্ভিস বা পণ্য ইত্যাদির প্রসারের জন্য দেশ/শহর, জেন্ডার, বয়স, আগ্রহ/ইন্টারেস্ট ইত্যাদি বিষয়কে টার্গেট করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। সবসময় লক্ষ রাখতে হবে সঠিক ব্যক্তিদের টার্গেট করে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে হবে। আপনি যদি অপ্রাসঙ্গিক ব্যক্তিদের টার্গেট করে বিজ্ঞাপন দেন তাহলে ফেসবুক আপনার কাছ থেকে অধিক অর্থ চার্জ করতে পারে।

১৩. পেজের প্রচারঃ
আপনার ফেসবুক পেজটির মার্কেটিং–এর জন্য ইনভাইট ফ্রেন্ডস প্রসেস, প্রাসঙ্গিক গ্রুপ, অন্যান্য সোশাল মিডিয়া, ইমেইল মার্কেটিং, ভিডিও মার্কেটিং প্রসেস ইত্যাদির সাহায্য নিতে পারেন

আপনাদের চাওয়া অনুযায়ী লেখা তাই বড় হয়েছে অনেক।
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ ও শুভ কামনা।

যারা পড়েছেন তারা কি বুঝলেন সেটা কমেন্ট করবেন।
আমি চেষ্টা করবো আপনার বোঝা সঠিক হলো কিনা।

ব্যাবসা করতে চাইছেন যেটা দিয়ে সেটাকে যত্ন নিতে শিখুন।

সৌভিক
ফাউন্ডার এন্ড সি ই ও- আই সি টি কেয়ার / ICT CARE

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *