বই কিনে টাকা নষ্ট করার কোন মানে নেই

আমরা অনেকেই মুখে বলি যে- বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয়না,অথচ কাজের বেলাতে সেটার বহিঃপ্রকাশ পাওয়া যায়না।এজন্য আজকের আর্টিকেলে একটু এই সম্পর্কে জানতে চাই।
গবেষণা করে দেখা গেছে-
প্রকাশনা জগত থেকে আমেরিকার রেভিনিউ বছরে ২৩ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ওরা বই প্রকাশ করে যত টাকা আয় করে, সেই টাকায় প্রতিবছর কয়েকটা পদ্মা সেতু করা সম্ভব।
বই পাবলিশ করে জার্মানীর ব্যবসা হয় ৬ বিলিয়ন ডলার—প্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকা!
সাউথ কোরিয়া, যাদের জনসংখ্যা মাত্র পাঁচ কোটি, তারা শুধু বই প্রকাশ করে পাঁচ বিলিয়ন ডলার ব্যাবসা করে।
এই তথ্যগুলো ২০১৮ সালের। (তথ্যের লিংক চাইলে দেয়া যাবে)
বাংলাদেশে প্রকাশনা জগতের আকার খুবই ছোট। ২০১৮ সালের বই মেলায় মাত্র ৭০ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়। সবচেয়ে বেশি বই কিন্তু বিক্রি হয় এই সময়টাতেই।
তাহলে প্রকাশনা জগতের বাজারটা কতো বড়ো হবে? ১৮ কোটি মানুষের দেশের প্রকাশনা বাজার হয়তো ৩০০ কোটি টাকা। নাইলে পাঁচশো কোটি! অথচ পাঁচ কোটি মানুষের দেশ দ. কোরিয়ায় সেই বাজার চল্লিশ হাজার কোটি টাকার।
একটা দেশ যতো ধনী হয়, তার বই প্রকাশের সংখ্যা ততো বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। বইয়ের সংখ্যাও ততো বাড়ে। মানুষ ততো বই পড়ে।
এখানে মুল বিষয়টা শুধু এই নয় যে, মানুষের বই কেনার সার্মথ্য বাড়ে। বিষয়টা হলো- মানুষের জ্ঞান আহরণে তৃষ্ণা বাড়ে। শিক্ষিত মানুষ বাড়ে। মানুষ বহু বিষয় নিয়ে পড়তে চায়। বহু বিষয় জানতে চায়। মানুষের গড় আয়ু বাড়ে। মানুষ বই পড়ে সময় কাটায়। আনন্দ নেয়।
একটা দেশ যত ধনী হয়, সে দেশের শিক্ষার মান ততো বাড়ে। ফলে লেখকের সংখ্যাও বাড়ে। পাঠকের সংখ্যাও বাড়ে।
আমেরিকায় প্রতি বছর প্রায় তিন-চার লক্ষ নতুন বই প্রকাশ হয়। ইংল্যান্ডেও লক্ষাধিক নতুন বই আসে প্রতিবছর। বাংলাদেশে কয়টা নতুন বই আসে? পাঁচ হাজার? দশ হাজার? ২০২১ সালে বই মেলায় চার হাজার নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। বই মেলার সময়ই সবচেয়ে বেশি নতুন বই আসে। আমাদের লেখক কম। নতুন বইয়ের সংখ্যা কম। অর্থাৎ বইয়ের জগতে বৈচিত্র্যতাও কম। এটা দুর্ভাগ্য!
এর জন্য কারা দ্বায়ী জানেন?
আমরা সকলেই- কেননা বই পড়ে জ্ঞান আহরণের চেষ্টায় আমাদের বিরাট এলার্জী।
নতুন লেখক তৈরি হওয়া দরকার। নতুন নতুন বই প্রকাশ হওয়া দরকার। তরুণরা লিখুক। বই প্রকাশ করুক। নতুন লেখকদের নিয়ে ট্রল না করে, তাদের জাগিয়ে রাখতে হবে।তাদেরকে অনুপ্রেরণা দিতে হবে।
নতুন লেখকদের নিয়ে তাচ্ছিল্য না করে তাদেরকে উৎসাহ দিতে হবে। তাদেরকে সাপোর্ট দিতে হবে। পাঠকই ঠিক করে দিবে লেখকের ভবিষ্যত। পাঠকই নির্ধারণ করুন লেখকের টিকে থাকা।
একজন নতুন লেখককে নিয়ে নিজের ওয়ালে একটা পোষ্ট করতেও আমাদের বাঁধে হয়তো,তাই আমার ২০০০ ফ্রেন্ডের মধ্যে ২০ জনকেও কোন লেখক নিয়ে লিখতে দেখিনাই।ইভেন আমার লেখা একটা বই এবারে এসেছে বাজারে- “অনলাইন উদ্যোক্তার ১০০ দিন” সেটা নিয়েও কাউকে কিছুই বলতে শুনলাম না।কিন্তু আমার লেখা আর্টিকেল পড়েই ৯০% মানুষ আমায় ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়ে আমার সাথে যুক্ত আছেন,যেন আমার লেখা মিস না করেন।
প্রতি বছর ধর্মের বই বেশি বিক্রি হয় বলে একটা হাহাকার উঠে। সমালোচনা উঠে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রায় দশ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আছে। তাদের কাছ থেকে প্রতি বই মেলায় পাঁচশত বইও আসে না! দেশের সবচেয়ে শিক্ষিত শ্রেণি থেকে যদি বই প্রকাশ না হয়, তাহলে সেই জায়গাটা কি শূণ্য থাকবে?
তরুণরা, লিখো যাক। অসংখ্য বিষয় নিয়ে লিখুক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস। অণুকাব্য, অণুপ্রবন্ধ, অণুগল্প। শিক্ষা, সমাজ, ধর্ম। রাজনীতি, অর্থনীতি, আইন, ইতিহাস, সাইন্সফিকশন, দর্শন। বিজ্ঞান, যৌনতা, প্রযুক্তি, মনোবিজ্ঞান। রম্য, রান্না, চিকিৎসা, প্রাণীজগৎ। উদ্ভিদ জগৎ, পরিবেশ, সমুদ্র। সব বিষয় নিয়ে লিখো। কাঁচা হাতে লিখো। লিখতে লিখতে পাকা হও।
পড়ো, পড়ো এবং পড়ো—তারপর কলম হাতে নিয়ে লিখতে থাকো। একটা দেশ বাঁচাতে হলে বই চাই। ভাষা বাঁচাতে বই চাই। একটা জাতিকে জাগাতে বই চাই। বইয়ের স্তুপের উপর দাঁড়িয়ে, একটা জাতি জাগে ও বাঁচে।
একজন ভাই এর একটা কন্টেন্ট দেখে অনুপ্রেরণা পেয়েই লিখলাম মুলত।পরিসংখ্যান সব গুগলে ঘাঁটলেই পাবেন।
মোঃ সৌভিকুর রহমান
শিক্ষক (কম্পিউটার বিভাগ)
যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
আমার কাজ- লোগো ডিজাইন,ব্যানার ডিজাইন,বিজনেস কার্ড ডিজাইন,ফেসবুক পেজ ডেকোরেশন,ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন,পেজ প্রমোট ও বুষ্টিং,কন্টেন্ট রাইটিং,ভিডিও এডিটিং ও সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট নিয়ে।
আমার পেজ- ICT CARE

Newsletter Updates

Enter your email address below and subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *