সকালে বেশ দেরি করেই ঘুম ভেঙ্গেছে হৃদিতার,আজ শুক্রবার বলেই হয়তো দেরিতে উঠেছে।এদিকে টানা মিটিং ও অফিসের কাজের চাপে নিজেকে গুছিয়ে নেয়াও হচ্ছেনা বিধায় আজ সকালে উঠে আগে নিজের কাজগুলি সেরে নিয়েছে হৃদিতা। ভাবলো কাজ গুছিয়ে নিয়ে এবার শুদ্ধকে ডাকা যাক।
শুদ্ধর রুমের দিকে যেতেই দেখলো বাইরে থেকে খুব ক্যাজুয়াল অবস্থায় আসছে শুদ্ধ,তাকে দেখেই হৃদিতার প্রশ্ন-
হৃদিতা– তা এত সকাল বেলায় কোনদিক থেকে এলেন?
শুদ্ধ– সকাল আর কোথায় পেলেন? আসলে এলাম তিনদিন হচ্ছে কিন্তু আশেপাশে কোথাও যাওয়া হয়নি তাই একটু চারিদিক ঘুরে এলাম।
হৃদিতা– আরে বাবা,আপনি মশাই মানূষ তো আনরোমান্টিক,একটা সুন্দরী মেয়ে থাকতেও একা ঘুরে এলেন?
শুদ্ধ– সুন্দরী কাউকে সত্যিই চোখে দেখিনা।কাউকে পেলে নিয়ে হয়তো যেতাম।
হৃদিতা– মনের মধ্যে ভীষণ রাগ চেপে জানালো,উঠেছেন কখন?
শুদ্ধ– সেতো সেই সকালেই,যদিও রাতে একটুও ঘুম হয়নি।আচ্ছা এখানেই দাঁড়িয়ে কথা বলবেন,নাকি একটু রুমে ঢোকার সুযোগ হবে?
হৃদিতা– রুমের চাবি কি আমার কাছে?
শুদ্ধ– বাব বাহ,এত রাগ দেখছি,বলতে বলতে দরজা খুলেই বললো আসুন।
হৃদিতাকে বসিয়ে রেখে নিজে একটু ওয়াশরুমের দিকে গেল।এই ফাঁকে হৃদিতা চারিদিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নিলো সবকিছুই পরিপাটি করে গোছানো। শুদ্ধ টাওয়াল হাতে ফিরতেই হৃদিতার প্রশ্ন-
হৃদিতা– ঘুম কেন হলোনা?
শুদ্ধ– আসলে একটু রাত জেগেই কাজ করেছিলাম,ধরুন ৪ টা প্রায়।হঠাত করেই রাত ১১ টার দিকে মুড খুব ভালো হয়ে গেলো।কাজ ও হচ্ছিলো ভালো এইজন্য ভাবলাম মুড যখন আছে কাজ গুলি গুছিয়ে রাখি,সকালে বরং একেবারে একটু দেরিতেই উঠবো।
হৃদিতা– তো উঠলেন কেন আগে?
শুদ্ধ– আসলে ঘুম হয়নাই,সারারাত ই বলা যায় এক প্রকার অস্থিরতা কাজ করছিলো,তাই সকালে উঠেই নামাজ-কালাম সেরে নিয়ে সপ্তাহের নিজের সব কাজ গুছিয়ে নিলাম।
হৃদিতা– আমিও প্রায় ১ঃ৩০ টাই ঘুমিয়েছি,একবার ভাবলাম আপনাকে ডাকি কিন্তু সংকোচে ডাকা হয়নি।
শুদ্ধ– আপনার দেখি,রাগ সংকোচ অভিমান সবতাই আছে।তো বলুন কালকের মিটিং কেমন উপভোগ্য হলো?
হৃদিতা– ধুর! এই মহাশয় তো কথাই বলতে কোটি টাকা নেন মনে হচ্ছিলো,আপনার ট্রিক্সেই তো কথার ফুলঝুরি ছোটালো।
শুদ্ধ- তাই যদি হবে তবে আর কেউ তো ছোটাচ্ছেনা দেখি (মনে মনে চাইল হৃদিতা কিছু বলুক)
হৃদিতা– আমায় তোমার সুন্দরী মনে হয়না বাছাধন,আমিও কিছু বলবোনা(মনে মনে ভাবছে) আর মুখে জানালো- হুম সবাই না ছোটানোই ভালো।এতে আবার সহ্য কম হবে।
শুনুন আমায় আজ গতকালের ট্রিক্স শিখিয়ে দিন।
শুদ্ধ– শুনুন,গতকালের ক্লায়েন্ট যিনি ছিলেন উনি আসলে একটু মুডি বলেই মনে হচ্ছিলো, এজন্য একটু ভাব জমাতে চাইলাম।
দেখুন আপনি যদি ১০০০ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন করেন যে- আপনারা খোলামেলা মনের মানূষ কিনা,আমি নিশ্চিত যে তাদের মধ্যে ৯০০ জনই হাত তুলবে।
হৃদিতা– কেন?
শুদ্ধ– শুনুন,এর দুইটা কারন আছে–
-
এই খোলামেলার বিপরীতে ভাবা হয় “অন্তমুর্খিতা” কে,পছন্দের ভিন্নতা সবার মাঝেই পাবেন আপনি।সেক্ষেত্রে আপনি যদি নিজেকে খোলামেলা মনের হয়ে থাকেন তাহলে অনেক সুবিধা পাবেন।
-
পৃথিবির প্রায় প্রত্যেক মানূষই কার সাথে সাক্ষাতে খোলামেলা হয়ে কথা বলার স্বভাবটা পছন্দ করে,তার কারন হলো- সবাই জানতে চাই এবং জানাতেও চাই।
হৃদিতা- এইজন্য কি ধরনের প্রশ্ন করে বুঝে নিব যে উনি খোলামেলা কিনা?
শুদ্ধ– দেখুন উনি আমাদের প্রজেক্ট প্রপোজাল পছন্দ করছিলেন না হয়তো তাই ওনাকে একটু ঘুরিয়ে বললাম এভাবে যে-
ধরুন,আমাদের বিকল্প উপায় আপনার ভালো লাগলো,সেক্ষেত্রে-
হৃদিতা– এগুলি দারুন,কিন্তু উনি যদি ঐ মুহুর্ত্বেই উত্তর না দিতে চান তাহলে?
শুদ্ধ– ওনাকে এইজন্য আমি একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলাম যে-
হৃদিতা– আপনি এত ব্রিলিয়ান্ট উপায় জানেন,আবার এত মানূষকে রিড করতে পারেন কিন্তু…।
শুদ্ধ– কিন্তুটা আবার কি?
হৃদিতা– কিছুই না,গোসল সেরে নামাজে যান,আর লাঞ্চ আজ হোটেলে হবেনা,আপনার প্রিয় গরুর ভুড়ি রান্না করব আমি।
শুদ্ধ– আপনি জানলেন কিভাবে?
হৃদিতা– আপনাকে ফোনে না পেয়ে আন্টি আমায় ফোন দিয়েছিলো সেখান থেকেই জেনে নিলাম।
শুদ্ধ– বাব বাহ, ধন্যবাদ এই আপ্যায়নের জন্য।
হৃদিতা– উঠে চলে যাচ্ছে আর মনে মনে বলছে-
” চুরি করে আমি ফেলতে চাই তোমায়
আমার এ বেঁচে থাকা তোমারি নামে লেখা
বুঝে নিলে তুমি বড্ড ভালো হয়”
এদিকে একই চিন্তা শুদ্ধ নিজেও করছে…
মোঃ সৌভিকুর রহমান
শিক্ষক (কম্পিউটার বিভাগ)
যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
আমার কাজ- লোগো ডিজাইন,ব্যানার ডিজাইন,বিজনেস কার্ড ডিজাইন,ফেসবুক পেজ ডেকোরেশন,ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন,পেজ প্রমোট ও বুষ্টিং,কন্টেন্ট রাইটিং,ভিডিও এডিটিং ও সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট নিয়ে।
আমার পেজ- ICT CARE